বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পকলার পথিকৃৎ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১০৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদে তিন দিনব্যাপী জয়নুল উৎসব শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্বোধন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, ভারতের স্বনামধন্য শিল্পী যোগেন চৌধুরী, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক এস এম রেজাউল করিম, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এবং শিল্পাচার্য-পুত্র প্রকৌশলী ময়নুল আবেদিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিল্পীরা তাদের শিল্পকর্মের মাধ্যমে শুধু সৌন্দর্যই সৃষ্টি করেন না বরং জীবনের নানান দিক তুলে ধরেন। আমাদের সকল আন্দোলন-সংগ্রামে শিল্পীদের অনবদ্য অবদান রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিল্প চর্চার এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, শোষণহীন ও সংস্কৃতিমনা সমাজ বিনির্মাণে শিল্পাচার্য যে অনন্য অবদান রেখে গেছেন, তা নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জোগাবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছেন। তাঁর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ অনেক খ্যাতনামা শিল্পীর জন্ম দিয়েছে এবং দেশের শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে।
জয়নুলের শিল্পকর্মের মাঝে মানবিকতার অসাধারণ দৃষ্টান্ত প্রতিফলিত হয়েছে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, বাঙালি সংস্কৃতি, জাতিসত্তার স্বতন্ত্র পরিচয় ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের অনন্য অবদান মানুষ সবসময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
অনুষ্ঠানে শিল্পকলায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক এমদাদুল হক মো. মতলুব আলী এবং শিল্পী সহিদ কবীরকে জয়নুল সম্মাননা-২০২২ প্রদান করা হয়।
উৎসব উদ্বোধনের আগে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শিল্পাচার্যের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
উৎসব উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শিল্পীরা তাদের শিল্পপণ্যের পসরা নিয়ে মেলায় স্টল সাজিয়েছেন। এসব শিল্পের মধ্যে রয়েছে শীতলপাটি, মাটির পুতুল, কাঠের পুতুল, শখের হাঁড়ি, শতরঞ্জি, নকশিকাঁথা, বাঁশি, পাখাসহ নানা বাহারি পণ্য।
অন্যদিকে ইমরান উজ জামানের সংগ্রহে থাকা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবহৃত মৃৎপাত্রের প্রদর্শন করা হয়েছে অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে। এছাড়া চারুকলার শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের শিল্পকর্মের পসরা সাজিয়ে বসেছেন মেলায়। এর মধ্যে রয়েছে তাদের নিজেদের তৈরি নানা চিত্রকর্ম, নকশা, ঐতিহাসিক চরিত্রে ডিজিটাল ফটো, চারুকলা বিষয়ক গ্রন্থ ও কারুপণ্য প্রদর্শন।
৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই মেলা।
সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা