উদ্ভিদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই শুরু এম আর নার্সারি

0
উদ্যোক্তা মো: মজিবুর রহমান

মায়ের আঁচলের মতো মানুষকে আগলে রাখে গাছপালা, রক্ষা করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে। বাসা-বাড়ির আঙিনা বা ছাদে গাছ লাগিয়ে যেমন করা যায় সবুজের সমারোহ, তেমনি কমানো সম্ভব শহরের তাপমাত্রাও। সেই গাছের প্রতি আছে সবারই ভালোবাসা। কারও ফুলের গাছ, কারও বা ফলের। তেমনি একজন উদ্ভিদপ্রেমী মো: মজিবুর রহমান।

ছোট বেলা থেকেই তার ছিল উদ্ভিদের প্রতি ভালোবাসা। বাড়ির আঙিনায় লাগাতেন বিভিন্ন ধরনের গাছ। চাকরি জীবনে বাসার ব্যালকনি সাজিয়ে রাখতেন বিভিন্ন ধরনের গাছ দিয়ে। চাকরি জীবনের ইতি টেনে ২০১২ সালে উদ্ভিদের প্রতি ভালোবাসার টানে পরিবারের বাধা উপেক্ষা করে মামার সহযোগিতায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেন এম আর নার্সারি।

তিনি বলেন, ১৯৭৮ সালে চাকরির সুবাদে ঢাকায় পাড়ি জমাই। ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠনে। চাকরি জীবনের ইতি টেনে ২০১২ সালে বাড়ি এসে কীভাবে অবসর সময় কাটাবো তা নিয়ে ভাবছিলাম।

‘আমার যেহেতু গাছের প্রতি দুর্বলতা সেই ছোটবেলা থেকে, তাই গাছ নিয়ে এগোনোর পরিকল্পনা করি। পরিবারের সবাই জানার পর তারা বলেছিলেন, আমি পারবো না। ঢাকা থেকে এসেছি, হার্ড ওয়ার্ক করতে পারব না। তখন মামা পাশে দাঁড়ান। উনার কাছ থেকে ছয় শতাংশ জমি, নাম মাত্র পুজি ও দেশিয় ফুল ও ফলের গাছ নিয়ে শুরু করি। শুরুতে একা থাকলেও এখন স্থায়ীভাবে দু’জন ও অস্থায়ীভাবে তিন-চারজন সহকারি নিয়ে ৩০ শতাংশ জমি ঘিরে এম আর নার্সারি,’ বলে জানান তিনি।

কয়েকটি গাছ দিয়ে শুরু করলেও এখন দেশি-বিদেশি অনেক গাছ রয়েছে তার নার্সারিতে। ফলের মধ্যে আছে পার্সিমন, রাম্বুটান, ভিয়েতনামী নারকেল, কেরালা নারকেল, হরিমন-৯৯, বাগু আনার, অস্ট্রেলিয়ান আনার, বি এন সেভেন, ডক মাই, তাইওয়ান গ্রিন, তাইওয়ান রেড, ব্লাক স্টোন, বারি১১ ইত্যাদি। ফুলের মধ্যে রঙ্গন, হাসনাহেনা, হাসনাহেনা পিংক, গোলাপ, মাধবীলতা, চন্দ্রপ্রবাদ, ডলি চন্দ্র, লতা পারুল, বাগান বিলাসসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ আছে।

নেত্রকোণা বৃক্ষ মেলা ছাড়াও পরিচিত মহলে গ্রাহক আছে তার। ২০-২৫ জনের মতো রেগুলার ক্লায়েন্ট রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও সরকারি অফিসে গাছ ভাড়া দিয়ে থাকেন তিনি। শুরুতে ১৫-২৫ হাজার টাকা থাকলেও এখন ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০  হাজারের মতো সেল করে থাকেন।

এম আর নার্সারি ঘুরতে আসা নাঈম হাসান উদ্যোক্তা বার্তাকে জানান, ‘আমি একজন গাছপ্রেমী মানুষ। বাসার ব্যালকনি ও বাড়ির আঙিনায় গাছ লাগাতে আমার ভালো লাগে। আমি এখান থেকে প্রায় সময় গাছ সংগ্রহ করে থাকি। আজকেও একটা গোলাপ গাছ নিলাম।’

ভবিষ্যতে নিজে একটা জমি কিনে আরও বড় পরিসরে কাজ করতে চান মজিবুর রহমান। বিভিন্ন নার্সারি থেকে গাছ সংগ্রহ করলেও উৎপাদন বাড়াতে চান। চান বিলুপ্তপ্রায় বা বিরল প্রজাতির গাছগুলো সংগ্রহে রাখতে।

হাবিবুর রহমান,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here