ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু হয়েছে বিসিকে

0

দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)-এ ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু করা হয়েছে। আজ ১৩ জুন ২০২১ খ্রি. রবিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল-এর গ্র্যান্ড বলরুমে মাননীয় শিল্পমন্ত্রী জনাব নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, এমপি; প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিসিক ওয়ানস্টপ সার্ভিসের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিল্প প্রতিমন্ত্রী জনাব কামাল আহমেদ মজুমদার, এমপি। এছাড়াও অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আলী আজম, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং এফবিসিসিআই-এর সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিক-এর চেয়ারম্যান জনাব মোশতাক হাসান, এনডিসি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় শিল্পমন্ত্রী বলেন, “ওয়ান-স্টপ সার্ভিস-এর উদ্বোধনের মাধ্যমে বিসিক নতুন যুগে প্রবেশ করল। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ওয়ান-স্টপ সার্ভিসের বিকল্প নেই। আজ থেকে উদ্যোক্তাগণ শিল্প নিবন্ধন সেবা ওয়ান-স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ১৭ টি সেবাও ওয়ান স্টপ সার্ভিসের আওতায় আনার জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে বিসিক। বিসিকের নিজস্ব আরো ২৯ টি সেবা এবং বিসিক বহির্ভূত ১৩টি সেবা ক্রমে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস-এর আওতায় আনা হবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ(বেজা)-এর ন্যায় বিসিকের শিল্পনগরীসমূহের আওতাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের জন্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সাথে কাজ করে যাচ্ছে বিসিক”।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, এমপি বলেন, ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে বিসিক কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাগণকে অল্প সময় ও খরচে হয়রানিমুক্ত সেবা প্রদান করতে পারবে। ওয়ান-স্টপ সার্ভিস ডিজিটাল বাংলাদেশের আরেকটি অনুষঙ্গ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। বিসিকে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু করার ফলে এখন থেকে উদ্যোক্তাগণ ঘরে বসেই বিভিন্ন ধরনের সেবা নিতে পারবেন। ফলে তাঁদের একদিকে যেমন সময় কম লাগবে অপরদিকে অর্থেরও স্বাশ্রয় হবে”।

সভাপতির বক্তব্যে বিসিকের চেয়ারম্যান মোঃ মোশতাক হাসান এনডিসি বলেন, “ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করার ফলে বিনিয়োগে আগ্রহী উদ্যোক্তাগণকে দ্রুততম সময়ে সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। দেশে পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা
বিনির্মাণ সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালুর ফলে বিসিক শিল্পনগরীসমূহে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে ও Ease of Doing Business Ranking -এ বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান থেকে উত্তরণ সম্ভব হবে এবং দেশের শিল্পায়নের ধারা বেগবান হবে”।

তিনি বলেন ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন-২০১৮-এর ‘ক’ তফসিলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পর পঞ্চম প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)-কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ওয়ান-স্টপ সার্ভিস আইনে অন্তর্ভুক্তির ফলে কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তারা বিসিকের মাধ্যমে ট্রেড লাইসেন্স, জমি নিবন্ধন, পরিবেশ ছাড়পত্র, নির্মাণ অনুমোদন, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংযোগ, টেলিফোন সংযোগ, বিস্ফোরক লাইসেন্স, বয়লার সার্টিফিকেটসহ সংশ্লিষ্ট সকল সেবার জন্য অনলাইনে আবেদন করে একই জায়গা থেকেই এসকল সেবা পাবেন। ফলে কোনো বিনিয়োগকারীকে প্রাথমিক অনুমোদন ও অন্যান্য সেবার জন্য আর সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোতে যেতে হবে না।

বিসিক চেয়ারম্যান আরও বলেন যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান বিসিক জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূল পর্যায়ে শিল্পায়নের ধারা বেগোমান করার লক্ষ্যে পোষক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিকাশে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিসিক উদ্যোক্তা সৃষ্টি, শিল্প নিবন্ধন প্রদান, দেশের সম্ভাবনাময় এলাকায় শিল্পনগরী স্থাপন, লবণ শিল্পের উন্নয়ন, প্রকল্প বাস্তবায়ন, উদ্যোক্তা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদান, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নিজস্ব তহবিল থেকে ঋণ প্রদান, উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য বিপণনে সহায়তাকরণের জন্য মেলা আয়োজন, নতুন নতুন নকশা ও নমুনা উদ্ভাবন ও বিতরণ এবং মধু শিল্পের উন্নয়নসহ বিভিন্নমূখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

এছাড়াও তিনি বলেন যে বর্তমানে সারা দেশে বিসিকের ৭৬টি শিল্পনগরী রয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশের অর্থনৈতিকভাবে গুরত্বপূর্ণ এলাকায় ৪০ হাজার একর জমিতে ১০০টি পরিবেশবান্ধব শিল্পপার্ক স্থাপনের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে ১ কোটি উদ্যোক্তা সৃষ্টির পাশাপাশি ২ কোটি লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ২০৪১ সালে পরিবেশবান্ধব শিল্পসমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here