উদ্যোক্তা জেসমিন আরা যূথী

ছোটবেলায় আমাদের সকলেরই খেলাধূলার প্রথম ধাপ যেন ‘মাটির খেলনা’ থেকেই শুরু হয়। খেলতে খেলতে অনেকে মাটির খেলনার প্রেমেও পড়ে যান। তেমনি একজন রাজশাহীর কন্যা জেসমিন আরা যূথী। ছোট বেলার সেই ভালোলাগা থেকে আজও বের হতে পারেননি তিনি।

জন্ম, শৈশব, কৈশোর সবই কেটেছে রাজশাহীর শালবাগান এলাকায়। জেলার সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পিএন গার্লস স্কুল থেকে মাধ্যমিক, সরকারি সিটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শোষ করে সময় এলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির। অনেক স্বপ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন এবং ভালো বিষয়ে পড়াশোনা করবেন। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা ভালো না হওয়ায় পছন্দের বিষয়ে ভর্তির পেলেন না। এই না পাওয়াটাই যেন আশীর্বাদ হয়ে গেলো, এমনটাই বক্তব্য জেসমিন আরা যূথীর।

তার মাটির প্রতি ছোটবেলা থেকেই একটা টান, সেই টান এবং চারুকলাতে ভর্তি, এ দুটোই কাজে লাগালেন বুদ্ধিমতি যূথী।

ভাবতে শুরু করলেন চারুকলাতে ভর্তি হলাম এখান থেকে এমন কি করা যায় যা নিজের আলাদা পরিচয় তৈরি করবে। বিভিন্ন ভাবনা-চিন্তার পর বেছে নিলেন ‘মাটি’। মাটিকে বিভিন্ন আকার দিয়ে গহনা তৈরি শুরু করলেন। তৈরির পর বাহারি রঙে রাঙিয়ে তৈরি করতে থাকলেন চমৎকার সব মাটির গহনা। তার সুনিপুণ হাতের কাজের কদর চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগলো না খুব একটা। অর্ডার আসতে থাকে চারিদিক থেকে। সময় এসেছে এবার নিজের কাজকে বাইরে ছড়িয়ে দেয়ার। ‘মৃত্তিকা’ নামেরর প্রতিষ্ঠান খুলে উদ্যোক্তার তালিকায় নাম লেখালেন।

গলার মালা, হাতের চুড়ি, কানের দুল, কপালের টিপ, সঙ্গে নাকফুল, ডোরবেলসহ বিভিন্ন মাটির পণ্যের বাহারি ডিজাইন, নানারঙে রাঙিয়ে চমৎকারভাবে সাজানো মৃত্তিকা।

‘মৃত্তিকা’ নামে একটি অনলাইন পেজ রয়েছে যা থেকে দেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে মৃত্তিকার বাহারি পণ্য। যূথীর স্বপ্ন মৃত্তিকাকে একটি নামি ব্রান্ডে পরিণত করা। সে লক্ষ্যে স্বামীর সহায়তায় নিজ হাতে মৃত্তিকার সকল পণ্য তৈরি করছেন জেসমিন আরা যূথী। শুধু কি তাই, পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে। বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষাতে সিলেক্ট হয়ে যাচ্ছেন। নিজের মহৎ উদ্যোগকে প্রথম প্রাধান্য দিয়ে, তারপর চাকরিতে যোগদান, সঙ্গে সংসার সামলানো সবই চলছে সমানবেগে।

তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here