শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন ঢাকা শহরেই উন্নত বিশ্বের নগরের মতো নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। ঢাকা দেখতে এখন বিদেশের মতো, তবে আমাদের ঐতিহ্য ভুলে গেলে চলবে না। অন্তরে সেটা লালন করতে হবে তাই এমন হেরিটেজ কার্নিভাল সব সময় প্রয়োজন।
শনিবার গুলশান লেক পার্কে মহান বিজয় দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ হেরিটেজ ক্রাফট ফাউন্ডেশনের উইন্টার কার্নিভালের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ হেরিটেজ ক্রাফট ফাউন্ডেশনের সভাপতি টুটলী রহমানের সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওয়েই। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ফেয়ার গ্রুপের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) হামিদ আর চৌধুরী।
দুইদিন ব্যাপী এ কার্নিভালে ছিল নানা হস্তশিল্প, মৃৎশিল্প, নকশি, জামদানি ও হ্যান্ড প্রিন্টেট শাড়িসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসিয়েছে স্টলগুলো। এছাড়াও ছিল পাট পণ্য, জামদানি, রিক্সা আর্ট, হাতে তৈরি কম্বল, চা বাকর খানি এবং ঢাকাই পনির, পাটের গৃহসজ্জা সামগ্রী, কাঠের শৈল্পিক কাঁথা, হস্ত শিল্প, ট্রে মোমবাতি, জুয়েলারি সামগ্রী, পিঠাপুলি, গাছসহ মৃৎ শিল্পসহ বিভিন্ন আয়োজন।
এছাড়া উৎসবে শিশুদের জন্য ফেস পেইন্ট, নাগরদোলা, মেরিগোল্ড রাউন্ড, চরকি, লাট্টু কমপিটিশন, মারবেল কমপিটিশন, বায়োস্কোপ ও বানর নাচের আয়োজন করা হয়।
শনিবার সরেজমিনে গুলশান লেক পার্কে দেখা যায়, আয়োজক, উদ্যোক্তা ও দর্শনার্থীদের মধ্যে মিলন মেলার বন্ধন তৈরি হয়েছে।
উৎসবমুখর পরিবেশে ক্রেতারা নানান পণ্য কেনাকাটা করছিলেন। মেলায় ঘুরতে আসা বনানীর সোহেলী খন্দকার উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ইট কাঠের শহরে এমন আয়োজন খুব একটা দেখা যায় না। আমার ছোট সন্তানরা এখানে খেলা করছে, বায়োস্কোপ দেখছে, নাগরদোলা উঠছে, সত্যি বলতে ছেলের আনন্দ দেখে আমি আমার ছেলে বেলায় ফিরে গিয়েছি।
বিকেলে এই পার্কে নিয়মিত হাঁটতে আসা ফারুক হোসেন বলেন, গতকাল এসেই এখানকার প্রোগ্রামের কথা বাসায় গিয়ে বলেছিলাম। আজ স্ত্রীসহ অন্যান্যদের নিয়ে এসেছি। তারা বেশ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কিনল। আসলে ব্যস্ততার মাঝে সবকিছু পাওয়া যায় না।
বাংলাদেশ হেরিটেজ ক্রাফট ফাউন্ডেশনের সভাপতি টুটলী রহমান বলেন, আমি সকলকে ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা এখানে অংশগ্রহণ করেছেন। আমাদের শিল্প, ঐতিহ্যকে স্মরণ করতেই এমন আয়োজন। এই কার্নিভ্যালে ২৫টি স্টলে ছিল নানা রকমের পণ্যের পসরা।
কার্নিভালের আয়োজনে ছিল বাংলাদেশ হেরিটেজ ক্রাফট ফাউন্ডেশন। এছাড়াও ছিলেন গুলশান সোসাইটি ও শিল্প মন্ত্রণালয়।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর গুলশান লেকপার্কে এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি ছিলেন চীনা দূতাবাসের কনস্যুলার ইয়াং হেলান এবং গুলশান সোসাইটির সভাপতি সাখাওয়াত আবু খায়ের মোহাম্মদ। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হেরিটেজ ক্রাফট ফাউন্ডেশনের সভাপতি টুটলী রহমান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সূচনা হয় ‘আমি বাংলার গান গাই’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে। পরে অতীত ও বর্তমানে বর-কনের গায়েহলুদ, বিয়ে উৎসব নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ফ্যাশন শো। বিকেলের আয়োজনে ছিল নকশি, জামদানি ও হ্যান্ড প্রিন্টেড শাড়ির ফ্যাশন শো। এরপর উপজাতীয় নৃত্য, নুরজাহান আলিমের সংগীতানুষ্ঠান এবং খাদি ও মণিপুরি কাপড় নিয়ে ‘আ টাচ অব ফিউশন’।
ডেস্ক রিপোর্ট উদ্যোক্তা বার্তা