করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের চলতি অর্থবছরে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের ১০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে এসএমই ফাউন্ডেশন।
শনিবার রাতে এসএমই ফাউন্ডেশনের ১৫তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এ তথ্য জানিয়েছেন এর চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান।
তিনি জানান, প্রণোদনা প্যাকেজের অবশিষ্ট ২০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে আগামী অর্থবছরে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে এ ঋণ বিতরণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় সাধন করা হবে।
সভায় এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক নাজিম হাসান সাত্তার জানান, গত অর্থবছরে পণ্য বাজারজাতকরণ, দক্ষতা উন্নয়ন এবং দেশে-বিদেশে উৎপাদিত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণসংক্রান্ত এসএমই ফাউন্ডেশনের নানামুখী কার্যক্রমের সুবিধা পেয়েছেন ১০ হাজার ১৯৯ জন উদ্যোক্তা। তার মধ্যে নারী উদ্যোক্তা ৪ হাজার ৫০৯ ও পুরুষ উদ্যোক্তা ৫ হাজার ৬৯০ জন।
নাজিম হাসান সাত্তার আরও জানান, গত বছর অষ্টম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকার পণ্য বিক্রয় এবং ৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকার বিভিন্ন পণ্যের ক্রয়াদেশ পান এসএমই উদ্যোক্তারা। এ ছাড়া গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের ৮টি বিভাগের ২৮টি জেলায় এসএমই ফাউন্ডেশন আয়োজিত আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মোট ৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকার পণ্য বিক্রয় হয়। এ ছাড়া ৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ক্রয়াদেশ পাওয়া যায়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নতুন অনুমোদিত প্যাকেজ দুটির প্রথমটির আওতায় সরকার এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুকূলে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করছে। এই ৩০০ কোটি টাকার ঋণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিতরণ করবে ফাউন্ডেশন। ঋণ দিতে ১০০টি সম্ভাবনাময় ক্লাস্টার নির্বাচন ও এসব ক্লাস্টারের ঋণ চাহিদা প্রাক্কলন করা হয়েছে। এর আগের প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে স্বল্প সুদে দুই হাজার ৮৯ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাকে ১১৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ক্রেডিং হোলসেলিং কর্মসূচির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে জামানতবিহীন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ফাউন্ডেশন থেকে প্রাক-অর্থায়ন। সুদের হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। ঋণের পরিমাণ ৫০ হাজার থেকে শুরু হয়ে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা। ঋণের মেয়াদ সর্বোচ্চ চার বছর। মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধযোগ্য। ঋণের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় নন-ফিন্যান্সিয়াল সেবা দেওয়া হয়।
গত শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পর্যটন ভবন মিলনায়তনে এসএমই ফাউন্ডেশনে ১৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংস্থার পরিচালনা পর্ষদ এবং সাধারণ পর্ষদের সদস্যদের কাছে ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমানের পক্ষে এসব পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মহাব্যবস্থাপক নাজিম হাসান সাত্তার। ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসএমই ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের ওপর পরিচালক পর্ষদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।