চকোলেটেই তানহার মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা

0
উদ্যোক্তা তানহা জাফরিন

‘চকোলেট’ শব্দটা শুনলেই আমাদের চোখের সামনে তরতাজা হয়ে ওঠে শৈশবের স্মৃতি। ছোটবেলায় চকোলেটের বায়না ধরেনি এমন মানুষ পাওয়া ভার। চকোলেট যে শুধু ছোটদের পছন্দ তা নয়। ছোট-বড় সকলেই চকোলেটের ভক্ত।

আর এই চকোলেট নিয়েই কাজ করছেন উদ্যোক্তা তানহা জাফরিন। অনলাইনে তার পেজর নাম ‘চোকো অ্যান্ড লাভ’।

ব্যবসায়ী বাবা মো. জিয়াউল হক চাইতেন মেয়ে যেন বড় হয়ে ব্যবসা করে। তিন ভাই বোনের মধ্যে সবথেকে বড় জাফরিনও ছোটবেলা থেকেই সেই স্বপ্নটা মনের মধ্যে এঁকে নিয়েছিলেন। কুড়িগ্রাম জেলায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা উদ্যোক্তা জেরিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।

কেনো উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, জানতে চাইলে তানহা জাফরিন উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ‘নিজে কিছু করতে চেয়েছি কিন্তু বাহিরে যেয়ে চাকরি করার ইচ্ছা আমার কখনই ছিল না। আবার আমার বাচ্চাকে আমি সবসময় সাথে রাখি। তাই বাসায় বসে ইউনিক কিছু নিয়ে কাজ করতে চেয়েছি। যা আমি ভালবাসা দিয়েই করবো। রান্নাই আমার ছিল প্রথম ভালবাসা। তাই নিজের ভালোবাসা ও সৃজনশীলতা দিয়ে বানিয়ে ফেললাম আমার কাস্টমাইজ হ্যান্ডমেড চকোলেট।’

কীভাবে উদ্যোগ শুরু করলেন জানতে চাইলে উদ্যোক্তা বলেন, ‘আমার উদ্যোক্তা হবার শুরুটা অনেক মজার। একদিন বিকেলে হঠাৎ করেই মাথায় আইডিয়া টা আসলো। রাতেই পেজ তৈরি করলাম । দুই দিনেই পেজের লোগো বানালাম। সাত দিনের মাথায় আমি আমার পণ্যের ছবি পেজে আপলোড দেই। ১ মাসের মাথায় ফুডপান্ডা থেকে অফার আসে, তাদের সাথে কাজ করার।’

কী কী পণ্য নিয়ে কাজ করছেন? জানতে চাইলে উদ্যোক্তা বলেন, ‘আমি কাস্টমাইজ হ্যান্ডমেড চকোলেট নিয়ে কাজ করি। মূলত আইটেম একটাই চকলেট কিন্তু যেহেতু কাস্টমাইজ আইটেম তাই বিভিন্ন ডিজাইনের হয়ে থাকে। পণ্যের গুণগত মান ধরে রাখার জন্য আপাতত আমি নিজের এক হাতে সব কাজ করে আসছি। শুধু ডেলিভারির জন্য নিজস্ব ডেলিভারি ম্যান রয়েছে।’

উদ্যোক্তা তানহা আপাতত অনলাইন বেজ শপ চালাচ্ছেন। অনলাইনে তার পেজর নাম ‘চোকো অ্যান্ড লাভ’ এবং ফুডপান্ডা ও পাঠাও অ্যাপেও তিনি তালিকাভুক্ত। এমনি কি তার শপই বাংলাদেশে প্রথম কাস্টমাইজ হ্যান্ডমেড চকোলেট শপ যারা ফুডপান্ডা থেকে চকোলেট পরিবেশন করেছেন।

উদ্যোক্তা তানহার চকলেট দেশের গণ্ডি পেরিয়ে রোমানিয়া পর্যন্ত গেছে। এছাড়া দেশের ভিতর ৬৪ জেলাতেই তার পণ্য পৌঁছে গিয়েছে।

কতো টাকা মূলধন নিয়ে শুরু করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে শুরুতে আমার তেমন কোনো মূলধন ছিল না। বলতে গেলে এদিক থেকে আমি অনেক ভাগ্যবতী। স্বামীর সর্বোচ্চ সহযোগিতা ছিল। যদিও এখন, নিজের আয়ের টাকা দিয়েই কাজ চালাতে পারছি। এখন প্রতিমাসে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার পণ্য উৎপাদন করি এবং ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করি।’

উদ্যোক্তা জাফরিন চকোলেটের মান ধরে রেখে সামনে এগিয়ে যেতে চান। তবে তার ছোট ছোট কিছু ইচ্ছা আছে। দেশের সব জেলায় ডেলিভারি দেবার পর দেশের বাহিরে যাবার ধারাটা অব্যহত চান। আর চকোলেটের জন্য উন্নতমানের পরিবেশ বান্ধব একটা চকোলেট শপের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

সাইদ হাফিজ
উদ্যোক্তা বার্তা, খুলনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here