উদ্যোক্তা- সেলিনা আক্তার

বাজারের পোশাকের চড়া মূল্য আর ডিজাইন পছন্দ না হবার কারণে চাকরির পাশাপাশি নিজের পোশাক নিজেই ডিজাইন করতেন সেলিনা আক্তার। সাদামাটা পোশাকগুলোকে নয়নাভিরাম সুঁই সুতা ও সিকোয়েন্সের কাজে ফুটিয়ে তুলতেন। যা সহজেই সকলের নজর কাড়তো।

নিজের প্রয়োজনে ডিজাইন করলেও সেলিনার তৈরী পোশাকগুলো বান্ধবীরা প্রায়ই অর্ডার দিতেন। এমবিএ যখন শেষের দিকে তখন বিয়ের পিঁড়িতে বসেন সেলিনা। বিয়ের পর প্রথম ঈদে ননদকে একটা থ্রি-পিস ডিজাইন করে দিলেন। কাজ দেখে সবাই খুব অনুপ্রেরণা জোগালো। যার ফলে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে বেগ পেতে হয়নি সেলিনাকে।

নিজের উদ্যোগের শুরুর দিককার কথা জানাতে গিয়ে সেলিনা আক্তার উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, “স্বামীর পরামর্শে ৬০০০ টাকা নিয়ে নিউমার্কেটে যাই। প্রথমে কয়েকটা ব্লক আর এমব্রয়ডারির ড্রেস নিলাম। আত্মীয়স্বজনরা সব ক্রয় করে নেয়, বেশ আনন্দের সাথে পুনরায় বিনিয়োগ করে কাপড় কিনে নিজেই শাড়ি, থ্রি-পিস, হিজাব প্রভৃতি পোশাক ডিজাইন করা শুরু করলাম।”

উদ্যোক্তার নিজস্ব ডিজাইনে তৈরী পোশাক

২০১২ সালে  ‘ক্রিয়েশনস ম্যাজিক’ নামে ফেসবুকে একটি পেইজ চালু করেন সেলিনা। এর পাশাপাশি সদরঘাট এবং পাটুয়াটুলিতে নিজের ডিজাইনের হিজাব হোলসেল করতেন এবং বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণও করতেন সেলিনা।

উদ্যোক্তার তৈরি পোশাক নিয়ে মেলায় অংশগ্রহণ

৫০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে রাজধানীর বাসাবোতে ছোট্ট কারখানা ও সাব ফ্যাক্টরি স্থাপন করে ডিজাইন করে পোশাক  তৈরি শুরু করেন উদ্যোক্তা। ব্যবসা বৃদ্ধি পেতে শুরু করলো। কিন্তু হঠাৎ দেশের  অনুকূল পরিস্থিতির জন্যে দূর্ভোগ পোহাতে হয় উদ্যোক্তাকে। তবে হার মানেননি। কঠোর মনোবল আর প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়ে উদ্যমী হয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন উদ্যোক্তা।

কর্মীর সুনিপুণ কার্য-সম্পাদন

স্বামীর সহায়তায় নতুন নতুন পণ্য যেমন; হ্যান্ড ক্লাচ, কাগজের এম্বুস ফুল, কাপড়ের ফুলের ব্রোজ ইত্যাদি তৈরী করতে শুরু করেন উদ্যোক্তা।

২০১২ সাল থেকে উদ্যোক্তা বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণ করে যাচ্ছেন তার সৃজনশীল ডিজাইনের পোশাক নিয়ে। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকলো উদ্যোক্তার তৈরি পোশাকের চাহিদা এবং ক্রেতাদের সংখ্যা।

বর্তমানে উদ্যোক্তার সুইং ও এমব্রয়ডারির একটি ফ্যাক্টরি এবং একটি শোরুম আছে। যেখানে নিয়মিত কর্মী সংখ্যা ১৫ জন এবং চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে আছেন ২০ জন।

উদ্যোক্তা সেলিনা আক্তার এর শো-রুম

তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আজ অনেকে আত্মনির্ভরশীল হতে চাচ্ছে নিজের জন্য বা সময়ের জন্যে। কিন্তু মাথায় রাখবেন, শুধু বাংলাদেশে অর্থনীতির জন্য কার্যকর উদ্যোক্তা, ট্রেডিং নয়। সমৃদ্ধির অপরিহার্য, একজন নির্মাতাও হতে পারে।”

 

জেবুননেসা প্রীতি
এসএমই করেস্পন্ডেন্ট ,উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here