একেবারে পাকাপোক্ত উদ্যোক্তা হয়ে উঠবেন এমন কোনো কিছু তখনও ভাবেননি শিপু সাহা। তবে যেটা করতেন বেশ আনন্দের সাথেই করতেন। যখন অনার্স পড়েন, তখন অনলাইনে পেইজ খুলে শুরু করেন তার ছোট উদ্যোগ। পেইজের নাম দেন ‘সাত-সতের’। পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে কাজ করতেন। জামালপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ঘুরে তাঁতের তৈরি জিনিসপত্র, বিছানার চাদর, শাড়ি, থ্রি-পিস এরকম আরও অনেককিছু কিনতেন। বিশেষত সিরাজগঞ্জের মেয়ে হওয়ার সুবাদে সেখানকার তাঁত শিল্পের সাথে তার বেশ ভালো পরিচয় আগে থেকেই ছিলো। কোনটা কোন ধরণের তাঁতের কাজ বেশ ভালই বুঝতেন তিনি।
কিন্তু, মাস্টার্স পরীক্ষার প্রস্তুতি ও এরপর করোনার ধকলে দীর্ঘদিন তার প্রাণের কাজ থেকে দূরে সরে যেতে বাধ্য হন। তবে এখন কাজ করছেন তার নিজের এলাকা সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তাঁতের কাতান শাড়ি এবং থ্রি-পিস নিয়ে। সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে সবার সামনে তুলে ধরতে চান দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই পোশাক শিল্পকে। তাঁত শিল্পের পাশাপাশি আছে নকশিকাঁথা, নারকেলের নাড়ু, রসকরা, ঘি, প্যারা, পাটিসাপটা পিঠা, ঝোলা গুড় এবং পাটালি গুড়।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2022/05/hafiz-middle-2.jpg)
মাসে তার ৫০ হাজার টাকার মতো পণ্য বিক্রি হয়। দুইজন কর্মী নিয়ে তিনি তার উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
দেশের বাইরে কানাডা, জার্মানি এবং লন্ডনে তার সাত-সতের পণ্য গিয়েছে। এছাড়া দেশের মধ্যে গেছে ৩০টার মতো জেলায়। বর্তমানে পাইকারি হিসেবেও বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু পণ্য যাচ্ছে। একজন সফল উদ্যোক্তা হিসাবে তার মূল লক্ষ্য পণ্য ও গ্রাহকের মধ্যে কিছু নতুনত্ব নিয়ে আসা।
তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট শিপু সাহা। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ এবং সেখানেই তার জন্ম ও বেড়ে উঠা। চক সোহাগপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার পড়াশোনা শুরু। এসএসসি পাস করেছেন সোহাগপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে। এইচএসসি বেলকুচি ডিগ্রি কলেজ থেকে। ঢাকার বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে করেছেন অনার্স এবং মাস্টার্স।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2022/05/hafiz-middle-1.jpg)
এইচএসসি পড়ার সময় জুয়েল অক্সফোর্ড স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। এরপর মণ্ডল গ্রুপ এবং এ.কে.আর টেকনোলজিতেও চাকরি করেছেন। তবে, এখন তিনি পুরোপুরি একজন উদ্যোক্তা।
সাইদ হাফিজ
উদ্যোক্তা বার্তা,খুলনা