পড়াশোনা শেষ করে ১০ বছর সংসারে সময় দিলেন। তারপর যখন বাচ্চারা বড় হয়ে সারাদিন স্কুল থাকতো তখন একা একা সময় কাটতো না। সারাদিন ঘরে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। চিন্তা করে বের করলেন, ‘আমি ঘরে বসে উদ্যোক্তা হতে পারি’। সেই ভেবে কাজ শুরু করলেন নাজমুন নাহার রূপা।
২০১৭ সাল থেকে তার উদ্যোক্তা জীবন শুরু। বাচ্চারা স্কুল চলে যেতো। বর চাকরির সুবাদে থাকতো গাইবান্ধা। বাসায় একা একা খুবই খারাপ লাগতো। শ্বশুর-শ্বাশুড়ি নিয়ে সংসার। বাইরে কাজ করার অনুমতিও ছিল না। তাই বাসার নিচে শো রুম দিলেন যেনো ঘরে বসে ব্যবসা করতে পারেন। মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করে বেশ ভালো সাড়া পান।
২০২০ সালে করোনা কালীন সময়ে দোকান বন্ধ। কর্মীদের বেতন ঘর থেকে দিতে হতো। ঠিক সেই সময় উই-এর দেখা পেলেন। নাসিমা আক্তার নিশার পোস্টগুলো পড়ে অনলাইন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন। অনলাইনে ১ বছরে ৭ লাখ টাকার উপরে বিক্রি করেন। গত জুন মাস থেকে এই পর্যন্ত ৫ মাসে তার নতুন সংযোজন আচার প্রায় ২ লাখ টাকা বিক্রি করেন।
এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ২০ কেজি কদবেলের আচারের অর্ডার পেয়েছেন। তার আচার খেয়ে উই-এর টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি মিষ্টি অনেক প্রশংসা করেছিলেন। তিনিই প্রথম খেজুর ও আপেলের আচার অর্ডার করেন। তখন মাত্র ১ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে আচারের ব্যাবসা শুরু করেন রূপা।
টাঙ্গাইলের শাড়ি, থ্রি-পিস, হাতের সেলাইয়ের থ্রি পিস, ব্লক তার সিগনেচার আইটেম। তার ব্লক-এর কাপল ড্রেস বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এছাড়া সিজোনাল আচার আইটেম আপেল, খেজুর, কিচমিচ, আনারস, কদবেল, আম, চালতা, জলপাই, নাগা মরিচ, রসুন, বরই ইত্যাদি। মিষ্টি আইটেম শুধু গাজীপুরে ডেলিভারি দিয়ে থাকেন।
অনলাইনে উদ্যোক্তার পেইজের নাম ‘ফেইরি ফ্যাশন হাউজ এন্ড নাজমুন কিচেন’। বর্তমানে ৫ জন কর্মী তার সাথে কাজ করছে।
সারা দেশ থেকে তার পণ্য অর্ডার হয়। মোটামুটি সবকটি জেলায় তার পণ্য গেছে। মাসে কমবেশি ১ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেন। নিজে হাতে মাঝে মাঝেই এতিমদের রান্না করে খাওয়ান। ভবিষ্যতে তার উদ্যোগের ২০% লাভের টাকা দিয়ে এতিমদের জন্য কিছু একটা করতে চান উদ্যোক্তা রূপা।
সাইদ হাফিজ
উদ্যোক্তা বার্তা, খুলনা