একটি কোর্স- কাস্টমাইজড চকোলেটের উদ্যোক্তা বনে গেলেন জান্নাতুল মাওয়া

0

চকলেট খেতে পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া খুবই দুষ্কর। কিন্তু বর্তমানে বিদেশি চকলেটের পাশাপাশি কাস্টমাইজ চকলেট বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রিয়জনদের বিশেষ দিনগুলোকে বিশেষভাবে স্মরণ করতে এই ধরনের কাস্টমাইজ চকলেটের জুড়ি নেই। আর এই কাস্টমাইজ চকলেট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন ঢাকার নবাবগঞ্জের মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া।

জান্নাতুল মাওয়া চকলেট খেতে ভীষণ পছন্দ করতেন। একদিন হঠাৎ অনলাইনে দেখলেন সুন্দর সুন্দর চকলেট মেকিং ক্লাস করানো হচ্ছে। মনে প্রশ্ন জাগলো, কিভাবে সম্ভব বাসায় চকলেট বানানো, শুধু তাই নয় নিজের নামও লেখা যাবে এতে। বিষয়টা বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হলো জান্নাতুল মাওয়ার কাছে। তাই তো প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এবং লকডাউনের ফ্রি সময়টাকে ভালো ভাবে কাজে লাগানোর জন্য চকলেট বানানোর কোর্সে ক্লাস শুরু করেন। মূলত জান্নাতুল মাওয়ার চকলেট বেশ পছন্দের, সেই লোভে চকলেট নিজে বানাবে আর খাবে – এই ধরনের চিন্তাভাবনা থেকেই অনলাইন কোর্স শুরু করেন তিনি।

শুধু শিখার জন্যই দুটো কোর্স করেছিলেন। তারপর নিজে নিজে প্রচুর অনুশীলন করেন। প্রথম দু মাস যতো চকলেট বানিয়েছেন তার সবকিছুই পরিবার এবং আত্নীয়স্বজনদের দিয়েছেন। সবাই খুব প্রশংসা করেছেন তার চকলেটের। কিছু কাছের মানুষদের অনুপ্রেরণায় বিজনেসের চিন্তা করেন। বিজনেসের জন্য প্রচুর কোর্স এবং অনুশীলন করেন তিনি। তারপর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ‘Hungry for chocolate’ নামক একটি অনলাইন পেজ ওপেন করেন।

মাত্র ৬-৭ হাজার টাকা নিয়ে উদ্যোগ শুরু করেন জান্নাতুল মাওয়া। আপাতত নিজে একাই চকলেটের কাজ করছেন পাশাপাশি মা’র কিছুটা সাহায্য নেন। তবে দক্ষ কর্মী পেলে তিনি তার কাজে লাগাবেন। যেহেতু চকলেটগুলো কাস্টমাইজ করতে হয় তাই কর্মীর দক্ষতার বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন উদ্যোক্তা জান্নাতুল মাওয়া। ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা উপজেলায় ডেলিভারি দেওয়া হয় তার কাস্টমাইজ চকলেট। সরাসরি বিদেশে রপ্তানি না করলেও তার এমন অনেক ক্লায়েন্ট আছেন যারা তার কাছ থেকে চকলেট নিয়ে অনেক দেশেই পাঠিয়েছেন তাদের আত্নীয়স্বজনদের কাছে। কাস্টমাইজ চকলেটের চাহিদা সব চেয়ে বেশি। কারণ কাস্টমাইজ চকলেটে নিজের নাম, প্রিয়জনের নাম বা যেকোনো বিশেষ দিনের জন্য যেকোনো লেখা দিয়ে কাস্টমাইজ করে দেওয়া হয়। প্রতি মাসে মিনিমাম ১০০-১৮০পিস চকলেট তৈরি করে থাকেন তিনি।

বাবা একজন সফল ব্যবসায়ী সেই সুবাদে ব্যবসার প্রতি একটা দুর্বলতা কাজ করতো ছোটবেলা থেকেই। তাই তো নিজের পছন্দের চকলেটকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন জান্নাতুল মাওয়া এবং খুব অল্প সময়ে বেশ সাড়া পেয়েছে তার কাস্টমাইজ চকলেট। তিনি তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন,” প্লিজ চাকরির পেছনে ছুটে বেকার না থেকে উদ্যোক্তা হয়ে উঠুন। আপনার ভিতরে যে ক্রিয়েটিভিটি আছে সেটা বাহিরে বের করে আনুন, নিজের মেধাকে কাজ লাগান। কাউকে কপি করে উদ্যোক্তা হতে যাবেন না, কারো থেকে ইন্সপায়ার হয়ে কিছু একটা করুন। আপনার ভবিষ্যত ইনশাআল্লাহ উজ্জ্বল হবে যদি আপনার উদ্দেশ্য ভালো হয়।”

তিতুমীর কলেজ থেকে অনার্স ফাইনাল দিয়েছেন জান্নাতুল মাওয়া এছাড়াও কামিল প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন তিনি। তার উদ্যোগ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার ইচ্ছে আছে পোশাক নিয়ে কাজ করবো। ইতোমধ্যে কিছুটা কাজ শুরু করে দিয়েছি এবং যেহেতু কাস্টমাইজ চকলেট নিয়ে কাজ করছি তাই এটাকে সামনে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। এছাড়াও আমি আমার আশেপাশের দূর্বল মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চাই তাদের কর্মসংস্থান করে।”

সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here