উদ্যোক্তা সুমনা সুলতানা সাথি

শেখার আগ্রহ মানুষের চিন্তাশক্তিকে বিকশিত করে, সৃষ্টিশীল করে ভাবনার জগত। আর এই সৃষ্টিশীলতাই মানুষকে উদ্যোগী করে তোলে।

২০০২ সালে অনার্সে পড়াকালীন সময় শেখার আগ্রহ থেকেই হাতের কাজে হাতেখড়ি সুমনা সুলতানা সাথির। তিনি বলেন, “আমার ছোট ফুপু আড়ং এর সাথে ব্যবসা করতেন। হাতের কাজে দক্ষতা থাকায় আমার মা কাজ করতেন সেখানে। মূলত মায়ের কাজ দেখেই সব ধরনের হাতের কাজ শিখি এবং কাজ করতে থাকি ফুপুর সাথে”।

কাজ শেখাচ্ছেন উদ্যোক্তা

এরমাঝেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন সাথি। পড়াশোনা আর সংসারের খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন বেশ। সিদ্ধান্ত নিলেন নিজেই উদ্যোক্তা হবেন, নিজেই নিজের ভাগ্য বদলাবেন। আড়ং এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে উদ্যোক্তা সহায়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিলেন এসএমই ফাউন্ডেশন এবং বিসিক থেকে।

মাত্র দুজন কর্মী নিয়ে পাবনার ভাংগুরায় ছোট্ট পরিসরেই এস.আর হ্যান্ডিক্রাফট এর পথচলা শুরু করেন উদ্যোক্তা। শুরুটা সহজ ছিলোনা। কাজের মান এবং দৃঢ় মনোবলে অল্প  সময়েই ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন উদ্যোক্তা।  নিজের কারখানায় কাজের পাশাপাশি উদ্যোক্তা মনোনিবেশ করেন কর্মী তৈরিতে। এ লক্ষ্যে সাতক্ষীরা, যশোরসহ বিভিন্ন স্থানে নিজেই প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মী তৈরি করে কাজ আদায় করে নিচ্ছেন উদ্যোক্তা।

কর্মীদের কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন উদ্যোক্তা

বর্তমানে ৩২ জন কর্মী নিয়মিত কাজ করছেন উদ্যোক্তার কারখানায়। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে কাজ করছেন প্রায় ৪৫০ জন এবং অস্থায়ী কর্মী রয়েছে প্রায় ২৫০ জন। এদের সিংহভাগই নারী কর্মী। যাদের সাথে উদ্যোক্তা তৈরি করেছেন নিবিড় সম্পর্ক। প্রতিবছর প্রণোদনার উদ্দেশ্যে কাজের ভিত্তিতে কর্মীদের পুরস্কৃত করেন তিনি।

উদ্যোক্তার নিজের ডিজাইনকৃত পণ্য

উদ্যোক্তার তৈরি কুশন কাভার, বেড কাভার, পর্দা, টেবিল ক্লথ, বাচ্চাদের পোশাক দেশব্যাপী শোভা পাচ্ছে আড়ং এর বিভিন্ন শোরুমে। এছাড়াও নিজের পণ্য নিয়ে বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণ করে বেশ সুনাম কুঁড়িয়েছেন উদ্যোক্তা।

কর্মীদের কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছেন উদ্যোক্তা

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে উদ্যোক্তা বলেন, “আমার পণ্য নিয়ে বিশ্বদরবারে পৌঁছাতে চাই, বেকার নারীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে আরো বেশি  কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে চাই”।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, দেশের বাইরে পণ্য রপ্তানীর ক্ষেত্রে সরকারি এবং বেসরকারী সহায়তা পেলে নারী উদ্যোক্তারা দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে।

তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকতে হবে। সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে নারীদের দৃঢ় মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। দৃঢ়তা থেকেই সফলতা আসবে”।

 

সামির হোসেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here