উদ্যোক্তা-মাহবুবা বেগম টিপু

মিরপুর কাজীপাড়া, উদ্যোক্তা মাহবুবা বেগম টিপুর সু এবং ব্যাগ ফ্যাক্টরি। ফোনে কথা হয় উদ্যোক্তার সাথে। উদ্যোক্তা যেতে বলেন তার ফ্যাক্টরিতে। উদ্যোক্তা বার্তা টিমও রওনা দেয় তার কথামতো। খুব হাসি মুখে রিসিভ করে নিয়ে গেলেন তার ফ্যাক্টরিতে। তারপর পুরো ফ্যাক্টরিটি ঘুরিয়ে দেখালেন এবং জানালেন তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার কথা।

মাহবুবা বেগম টিপু, জন্ম ঠাকুরগাঁও। সেখানেই স্কুল কমপ্লিট করেন এবং তারপর ঢাকা মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলোসফিতে অনার্স মাস্টার্স করেন। তারপর প্রায় আট বৎসর একটি এনজিওতে চাকরি করেন। এর মাঝে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন ভার্সিটির ক্লাসমেটের সঙ্গে। তাদের মাঝে বেশ বন্ধু সুলভ সম্পর্ক। তার স্বামী ব্যাংকে চাকরি করেন। টিপুও চাকরি করছিলেন কিন্তু যখন সন্তান জন্মগ্রহণ করেন তখন চাকরিটা আর করা সম্ভব হয়নি, চাকরি ছেড়ে দেন। বেশ কিছুটা সময় সন্তানকে দিলেন সন্তান একটু বড় হওয়ার পর তিনি আবারও ভাবলেন কিছু করা যায় কিনা। অনেকটা হতাশা কাজ করছিল সেই সময়। হতাশা থেকেই স্বামীর সঙ্গে শলা পরামর্শ করে তাদের উভয়েরই বন্ধুর সাথে পার্টনারশিপে খাদ্য পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করলেন বগুড়াতে।

প্রায় তিন বছর সেখানে ব্যবসা করলেন ব্যবসা ভালোই চলছিল কিন্তু তার কাছে মনে হয়েছে খাবার নিয়ে কাজ করা খুব কঠিন। একটা খাবার স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তৈরি করা, সংরক্ষণ করা বেশ কষ্টসাধ্য।
এ প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা টিপু বলেন, “আমি লক্ষ্য করে দেখলাম একটি খাবার তৈরি করার পর তিন মাস বা চার মাস পর সেটার মেয়াদ শেষ হয়ে যায় তখন সেই খাবার অযোগ্য। তাই এই সময়ের মধ্যেই পণ্যটি আমাকে সেল করতে হয় যেটা খুব চ্যালেঞ্জিং। কখনো সেই সময়ের মধ্যে খাবার বিক্রি না হলে গুনতে হতো লস। তাই আমার চিন্তা হয় এমন কিছু নিয়ে কাজ করার যেটা তিন মাস বা চার মাস পরেই  বিক্রির জন্য  চিন্তা করতে হবে না”।

উদ্যোক্তার স্বামী যেহেতু ব্যাংকের ক্রেডিট সেকশনে চাকরি করেন সে সুবাদে তিনি বিভিন্ন সু ফ্যাক্টরি ভিজিট করেছেন, কিছুটা অভিজ্ঞতা আছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে স্ত্রীকে পরামর্শ দিলেন লেদার নিয়ে কাজ করার। তারা শুরু করলেন ব্যাগ এবং সু তৈরীর কাজ।

প্রথমে অন্য ফ্যাক্টরিতে গিয়ে তাদের পছন্দমতো ডিজাইনে কিছু ব্যাগ এবং সু তৈরি করে নিতেন। অনলাইন পেইজ ‘ফটো লেদার’ এর মাধ্যমে সেগুলো বিক্রি করতেন। টুকটাক সাড়াও মিলতে শুরু করল, সেটা ২০১৭সালের কথা। ক্রমান্বয়ে সাড়া বাড়তে থাকে তারা চিন্তা করেন এখনই সময় নিজের ফ্যাক্টরি দেয়ার। তারা ফ্যাক্টরি দিয়েছেন সেখানে প্রায় বিশ জনের মত কর্মী  মাসে পনের’শ থেকে দু হাজার পিস তৈরি করতে সক্ষম হন। অর্ডার এর ওপর উৎপাদন কম বেশি হয়।

