আয়ুর্বেদিক কোর্স করে উদ্যোক্তা হলেন জেনিফার

0
উদ্যোক্তা উম্মে তাবাসসুম জেনিফার

পুরান ঢাকার বাসিন্দা উম্মে তাবাসসুম জেনিফার। গ্রাজুয়েশন ও পোস্ট গ্রাজুয়েশন করেছেন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে। এছাড়া আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার নিয়ে বেশ কিছু অনলাইন ও অফলাইন কোর্স করেছেন দেশে-বিদেশে।

বর্তমানে তিনি হারবাল স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার, হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছেন। দেশি ও বিদেশি পণ্যও বিক্রি করেন তিনি। তার পেইজের নাম “Jani’s Shop”.

উদ্যোক্তা জেনিফার বলেন: সবসময় চিন্তা করেছি স্বাধীনভাবে কাজ করা যায় এমন পেশা বেছে নেবো। নিজে উদ্যোক্তা হওয়ার আগে একটা প্রতিষ্ঠানে এইচআরে চাকরি করেছি। কিন্তু ৯টা -৫টা ডিউটি করতে আমার ভালো লাগতো না। আমি চেয়েছিলাম এমন কিছু করতে যা নিজের পরিচিতি তৈরি করবে এবং এর মাধ্যমে অনেকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে ।

সেই ভাবনা থেকেই ২৫ জুলাই, ২০২০-এ মাত্র ছয় হাজার টাকা দিয়ে জেনিফার তার উদ্যোগ শুরু করেন। ‘এমনও একটা সময় ছিল শুরুর দিকে যখন মাসে একটা দুইটা অর্ডার হতো। তিনি তৈরি করেন হারবাল সাবান,শ‍্যাম্পু,তেল,হেয়ার প‍্যাক,ব্রাইডাল প‍্যাক সহ ইত‍্যাদি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি নানা পন‍্য। প্রোডাক্টের গুণাবলীর কারণে এখন প্রতিমাসে ৩০ থেকে ৪০টার মতো অর্ডার থাকে। মাসে সেল হয় ২৫-৩৫ হাজারের মতো। দেশি ক্রেতা ছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশিরা যখন দেশে আসেন তখন আমার কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করেন। সেই সুবাদে জার্মানি, ইতালি, সৌদিতে আমার পণ্যের ক্রেতা রয়েছে। আরও বেশি করে দেশের বাইরে রপ্তানির পরিকল্পনা আছে।’

বর্তমানে ঘরোয়া পরিবেশে প্রোডাক্ট তৈরি করছেন বলে জানান জেনিফার। খুব শীঘ্রই কারখানা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে তার। এক্ষেত্রে বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন এবং সুবিধাবঞ্চিতদের অগ্রাধিকার দিতে চান তিনি। জেনিফারের প্রোডাকশনে এখন যে দুজন কর্মী আছেন তাদের একজন বাক প্রতিবন্ধী এবং অন্যজন বিধবা।

সামাজিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জেনিফার বলেন: পরিবার কখনই বাধা দেয়নি, মা আর বোনদের অনুপ্রেরণায় উদ্যোক্তা হতে পেরেছি। তবে পরিচিত অনেকেই কানাঘুঁষা করতো এই বলে যে, এত পড়াশোনা করে কী লাভ, যদি ঘরে বসেই কাজ করতে হয়। এমনও শুনতে হয়েছে যে যাদের চাকরি করার যোগ্যতা নেই শুধুমাত্র তারাই অনলাইনে ব্যবসা করে।

তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য জেনিফারের পরামর্শ: কোন কিছু শুরু করতে হলে অবশ্যই অনেক ধৈর্য এবং ডেডিকেশন থাকতে হবে। শুরুর পথটা কখনোই সহজ নয়, পথটিকে সহজ করে নিতে হবে। কাজ করতে গেলে বাধা আসবেই, সমালোচনা থাকবেই। কিন্তু কোনভাবেই থেমে যাওয়া যাবে না। লেগে থাকতে হবে। আল্লাহ উপর বিশ্বাস রেখে নিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই সৃষ্টি হবে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প।

ভবিষ্যতে এই উদ্যোক্তা একটা ট্রেনিং সেন্টার করতে চান, যেখানে আয়ুর্বেদিক বিউটিফিকেশন পেশায় আসতে চান এমন সবাইকে প্রফেশনাল ট্রেনিং দেওয়া হবে। একটা কারখানাও করতে চান যেখানে সমাজে পিছিয়ে পড়া সুবিধাবঞ্চিত ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন তিনি ।

আফসানা অভি
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here