জার্মানি এবং আমেরিকাতে বেশ কয়েকবার পণ্য গেছে

0
উদ্যোক্তা রোকসানা পারভীন কণা

কখনো কাঠ, কখনো পাট, আবার কখনো বা মেটাল, মুক্তা কড়ি, পুথি দিয়ে হাতে তৈরী গহনাতে বিভিন্ন ধরনের নকশা ফুটিয়ে তুলছেন। কিছুদিন পরপরই নতুন নতুন ফিউশন যুক্ত করছেন একেকটি গহনাতে। নান্দনিক ডিজাইনের এই গহনাগুলো তৈরি করছেন রংকল্পের স্বত্বাধিকারী রোকসানা পারভীন কণা। গহনা দিয়ে রংকল্পের যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে সেগুলোর সাথে সংযোজন করা হয়েছে শাড়ি, পাঞ্জাবি, টিপ, খোপার কাটা, হিজাব পিন, ব্যাগ ইত্যাদি।

শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস, পূজা, ঈদ, পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস সহ বিশেষ দিনগুলোকে কেন্দ্র করে এই থিমগুলোতে রংকল্পের বেশিরভাগ পণ্য তৈরী হয়। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রংকল্পের এই পণ্যগুলো পৌঁছে গেছে। এছাড়াও দেশের বাইরে জার্মানি এবং আমেরিকাতেও বেশ কয়েকবার এই উদ্যোক্তা পণ্য গেছে।

উদ্যোক্তা বার্তা

২০১৪ সালে কলেজে অধ্যায়নরত অবস্থাতেই উদ্যোক্তা রোকসানা পারভীন কণার রংকল্পের সৃষ্টি। মাঝে পড়াশোনা, বিয়ে ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় রংকল্পের গতি কিছুটা ধীর হয়ে পড়ে। এবং সন্তান জন্মের কিছুদিন পর বিভিন্ন কারণে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়লে উদ্যোক্তার স্বামীর অনুপ্রেরণায় ২০২০ সালের শেষ দিকে পাঁচ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে আবারো রংকল্পের প্রাণ ফিরিয়ে আনেন উদ্যোক্তা রোকসানা পারভীন কণা।

সম্প্রতি শেষ হওয়া বাংলাদেশ-ভারত পঞ্চম সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় কেমন সাড়া পেলেন? প্রশ্ন করতেই উদ্যোক্তার মুখ হাস্যজ্বল হয়ে উঠে এবং তিনি উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে খুব ভালো সাড়া পেয়েছি। আমাদের চাওয়ার দ্বিগুণ শাড়া মিলেছে মেলায়। মেলায় অংশগ্রহণকারী আমি সহ প্রতিটি উদ্যোক্তা নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে বাসায় ফিরেছি। পূর্বেও আমি দশটি মেলায় অংশ নিয়েছি। মেলা আমাদের পরিচিতি বৃদ্ধিতে অনেক সহায়তা করে। শুধু আমি না আমরা সকল উদ্যোক্তাই চায় এই ধরনের মেলা বারবার হোক।’

উদ্যোক্তা বার্তা

উদ্যোক্তা আরো বলেন, “রংকল্পের এই পণ্যগুলো শুধু আমি তৈরী করেই দেই এগুলো প্যাকিং থেকে শুরু করে কোন মেলায় পৌঁছে দেওয়া, সেখানে আমায় সাপোর্ট দেওয়া সবকিছুতেই আমার পুরো পরিবার আমাকে সহযোগিতা করেন সবসময়। বিশেষ করে আমার স্বামী এবং ভাগ্নে তারা রংকল্পের এগিয়ে যাওয়াতে বিরাট ভূমিকা রাখছে। সকল উদ্যোক্তাদের পরিবারের এই সাপোর্ট অতিব জরুরি বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য। আমি শুরু থেকেই এই সাপোর্ট পেয়েছি তাই কৃতজ্ঞতা আমার পুরো পরিবারের কাছে।”

কাজগুলো শেখার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়া আঁকাআকি করতেন। তিনি যখন আঁকতেন ছোটবেলায় আমি তখন পাশে বসে দেখতাম। তখন থেকে রংতুলির প্রতি একটা ভালোবাসা জন্মায়। এবং আমার মা যখন বাসার কোন অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফেলে দিতেন সেগুলো সংগ্রহ করে আমি কখনো ওয়ালমেট কখনো ফুলদানি এগুলো তৈরী করে ফেলতাম। সেগুলো দেখে সকলে প্রশংসাও করতেন। তখন থেকেই আমার এই কাজগুলোর প্রতি আগ্রহ জাগে। আস্তে আস্তে যখন বড় হতে থাকি তখন নিজের ব্যবহারের জন্য গহনা তৈরি করতাম। এভাবেই কাজগুলো শেখা। আমার কাজগুলো সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চায়। অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও ভিন্ন রকম একটা আউটলেট স্থাপনের ইচ্ছে আছে।’

উদ্যোক্তা বার্তা

বৈবাহিক সূত্রে এই উদ্যোক্তার বসবাস রাজশাহী নগরীতে হলেও বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছোট বেলা কেটেছে। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শেষ করেন এই উদ্যোক্তা। রংকল্পের পরিধি আরো বিস্তৃত করে সেখানে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগোচ্ছেন উদ্যোক্তা রোকসানা পারভীন কণা।

তামান্না ইমাম
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here