সবাই যখন পড়াশোনা শেষে বা ছাত্রাবস্থায় চাকরির নেশায় ঘুরে। ঠিক তখনি দুইজন বিশ্ববিদ্যালয়গামী ছাত্র-ছাত্রী ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন। একজন সানজিদা আক্তার সোনিয়া বর্তমানে সরকারি তিতুমীর কলেজে অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী এবং আরেক জন নাইমুর রহমান দূর্জয় একই কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
শুরুটা করেছিলেন কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায়, চিন্তা ছিল নিজেরা কিছু করবেন। তা থেকেই তাদের দেশীয় ক্ষুদ্র ও হস্ত শিল্প নিয়ে কিছু করার চিন্তা মাথায় আসে। যাতে আত্মকর্মসংস্থান হয় পাশাপাশি আরো অনেকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টির করতে পারেন।
২০১৮ সাল থেকে পরিকল্পনা করতে থাকেন এবং ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর ফেসবুকে একটি পেজ ও গ্রুপ খুলেন। যার নাম দেন “পল্লীর রঙ”। গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধারণ করতেই চিন্তা ভাবনা করে “পল্লীর রঙ” নামটা ঠিক করেছেন দুই উদ্যোক্তা।
মাত্র ৮ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করে বর্তমানে মূলধন প্রায় ২ লাখ টাকা। ‘পল্লীর রঙ’-এ পাওয়া যায় হাতের তৈরি গহনা, নকশা টিপ, হিজাব পিন, মাটির তৈজসপত্র, কুর্তি, কামিজসহ আরো বিভিন্ন পণ্য। তবে ভবিষ্যতে হস্তশিল্পের আরো কিছু সংযোজন করা হবে বলে জানান। উদ্যোক্তার পণ্যের সর্বোচ্চ মূল্য ২৫০০ টাকা ও সর্বনিম্ন মূল্য ২০ টাকা।
দুই নবীন উদ্যোক্তা উদ্যোক্তা বার্তাকে জানান, ‘ব্যবসা করতে গিয়ে প্রথমত আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তাছাড়া প্রতি নিয়ত পণ্য ডেলিভারিতে ক্রেতা সামলানো সহ নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এবং সব কিছু নিজেদেরই মোকাবেলা করতে হয়।’
সোনিয়া বলেন, পরিবার থেকে প্রথমে সাহায্য না করলেও এখন সাহায্য করে। আগে বলতো পড়াশোনা শেষ করে তারপর কিছু করো। কিন্তু যখন দেখলো ভাল কিছু করছি তখন আর কিছু বলেননি।
ব্যবসা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে দূর্জয় বলেন, “নিজেদের একটি প্রডাকশন হাউজ হবে, আউটলেট হবে যেখানে অনেক বেকার তরুণ-তরুণী কাজের সুযোগ পাবে।”
নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ হিসেবে বলেন “নতুনদের জন্য বলতে চাই যেই কাজই করুন না কেন তা মন দিয়ে, নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে করুন। লেগে থাকতে হবে কাজের সাথে, তাহলে অবশ্যই সুফল পাওয়া যাবে।”
তাই চাকরির পেছনে না ঘুরে যদি আমরা নিজেরা কিছু করার চেষ্টা করি তাহলে বেকার থাকতে হবেনা অনেক তরুণ-তরুণীকে এবং অর্থনৈতিক দিক দিয়ে নিজেরা সমৃদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি সমৃদ্ধ হবে দেশ। দেশীয় পণ্যের মাধ্যমে আমরা সারাবিশ্বে আমাদের নতুন পরিচয় সৃষ্টি করতে পারব। যেমনটি করেছেন সোনিয়া ও দূর্জয় এবং হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা।
খাদিজা খাতুন স্বপ্না