দেশের চা শিল্পের উন্নয়ন ও প্রসার ঘটিয়ে বিশ্ব দরবারে ব্র্যান্ডিং করতে চায়ের সাথে সংশ্লিষ্টদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
আজ (৪ জুন) মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘৩য় জাতীয় চা দিবস উদযাপন ও ১ম জাতীয় চা পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান।
টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নজরদারি এবং নানামুখী উদ্যোগের ফলে দেশের চা খাত আজ টেকসই ও মজবুত অবস্থানে এসেছে। গুণগতমান সম্পন্ন চা উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কার্যক্রম জোরদারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন শ্রমিকবান্ধব নেতা। গরীব দুঃখী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ে সারাজীবন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। চা শিল্পের সাথে প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক যার অর্ধেকের বেশি নারী শ্রমিক নিয়োজিত আছে। এ শিল্পের সাথে তাদের ভাগ্য জড়িয়ে আছে।নারী পুরুষ নির্বিশেষে শ্রমিকদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, যেকোনো শিল্পের প্রাণ হচ্ছে শ্রমিক। অতএব তাদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চা শ্রমিকদের বেতন নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নিয়ে নিজে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করে দিয়েছেন এবং শ্রমিকরা তা নির্দ্ধিধায় মেনে নিয়েছেন।
টিপু মুনশি জানান, বর্তমানে দেশে এক লক্ষ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি বছর দেশে চায়ের চাহিদা ৫-৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৭ কোটি মানুষ এককাপ করে চা পান করলেও ১৭ কোটি কাপ চা প্রয়োজন। আমরা একজন প্রতিদিন ৩-৪ কাপ চা পান করে থাকি। কিন্তু চা উৎপাদন সে হারে বৃদ্ধি পায় না। এ জন্য চা উৎপাদন বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
চা শিল্পের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ চা বোর্ড এবং এর অংশীজন হিসেবে চা বাগান মালিক, চা উৎপাদনকারী এবং প্যাকেজিং বিপণন কোম্পানিসহ চা শিল্পে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংগঠনকে প্রদেয় ‘জাতীয় চা পুরস্কার’ চা শিল্পের বিকাশ ও অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে অনুপ্রাণিত করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চায়ের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধি, বিপণন প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়ন এবং সর্বোপরি অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি চায়ের নতুন বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার পথ তৈরি করতে হবে।
মন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪ জুন ১৯৫৭ সালে বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যানের পদ অলংকৃত করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে দেশের চা শিল্পে অসামান্য অবদান রাখেন। চা শিল্পে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিবছর ৪ জুন চা দিবস পালন করা হয়।
এর আগে, দেশের চা শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় প্রথমবারের মতো চালুকৃত ‘জাতীয় চা পুরস্কার’-২০২৩ এক ব্যক্তি ও সাতটি প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহীদ।
এছাড়া, বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ আশরাফুল ইসলাম, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মঈনুদ্দিন হাসান এবং বাংলাদেশ চা সংসদের সভাপতি কামরান টি রহমান অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। পরে বাণিজ্যমন্ত্রী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চা মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা