মেক আপ, গেট আপ, কালার কসমেটিক্স, মেকওভার সেলুন কিংবা বিউটিফিকেশন এর সাথে “ফার্মেসী’ শব্দটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
সারা বিশ্বের বড় বড় সব মেক আপ বা কালার কসমেটিক্স ব্র্যান্ড এর পেছনে রয়েছে এ সংক্রান্ত পড়াশোনা এবং গবেষণার এক বিশাল ভূবন।
পুরোটাই আয়শা ঢেলে দিলেন শিক্ষণের কাজে, মনে মনে দৃঢ সংকল্প আঁটলেন এই সেক্টরেই কাজ করবেন, হবেন উদ্যোক্তা দেশে ফিরে।
বড় দুই বোন। একজন নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পি এইচ ডি করছিলেন, মেজ বোন বিসি এস ক্যাডার । আয়শাকে চাকরী করতেই হবে ব্যাপারটা যেন প্রিসেট ছিলো। কিন্তু না!
‘শপার্স পার্ক’ শুধুমাত্র একটি এফ কমার্স পেজ নয়, বড় বোন এবং দুলাভাই ভীষণ অনুপ্রাণিত করলেন ফেসবুক কমার্সে আয়শার প্রথম উদ্যোগ শুরু করাতে। ইতিমধ্যেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন আয়শা জনাব শাহ মখদুম সিদ্দিকীর সাথে। স্বামীর মত পেলেন আয়শা। বড় বোন রেবেকা সুলতানা ফার্মাসিস্ট, দুলাভাই জনাব মোঃ জাকারিয়া সবচাইতে বড় সাপোর্ট নিয়ে দাঁড়ালেন আয়শার উদ্যোগ এর পাশে। মেজো বোন ডাঃ রেশমা আক্তার এবং দুলাভাই জনাব খালিদ শাহজাহান দুজনেই পেশায় ডাক্তার, তারাও অমত করেননি। কিন্তু সারাক্ষণ আদরের ছোটবোনের উদ্যোগ নিয়ে চিরাচরিত শঙ্কার কথা বলেন।
আয়শা যখন সকল শঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে ২০১৯ সালে অনলাইন থেকে অফলাইনে আউটলেট দিলেন, প্রথম শো রুম দিলেন ধানমন্ডির জেনেটিক প্লাজায় বাবা জনাব রফিকুল আলম একজন উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা ব্যবসার ঘোর বিরোধী হলেও কন্যার উদ্যোগকে মেনে নিলেন সাদরে।
২০১৭ সালেই যৌথভাবে স্পেস রেন্ট করে, ২০১৮ সালে কায়ারা’র সাথে ঢাকায় এবং একই বছর কায়ারার সাথে চট্টগ্রামেই আয়শার শপার্স পার্কের অফলাইনে প্রথম আত্মপ্রকাশ। নিজের কঠোর পরিশ্রমের কারণে এবং কালার কসমেটিক্স জগতের সম্যক জ্ঞান থাকায় কারনে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তরুণ ঝলমলে উদ্যোক্তা আয়শাকে।
ইংরেজীতে একটি কথা আছে “ বিহাইন্ড এভরি সাকসেসফুল উইমেন দেয়ার ইজ এ ম্যান। স্বামী শাহ মখদুম সিদ্দিকী সেই অনুপ্রেরণা এমনই মনে করেন এবং সফলতার পথে হাটতে চান তরুণ উদ্যোক্তা আয়শা আলম সেই স্বপ্নটি এবং সহযোগীতা নিয়েই। মা শামীমা নাসরিন উৎসাহিত না করলেও বাধা দেননি কখনোই মেয়ের উদ্যোক্তা হবার পথে। মা তো মা’ই, মা সবসময় অনুপ্রেরণা দিয়েছেন আয়শা আলমকে ।
আজ টেসকো, আভিনো, ফ্রেড এন্ড ফ্লো, নিভিয়া, প্যারাসুট, টেসোরী ডি ওরিয়েন্ট, আরিয়া লায়া, ইভলাইন, ভিক্টোরিয়া’স সিক্রেট, একুয়া, বডিশপ, লরিয়েল, বুর্জয়েস, রিভূয়েল , বুটস ,সিম্পল, রেভুলোশন এবং ম্যাক এর মতো সব বিশ্বখ্যাত স্কিন কেয়ার এবং কালার কসমেটিক্স বাংলাদেশে পাবার এবংসঠিক পণ্য ব্যবহারে এক বিশ্বস্ত অভিনব ভূবন গড়ে তুলেছেন তরুণ উদ্যোক্তা আয়শা আলম।
অনলাইন এফ কমার্সেপুরো গতিতে চলবার সময় কাস্টমারদের চাহিদা অনুযায়ী প্রথমে মাত্র বিশ হাজার টাকা নিয়ে বড় আপা ও দুলাভাইকে অনুরোধ করেছিলেন স্কীণ কেয়ার ও কালার কসমেটিক্স বিদেশ থেকে পাঠাতে বলেছিলেন এক নতুন উদ্যোক্তা,আজ এল সি করে সেই তরুণ উদ্যোক্তা পণ্য আনছেন তিনি আর কেউ নন আয়শা আলম। নিরলস পরিশ্রম করছেন দেশের এ খাতটি সমৃদ্ধশালী করে কাস্টমারদের কাছে জেনুইন প্রডাক্ট পৌছে দিতে।
সব সময় দেখা যায় অবস্থা সম্পন্ন পরিবারের সদস্যরা কিংবা চাকরী বা ব্যবসা সুত্রে বিদেশ যাওয়া আসা করছেন এমন সব পরিবারের সদস্যরাই শুধু বিশ্বের নামী দামী বা মাঝারী দামী ব্র্যান্ডের স্কীন কেয়ার ও কালার কসমেটিক্স ব্যবহার করতে পারতেন। ইচ্ছে বা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কাস্টমাররা স্কীণ কেয়ার ও কালার কসমেটিকস এর পণ্য ভেজাল এর ভয়ে কিনতে চাইতেন না তাদের ভয় আজ পুরো ভেংগে দিয়েছেন উদ্যোক্তা আয়শা আলম।
দিনে ১৮ ঘন্টা অন লাইনে এবং নিজের উদ্যোগ এর শো রুম শপার্স পার্ক নিয়ে কাজ করেন আয়শা। বাংলাদেশের প্রথম সারির একজন উদ্যোক্তা হতে চান আয়শা , যিনি নিজে উৎপাদন করবেন বিশ্বমানের স্কীণ কেয়ার ও কালার কসমেটিকস এর সকল প্রসাধনী ও প্রয়োজনীয় পণ্য এবং সারা বিশ্ব তা আন্তর্জাতিক মানে স্বীকৃতি দেবে,যা জয় করবে ক্রেতাদের মন।
বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে মাথা উচু করে দেখতে চান আয়শা, ফার্মেসী এবং অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান ব্যাপক কর্ম সংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে।
দ্য ব্লু স্কাই চ্যারিটেবল অর্গানাইজেশন এর সম্পৃক্ত আছেন আয়শা। হেড অফ ভলান্টিয়ার্স হিসেবে নিজের সময়টি দিচ্ছেন স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি করতে।
অপু মাহফুজ