একটা চাকরি হবে রুমার জন্য!

0

শুধু জানালার দিকে তাকিয়েই ৪টি বছর দেখেছেন, ভোর হলো আবার দেখেন সন্ধ্যা নামে

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় শারীরিকভাবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন একজন নারী পোলিও হয়ে দু পায়ের চলতশক্তি হারান শিশু অবস্থায়। মাধ্যমিকের পর পড়াশুনা আর হয়নি। অনেক মন খারাপ থাকলেও রুমা ভাবতেন কিছু করবেন।

একদিন মা রুমা কে কিনে দিলেন একটি স্মার্ট ফোন। সেদিন থেকেই অনলাইনে রুমার হাতে খড়ি। রুমা একজন অনলাইন পণ্যকর্মী হয়ে উঠলেন। অ-উৎপাদিত পণ্যের একজন উদ্যোক্তার সাথে গিফট পণ্যের বিক্রি শুরু করলেন। বিদেশ থেকে আনা নানান গিফট প্রডাক্টের অর্ডার নিতেন রুমা। অর্ডার নিয়ে সেটি জানাতেন গিফট হাউজে, মিলতো কমিশন। এভাবে রুমার দিন ভালোই চলছিল। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার একটি গ্রামে বসেই ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা এমনকি ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত রুমা আয় করেছেন।

করোনা পরবর্তী সময়ে গিফট হাউজে যে সকল নারীরা গিফট অনলাইনে অর্ডার নিতেন কেনাবেচা করতেন তাদের সাথে কাজ কমতে থাকল। আমদানি নির্ভর ব্যবসা হওয়ার কারণে দাম বেড়ে যাওয়া, পণ্যের সহজলভ্যতা অনেক বিষয় সমস্যা দেখা দিল। সেরা বিক্রয় কর্মী রুমার জীবনে কাজ কমতে থাকে।

রুমা এখন আবার তার ফোনটি হাতে নিয়ে বসে থাকেন এবং কাজের অপেক্ষা করেন প্রতিদিন। রুমা ভাবেন যে কেউ একজন তাকে একটি কাজে খুব ভালোবাসা দিয়ে একটু এগিয়ে নেবেন। কাজ পাগল রুমা যিনি ৫০ জন নারীর মধ্যে সেরা বিক্রয় কর্মী হয়ে উঠেছিলেন, তার জন্য আবার জেলখানার মতন একাকী সময় কাটানো! চান না রুমা।

ফেসবুকে চারটি গ্রুপের সাথে হরদম কাজ করলেও রোমার হাতে এখন আর তেমন কোন কাজ নেই। রুমা একটি কাজ চান। পেজ এর দায়িত্ব, গ্রুপের মধ্যে মডারেটর কিংবা মনিটরিং কিংবা কল রিসিভ অথবা অনলাইনে কোন এফ কমার্স টেলিসেল।

এমন কোন একজন নারী উদ্যোক্তাকে রুমা মনে প্রাণে আশা করছেন রুমার জীবনে। রুমা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন মানুষ মানুষের জন্য।

কোন না কোন মানুষ তার জন্য আছেই, আসবেই। কাজ করবেন রুমা, কোনমতেই নিজ আত্মসম্মানে আঘাত, মনোবল ভাঙ্গা বা দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হতে দেবেন না নিজেকে। এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয়ী রুমা। 

প্রতিবেদনটি লেখার সময় তোমার একটি কথা কানে ভাসছিল – অনলাইনে একটা কাজ কি হবে না ভাইয়া আপুরা এই রুমার জন্য

সম্পাদকীয় রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here