দেশের অর্থনীতিতে এস এম ই খাতের অবদান ও গুরুত্ব এস এম ই খাতের উন্নয়নে এস এম ই ফাউন্ডেশনের উন্নয়ন কার্যক্রম গণমাধ্যমের অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের কাছে এবং তাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের জন্য কর্মশালার আয়োজন করেছে এস এম ই ফাউন্ডেশন। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে জনসংযোগ শাখার বার্ষিক কর্মপরিকল্পনায় অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের জন্য মোট ৩টি কর্মশালা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
দেশের অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের শীর্ষ সংগঠন “ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম -ই আর এফ -এর সহায়তায় সংগঠনটির সদস্য এবং এস এম ই খাত ও এস এম ই ফাউন্ডেশন এর কার্যক্রম সম্পর্কে নিয়মিত প্রতিবেদন করেন, এমন গণমাধ্যম কর্মীদের কে এই কর্মশালায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হয়। দিনব্যাপী কর্মশালায় শীর্ষ জাতীয় পত্রিকা, টেলিভিশন এবং অনলাইনের প্রায় ৩০ জন গণমাধ্যম কর্মী অংশগ্রহণ করেছেন।
কোভিড -১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে এস এম ই খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরে প্রতিবেদন তৈরী, এস এম ই খাতের উন্নয়নে ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের সাথে গণমাধ্যম কর্মীদের পরিচয় করিয়ে দেয়া, কোভিড ১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে এস এম ই খাতের উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা বিষয়ে মতবিনিময় এবং ই. আর এফ’ এর সাথে এস এম ই ফাউন্ডেশনের কাজের সম্ভাব্য ক্ষেত্র নিয়ে মতবিনিময় এই কর্মশালার উদ্দেশ্য।
কোভিড-১৯ এর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণের শর্ত শিথিল করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও কোভিড-১৯ এর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোকে আরো মনযোগী হওয়ার আহবান জানিয়েছেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান। এসএমই ফাউন্ডেশন এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম-ইআরএফ আয়োজিত অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের জন্য কর্মশালায় তিনি আরো বলেন, গত ৮ বছরে এসএমই খাতের ঋণ বিতরণের পরিমাণ প্রায় তিনগুণ বাড়লেও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চাহিদাও। তাই অর্থনীতিতে চার ভাগের এক ভাগ অবদান রাখা এসএমই খাতকে টিকিয়ে রাখতে হবে অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থেই।
এসএমই উদ্যোক্তাদের করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অর্থনৈতিক প্রতিবেদক এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম-ইআরএফ শক্তিশালী ভূমিকা রাখারও আহবান জানান তিনি। অনলাইনে যোগ দিয়ে কর্মশালার বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, কোভিড-১৯ এর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রয়োজনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণের শর্ত শিথিল করা প্রয়োজন। তাদের জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণের সময়সীমা আরো বাড়ানোর পাশাপাশি তা পরিশোধেও তাদের অন্তত ২ বছর সময় দেয়া প্রয়োজন।
এছাড়া করোনা দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের দিকে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, বিভিন্ন হারে কর আরোপের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কাছ পণ্য কিনতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়, তার চেয়ে কম খরচে সেই পণ্য আমদানি করা যায়, তাই বড় শিল্পগুলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কাছ পণ্য কিনতে চায় না।
এদিকে, সরকারের নজর দেয়া প্রয়োজন। সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এসএমই খাত দেশের অর্থনীতির প্রায় সব খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে, তাই এসএমই খাত যে দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি, তা শুধু বললেই হবে না, বরং এসএমই উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় নীতিগত ও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিআইডিএস-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এসএমই ফাউন্ডেশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ বিতরণে কাজে লাগানো উচিত।
ইআরএফ সদস্যদের জন্য আয়োজিত কর্মশালায় আরো বক্তব্য এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সফিকুল ইসলাম। অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের জন্য আয়োজিত দিনব্যাপী কর্মশালায় দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান এবং উন্নয়নে গণমাধ্যমে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা