বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মাহফুজুল আলম খান ও এসএমই ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শাহীন আনোয়ার

গত ২৫-২৮ অক্টোবর ২০১৮ চীনের গুয়াংডং শহরে গুয়াংডং মডার্ন ইন্টারন্যাশনাল এক্সিবিশন সেন্টারে ‘2018 Guangdong 21st Century Martime Silk Road International Expo’ অনুষ্ঠিত হয়। এ মেলায় ৫৭টি দেশের মোট ১,৭৩২টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে বিদেশী প্রতিষ্ঠান ১,২২১ টি অর্থাৎ মোট অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের ৭০.৫০%।

বাংলাদেশের এসএমই উদ্যোক্তাদের স্টলের সামনে ক্রেতাসমাগম

চারদিনব্যাপী এ মেলায় মোট ৩৪,০০০ ক্রেতা সমাগম হয়েছে। এসএমই ফাউন্ডেশন ৮ জন এসএমই উদ্যোক্তাকে এ মেলায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করে।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনে বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর জনাব মাহফুজুল আলম খান উপস্থিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের এ মেলায় অংশগ্রহণ বাংলাদেশী পণ্যের চীনা বাজারে একটি নতুন দিক বলে মনে করেন এবং ভবিষ্যতে আরও সহযোগিতার আশ্বাস প্রকাশ করেন।

মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের সাথে বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মাহফুজুল আলম খান ও এসএমই ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শাহীন আনোয়ার

উল্লেখ্য, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো গুয়াংডং মেলায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রদান করেছে। এ মেলায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষে Yunnan Bengal Business Information Consultation Company Limited কনসালটেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছে।

বাংলাদেশের পতাকার সামনে এসএমই ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শাহীন আনোয়ার

এবছর বাংলাদেশ হতে মোট ৩৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের সহায়তাপুষ্ট ৮টি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান- কোজি লেদার লিঃ, এনেক্স বাংলাদেশ, ভাইপার, লেদারিনা প্রাইভেট লি:, ডিজাইন বাই রুবিনা, ন্যাচার ফর হিউম্যান, নতুনত্ব বুটিকস্ ও ট্রিম টেক্স বাংলাদেশ প্রথমবারের মত অংশগ্রহণ করে। ফাউন্ডেশনের সহায়তায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাগণ মেলায় চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, ক্রাফট ও শোপিস্ আইটেম এবং হোম ডেকোরেশন অ্যান্ড ফ্যাশন ডিজাইন সামগ্রী প্রদর্শন ও বিক্রয় করেন। এসএমই ফাউন্ডেশনের পক্ষে জনাব এস এম শাহীন আনোয়ার, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এ মেলায় অংশগ্রহণ করেন।

মেলায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের সাথে এসএমই ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শাহীন আনোয়ার

গুয়াংডং এ আয়োজিত এ মেলা বাংলাদেশী এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য চীনের তথা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে একটি প্রথম পদক্ষেপ। চারদিনের এই এক্সপোর প্রথম দুই দিন সোর্সিং এর জন্য অর্থাৎ ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক স্থাপনের জন্য নির্ধারিত ছিল এবং মেলায় ৩য় ও ৪র্থ দিন পাইকারী/খুচরা ক্রেতাদের জন্য উন্মুক্ত ছিল।

বিপুল দর্শনার্থীর সমাগম বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে

বাংলাদেশের এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য এ মেলা হতে যে যে বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে তা হলো- (ক) আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা; (খ) বিভিন্ন দেশ হতে আগত অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পণ্যের মান, ডিজাইন প্রভৃতি সম্পর্কে ধারণা এবং নিজের পণ্যের সাথে তুলনা করে পণ্যের মানোন্নয়নে সচেষ্ট হওয়া; (গ) মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ স্থাপন এবং ভবিষ্যতে তাদের সাথে দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবসা সম্পর্ক স্থাপন; এবং (ঘ) রপ্তানি বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাওয়া। তবে, প্রথমবারের মত অংশগ্রহণ করা এ সকল উদ্যোক্তাগণ যে যে বিষয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তা হলো- (ক) চীনের স্থানীয় ক্রেতারা চীনা ভাষায় কথা বলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে বিধায় মেলার স্টলে দোভাষী নিয়োগ করার প্রয়োজন হয়েছে; এবং (খ) পণ্যের গুণগতমান উন্নত হলেও বাংলাদেশের এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্যের স্পেসিফিকেশনসহ পণ্য বিষয়ে চাইনিজ ভাষায় যথাযথ তথ্যপত্র না থাকায় তারা তা অন্যের নিকট সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি। ফাউন্ডেশনের এ সকল অভিজ্ঞতা ও সমস্যাবলী বিবেচনায় এনে ভবিষ্যতে এসএমই উদ্যোক্তাদের মেলায় প্রেরণের পূর্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন

এসএমই পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ এবং রপ্তানি বৃদ্ধিতে এসএমই ফাউন্ডেশন এসএমই উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করে থাকে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন হতে আর্থিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি অন্যান্য কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হয়। মেলায় অংশগ্রহণের পূর্বে আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি এবং রপ্তানি বিষয়ে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, গুয়াংডং মেলায় উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি ফাউন্ডেশন হতে আটটি প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক পৃথকভাবে চীনা ভাষায় ব্রশিউর তৈরি করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে আরও নতুন নতুন কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে। এসএমই ফাউন্ডেশনের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস বাংলাদেশের পণ্যকে প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকতে সহায়তা করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে  প্রাপ্ত 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here