দেশের ভেতরে অনেক লোকাল বায়ার আছেন তাদের কাছ থেকে ভালো অর্ডার পান। অনলাইনেও বেশ ভালো সাড়া পান। সম্প্রতি জাপান ইতালি সহ কয়েকটি দেশের বায়ারের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা স্যাম্পলও পছন্দ করেছেন এখন শুধু অর্ডারের জন্য অপেক্ষা।

তরুণদের জন্য উদ্যোক্তার পরামর্শ, তরুণরাই দেশের ভবিষ্যৎ তারা চাইলে দেশটাকে অন্য একটা রূপ দিতে পারে। সেকেলে ধ্যান-ধারণার থেকে এখনকার তরুণরা সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। তারা এখন শুধু চাকরির পেছনে ছুটে না। তারা চাকরি দেয়ার পরিকল্পনা করেন এবং উদ্যোক্তা হয়েই সেই ইচ্ছাটা পূরণ করতে পারবে বলে মনে করেন সফল এই উদ্যোক্তা।

বিপ্লব আহসান

1 COMMENT

  1. Sign in
    SIGN IN
    Welcome!Log into your account
    your username
    your password
    Forgot your password?
    PASSWORD RECOVERY
    Recover your password
    your email
    Uddokta Barta
    Home SME News
    স্বামীর পরামর্শেই স্ত্রী উদ্যোক্তা
    অক্টোবর ১০, ২০২০0

    উদ্যোক্তা-মাহবুবা বেগম টিপু
    মিরপুর কাজীপাড়া, উদ্যোক্তা মাহবুবা বেগম টিপুর সু এবং ব্যাগ ফ্যাক্টরি। ফোনে কথা হয় উদ্যোক্তার সাথে। উদ্যোক্তা যেতে বলেন তার ফ্যাক্টরিতে। উদ্যোক্তা বার্তা টিমও রওনা দেয় তার কথামতো। খুব হাসি মুখে রিসিভ করে নিয়ে গেলেন তার ফ্যাক্টরিতে। তারপর পুরো ফ্যাক্টরিটি ঘুরিয়ে দেখালেন এবং জানালেন তার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার কথা।

    মাহবুবা বেগম টিপু, জন্ম ঠাকুরগাঁও। সেখানেই স্কুল কমপ্লিট করেন এবং তারপর ঢাকা মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলোসফিতে অনার্স মাস্টার্স করেন। তারপর প্রায় আট বৎসর একটি এনজিওতে চাকরি করেন। এর মাঝে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন ভার্সিটির ক্লাসমেটের সঙ্গে। তাদের মাঝে বেশ বন্ধু সুলভ সম্পর্ক। তার স্বামী ব্যাংকে চাকরি করেন। টিপুও চাকরি করছিলেন কিন্তু যখন সন্তান জন্মগ্রহণ করেন তখন চাকরিটা আর করা সম্ভব হয়নি, চাকরি ছেড়ে দেন। বেশ কিছুটা সময় সন্তানকে দিলেন সন্তান একটু বড় হওয়ার পর তিনি আবারও ভাবলেন কিছু করা যায় কিনা। অনেকটা হতাশা কাজ করছিল সেই সময়। হতাশা থেকেই স্বামীর সঙ্গে শলা পরামর্শ করে তাদের উভয়েরই বন্ধুর সাথে পার্টনারশিপে খাদ্য পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করলেন বগুড়াতে।

