উদ্যোক্তা আরিফা সুলতানা

ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা করলেও শেকড়ের প্রতি টান থেকে মাটির সঙ্গে ভাব ছিল ছোটবেলা থেকেই। সেটি থেকেই কাজ শুরু করলেন মাটির তৈজসপত্র নিয়ে।

সিলেটের সুনামগঞ্জের মোঃ শওকত মিঞা এবং মার্জিয়া সুলতানা দম্পতির কন্যা আরিফা সুলতানা। সুনামগঞ্জ গার্লস হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, এরপর ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক শেষ করলেন সিলেট এমসি কলেজ থেকে। পাহাড়ি অঞ্চলে জন্ম থেকে বেড়ে উঠলেও বৈবাহিক সূত্রে চলে যান রাজশাহীতে। সেখান থেকে স্বামীর কর্মসূত্রে চলে যেতে হয় ঢাকায়।

ঢাকায় বসবাসের সময় চারদিকে মাটির তৈজসপত্রের ব্যবহার তার চোখে পড়ে। যেহেতু ছোটবেলা থেকেই মাটির প্রতি টান ছিল, তাই মাটির তৈজসপত্রগুলো কিনে সেগুলো নিয়মিত ব্যবহার করতে লাগলেন। হাল ফ্যাশনের যুগে বাস করেও তিনি মাটির তৈজসপত্রগুলোই নিত্য ব্যবহারের সঙ্গী করলেন। হঠাৎ স্বামীর চাকরির সুবাদে আবারো রাজশাহী চলে গেলেন। রাজশাহীতে যাওয়ার সময় তার নিত্য ব্যবহার্য মাটির তৈজসপত্রগুলো ভেঙে যায়। রাজশাহীর বিভিন্ন মার্কেটে তিনি খুঁজতে থাকেন পণ্যগুলো। কিন্তু কোথাও সন্ধান মেলে না, দু-একটা মিললেও সেগুলো মনের চাহিদা মেটাতে পারে না। নিজের প্রয়োজন থেকেই ভাবনা এলো ‘আমি নিজেই মাটির তৈজসপত্র নিয়ে কাজ করবো। যাতে আমাদের বাঙালির ঐতিহ্য মাটির তৈজসপত্রগুলো সকলের মাঝে টিকে থাকে’।

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে মাটির তৈজসপত্রের নঁকশা, পণ্যের গুনগত মান, হারিয়ে যাওয়া মাটির তৈজসপত্র নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করলেন। অভিজ্ঞতা অর্জন করে শুরু করলেন কাজ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কুমারদের কাছ থেকে তিনি মাটির তৈজসপত্রগুলো তৈরি করিয়ে নিচ্ছেন। প্রতিনিয়ত পণ্যের ডিজাইন, মান ভালো করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন আরিফা সুলতানা।রাজশাহীতে তার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ‘মাটিয়াল’ নামে ফেসবুক পেজ রয়েছে। যেখান থেকে অল্প সময়েই বেশ ভালো সাড়া মিলছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে মাটিয়ালের মাটির পণ্য।

আরিফা সুলতানা চান প্রতিটি মেয়েই যেন পরের অধীন থেকে বের হয়ে নিজে স্বাবলম্বী হয়। এছাড়াও দেশের মাটির প্রতি টান থাকায় সকলকে আহবান জানান দেশের ঐতিহ্যগুলো ধরে রাখতে কাজ করার।

তামান্না ইমাম
উদ্যোক্তা বার্তা, রাজশাহী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here