সুগার ফ্রী নাড়ু, নারকেল নাড়ু, তিলের নাড়ু,মনাক্কা,দুধচিতই পাটিসাপটা, পুলি, পাকোয়ান, সহ নানা ধরনের পিঠেপুলি সেইসাথে সিঙাড়া, মিনি সমুচা, চিকেন নাগেটস সহ বিভিন্ন ফ্রোজেন আইটেম। এই মেনু গুলো এখন প্রতিনিয়ত তৈরি করা হচ্ছে রাজশাহীর নারী উদ্যোক্তা শেফাতুন নাহার মিমের প্রতিষ্ঠান ব্যঞ্জনে।
অনলাইনে শুরু করলেও বর্তমানে নিজ বাসাতে ছোট্ট পরিসরে ব্যঞ্জনের অফিস ও চালু করেছেন মিম।বর্তমানে এই উদ্যোক্তার তিনজন সহযোদ্ধাও রয়েছেন।
দুইবছর আগেও মিম ছিলেন সাধারণ একটা মেয়ে। দেশসেরা রাজশাহী কলেজে ইংরেজি সাহিত্য পড়াশোনা শেষ করে বৈবাহিক জীবনে পদার্পণ করেন মিম। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই স্বামীর সহোযোগিতায় গড়ে তোলেন হোম কিচেন ‘ব্যঞ্জন’।
উদ্যোগ হিসেবে ঘরে তৈরি খাবার কেই বাছাই করার কারণ জানতে চাইলে তিনি উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই রান্না করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। অন্যান্য কাজের প্রতি আমার খুব একটা টান নেই। ঘুরেফিরে রান্নার প্রতি ঝোঁক আমার বরাবরই বেশি। সে কারণেই ঘরে তৈরি খাবার নিয়ে কাজের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।শুরু থেকেই আমার শাশুড়ী মা আমাকে এই কাজে অনুপ্রেরণা দিয়ে চলেছেন এবং তিনি আমাকে কাজে সহযোগিতাও করেন। প্রথম যখন পাটিসাপটা পিঠার অর্ডার এসেছিলো ব্যঞ্জনে সেগুলো শাশুড়ী মা আমাকে তৈরি করে দিয়েছিলেন। শুধু আমি নই বরং সকল উদ্যোক্তাদেরই নিজ প্যাশনকেই উদ্যোগ হিসেবে বাছাই করা উচিত বলে আমি মনে করি। তবেই কিছুদিন না পেরতেই একটি উদ্যোগ ছেড়ে অন্যটি গ্রহণের মাত্রা হয়তো কিছুটা কমতে পারে।
প্রশিক্ষণ সম্পর্কে তিনি জানান ‘কলেজে অধ্যায়নরত অবস্থা থেকেই বিসিক, টিটিসি, যুব উন্নয়নে অসংখ্য উদ্যোক্তা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ নিয়েছি কেননা আমি বরাবরই চাইতাম আমার নিজস্ব কিছু থাকবে। এছাড়াও আমি উদ্যোগ গ্রহণের পরেও রান্না বিষয়ে আরো বেশ কিছু প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। যা আমার উদ্যোগ এর ভিত আরো মজবুত করতে সহযোগিতা করছে।
দুইবছরে কতটা এগিয়েছে ব্যঞ্জন এবং আগামীর পরিকল্পনা কি এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন _আলহামদুলিল্লাহ ব্যঞ্জন এই দুই বছরে অনেকটা পরিচিতি পেয়েছে। রাজশাহী জেলার পাশাপাশি আরো আট জেলায় ব্যঞ্জনের খাবার পৌঁছে গেছে। ইতোমধ্যে অসংখ্য কাস্টমার ব্যঞ্জনের রিপিট কাস্টমারের তালিকা ভুক্ত হয়েছে। আমরা ব্যঞ্জনের পরিধি আরো বিস্তৃত করতে চাচ্ছি। বিভিন্ন দোকানগুলোতে পাইকারিতে ব্যঞ্জনের কয়েকটি খাবার আমরা রাখতে যাচ্ছি খুব শীঘ্রই।
বাবার সরকারি চাকুরির সুবাদে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে বসবাস করেছেন উদ্যোক্তা শেফাতুন নাহার মিম। তিন মেয়ের মধ্যে মিম ছিলেন দ্বিতীয়। যাকে ঘিরে বাবার স্বপ্নের শেষ ছিলো না। আজ বাবা না থাকলেও বাবার আদর্শকে লালন করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে স্বপ্নবাজ এই নারী উদ্যোক্তা।
তামান্না ইমাম,উদ্যোক্তাবার্তা