    প্রায় তিন বছর সেখানে ব্যবসা করলেন ব্যবসা ভালোই চলছিল কিন্তু তার কাছে মনে হয়েছে খাবার নিয়ে কাজ করা খুব কঠিন। একটা খাবার স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তৈরি করা, সংরক্ষণ করা বেশ কষ্টসাধ্য।
    এ প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা টিপু বলেন, “আমি লক্ষ্য করে দেখলাম একটি খাবার তৈরি করার পর তিন মাস বা চার মাস পর সেটার মেয়াদ শেষ হয়ে যায় তখন সেই খাবার অযোগ্য। তাই এই সময়ের মধ্যেই পণ্যটি আমাকে সেল করতে হয় যেটা খুব চ্যালেঞ্জিং। কখনো সেই সময়ের মধ্যে খাবার বিক্রি না হলে গুনতে হতো লস। তাই আমার চিন্তা হয় এমন কিছু নিয়ে কাজ করার যেটা তিন মাস বা চার মাস পরেই বিক্রির জন্য চিন্তা করতে হবে না”।

    উদ্যোক্তার স্বামী যেহেতু ব্যাংকের ক্রেডিট সেকশনে চাকরি করেন সে সুবাদে তিনি বিভিন্ন সু ফ্যাক্টরি ভিজিট করেছেন, কিছুটা অভিজ্ঞতা আছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে স্ত্রীকে পরামর্শ দিলেন লেদার নিয়ে কাজ করার। তারা শুরু করলেন ব্যাগ এবং সু তৈরীর কাজ।

    প্রথমে অন্য ফ্যাক্টরিতে গিয়ে তাদের পছন্দমতো ডিজাইনে কিছু ব্যাগ এবং সু তৈরি করে নিতেন। অনলাইন পেইজ ‘ফটো লেদার’ এর মাধ্যমে সেগুলো বিক্রি করতেন। টুকটাক সাড়াও মিলতে শুরু করল, সেটা ২০১৭সালের কথা। ক্রমান্বয়ে সাড়া বাড়তে থাকে তারা চিন্তা করেন এখনই সময় নিজের ফ্যাক্টরি দেয়ার। তারা ফ্যাক্টরি দিয়েছেন সেখানে প্রায় বিশ জনের মত কর্মী মাসে পনের’শ থেকে দু হাজার পিস তৈরি করতে সক্ষম হন। অর্ডার এর ওপর উৎপাদন কম বেশি হয়।

    দেশের ভেতরে অনেক লোকাল বায়ার আছেন তাদের কাছ থেকে ভালো অর্ডার পান। অনলাইনেও বেশ ভালো সাড়া পান। সম্প্রতি জাপান ইতালি সহ কয়েকটি দেশের বায়ারের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা স্যাম্পলও পছন্দ করেছেন এখন শুধু অর্ডারের জন্য অপেক্ষা।

    তরুণদের জন্য উদ্যোক্তার পরামর্শ, তরুণরাই দেশের ভবিষ্যৎ তারা চাইলে দেশটাকে অন্য একটা রূপ দিতে পারে। সেকেলে ধ্যান-ধারণার থেকে এখনকার তরুণরা সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। তারা এখন শুধু চাকরির পেছনে ছুটে না। তারা চাকরি দেয়ার পরিকল্পনা করেন এবং উদ্যোক্তা হয়েই সেই ইচ্ছাটা পূরণ করতে পারবে বলে মনে করেন সফল এই উদ্যোক্তা।

    বিপ্লব আহসান

    Previous article
    মানবিক উদ্যোগে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, টাংগাইল
    Next article
    ৬ দিনব্যাপী শিল্প উদ্যোক্তা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ
    RELATED ARTICLESMORE FROM AUTHOR

    ৬ দিনব্যাপী শিল্প উদ্যোক্তা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ

    মানবিক উদ্যোগে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, টাংগাইল

    ‘বাংলাদেশের তরুণরাই দেশকে বদলে দিবে’
    LEAVE A REPLY
    Comment:
    Ismail hossain
    [email protected]
    Website:
    Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.

    ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের সাফল্যগাথা এবং সার্বিক উন্নয়নের চিত্র নিয়ে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ও একমাত্র অনলাইন নিউজ পোর্টাল “উদ্যোক্তা বার্তা”
    যোগাযোগ: [email protected]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here