বিশ্ব বাজারে দেশের বহুমুখী পাটজাত পণ্য তুলে ধরতে উদ্যোক্তা ইশরাত জাহান চৌধুরী ইতালি ও আয়ারল্যান্ডে রপ্তানি করতে যাচ্ছেন কাস্টমাইজ পাটের ব্যাগ।
করোনার শুরুতে বিদেশে পাট পণ্য রপ্তানী করতে ঝামেলা পোহাতে হলেও দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আশার আলো দেখছেন ‘তুলিকা’ নামে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্তাধিকারী উদ্যোক্তা ইশরাত জাহান চৌধুরী।
উদ্যোক্তা বার্তাকে ইশরাত বলেন, পাটের ব্যাগ রপ্তানী করতে যাচ্ছি। এবার ইতালি ও আয়ারল্যান্ডে করব। কাজ পুরোপুরি শেষের দিকে। ইনশাল্লাহ আগামী সপ্তাহেই রপ্তানী করতে পারব বলে আশা করছি I
এই করোনাকালীন সময়েও দেশের পাটপণ্য রপ্তানী করতে পেরে কেমন অনুভূতি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন: অবশ্যই পাট এর পণ্যর বাজার সম্প্রসারণ ও পাট খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা এবং বিদেশে রপ্তানী করতে পেরে নিজেকে গর্বিত লাগছে। মনে প্রাণে চাই যেন দেশে পাটের সোনালী সুদিন আবার ফিরে আসে। আমাদের নীতিনির্ধারকরা যেন পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে কার্যকরী নীতিমালা গ্রহণ ও পদক্ষেপ নেন, সেই ব্যাপারে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করি।
দেশীয় বাজারে পাটের চাহিদা কেমন জানতে চাইলে কুমিল্লার মেয়ে ইশরাত বলেন: দেশীয় পণ্যের বাজার এখনো স্থিতিশীল নয়, বিভিন্ন মেলা ছাড়া বিক্রি ওই পরিমাণে নেই। এছাড়া দেশীয় ক্রেতারা দেশীয় পণ্যের প্রতি খুব বেশি নজর দেন না যতোটা না তারা চীনের পণ্যের নজর দেন। ক্রেতাদের দেশীয় পণ্য কিনতে আরও আগ্রহী ও সচেতন করা প্রয়োজন। আমাদের গ্রাহকরা এখনো ফ্যাশানেবল বা দৈনন্দিন কাজে এক্সেসরিজ হিসেবে গ্রহণ করতে পারেনি।
২০১৭ সাল থেকে পাটজাত পণ্য নিয়ে কাজ করা ইশরাত উদ্যোক্তা বার্তাকে জানালেন, পড়াশোনা শেষ করে ব্যাংকে চাকরি করতেন তিনি। কিন্তু নিজেকে স্বাবলম্বী হওয়ার সঙ্গে অন্যকেও কাজের সুযোগ করে দেয়ার স্বপ্নটা মাথায় ঘুরতো, তাইতো হুট করে চাকরি ছেড়ে পাটজাত বহুমুখী পণ্যের ব্যবসা শুরু করলেন। গড়ে তুললেন ‘তুলিকা’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
‘তুলিকা’ নামে প্রতিষ্ঠানটির পণ্য ইতালি, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, বেলজিয়াম ও সুইডেন সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করার সুযোগ হয়েছে। তুলিকাতে পাটের তৈরী ব্যাগ, শপিং ব্যাগ, ওয়াই ব্যাগ, গ্রোসারি ব্যাগ, হ্যান্ডিক্রাফট, হোম ডেকরসহ নান্দনিক শিকেও পাওয়া যায়।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসায়িক অবস্থা কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারীতে আমাদের পণ্য রপ্তানি অনেক কমে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য যে প্রণোদনা কথা বলেছেন সেটা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। আমরা যারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা আছি সেই প্রণোদনার অর্থ যদি পাই তবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
ইশরাত জাহান পরিশেষে বলেন – এদেশের কৃষ্টির সঙ্গে মান্নান সই পাট ও পাটজাত পণ্য দেশে যেমন গুরুত্বের দাবিদার , তেমনি বিশ্ব বাজারেও এটি একটি উন্নন পরিবেশ বান্ধব পণ্য হিসেবে সমাদৃত।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা