শখ থেকে শুরু,এখন মাসেই বিক্রি দুই লাখ টাকা

0
উদ্যোক্তা সরোয়ার কায়ছার

যশোরের মোঃ শওকত আলীর বড় ছেলে সরোয়ার কায়ছার। বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে অধ্যায়নরত আছেন। পড়াশুনার পাশাপাশি কাজ করছেন ফেব্রিক্স নিয়ে। রঙতুলি দিয়েই যাত্রা শুরু হয় তার।

শুরুটা হয়েছিল অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে। টুকটাক ছবি আঁকতে পারতেন সরোয়ার। একবার ক্যাম্পাসের সিনিয়র এক বড় আপু আবদার করেন তার একটা জামাতে কয়েকটা প্রজাপতি এঁকে দিতে হবে। এঁকে দিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে সেই আপুর কয়েকজন বান্ধবীর কাছে ড্রেসটা বেশ ভালো লেগে যায়, তারা একই ডিজাইনের বিভিন্ন রঙের কয়েকটি ড্রেস করে দেওয়ার জন্য বলে। সেই থেকেই টুকটাক কাজ শুরু। এরপর মাঝে মাঝে দু একটা ড্রেস, পাঞ্জাবিতে হ্যান্ড পেইন্ট করতে থাকেন।

তারপর একদিন আড্ডায় সেই বড় আপু বলল, ‘তুই তো একটা পেজ খুলতে পারিস’। বিষয়টা ভেবে পরে সেই অনুযায়ী ‘তাতান’ নামে একটি পেজ খোলেন সরোয়ার। কিন্তু পড়াশোনা বা বিভিন্ন কারনে সামনে এগানো সম্ভব হয়নি। তারপর করোনার কারণে যখন সবকিছু বন্ধ ছিল তখন তিনি ভাবলেন বসে না থেকে যেহেতু একটা পেইজ খোলাই আছে, সেটা দিয়েই কিছু একটা শুরু করা যাক। যেই ভাবনা সেই কাজ। তখন অনেক খোঁজখবর নিয়ে একজন হ্যান্ড পেইন্ট-এর কর্মী, আর ব্লক প্রিন্ট ও স্ক্রিনপ্রিন্টের কারখানার খবর ম্যানেজ করে পরে কিছু প্রোডাক্ট স্টক করতে শুরু করলেন।

শুরু থেকেই মোটামুটি ভালোই সাড়া পেলেন। তারপর কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় কিছু দিন পর পেইজে দুই জন মেয়ে মডারেটর রাখেন, যারা গ্রাহকের সাথে কথা বলা অর্ডার নেয়ার কাজগুলো করে থাকে। এতে করে সরোয়ারকে শুধুমাত্র মার্কেটিং আর প্রোডাকশন সাইডটা দেখলেই হচ্ছে। বাকিটা অন্য যারা আছে তারাই সামলে নেয়। এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে সরোয়ারের তাঁতান।

মাত্র ৫ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেন সরোয়ার। ওয়ান পিস,পাঞ্জাবি, শাড়ি, ব্লাউজ, শীতের শালসহ বিভিন্ন দেশিয় পোশাক নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে ‘তাতান’-এ ৫ জন কাজ করছেন। ওয়ান পিস এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি, তারপর শাড়ি ও পাঞ্জাবির চাহিদাও রয়েছে অনেক। সরোয়ার পণ্যের মূল্য সবসময় স্টুডেন্ট বাজেটের মধ্যে রাখতে চান, কারন তাদের বেশিরভাগ গ্রাহকই স্টুডেন্ট বা চাকুরিজীবী। মাসে প্রায় ৪৫০-৫০০ পিসের মতো প্রোডাকশন হয় এবং দেড় থেকে প্রায় দুই লক্ষ টাকার মতো বিক্রি হয়। বাংলাদেশের সর্বত্র ‘তাতান’-এর পণ্য পৌঁছে গেছে৷

উদ্যোক্তা বার্তাকে তিনি বলেন, ‘অবসর সময়ে বসে না থেকে, নিজের ভেতর যেটুকু আছে সেটুকু দিয়ে নতুন কিছু করার জন্যই এই উদ্যোক্তা হওয়া। আর সেটার পাশাপাশি আর একটা কারণ হল, আমার একটা ইচ্ছা ছিল, এমন কিছু করার যাতে সেটা থেকে আর দুজনের কর্মসংস্থান হয়। যদিও তেমন কিছুই করতে পারি নি, তারপরও যে ৩/৪ জন কাজ করছে, কিছুটা হলেও তারা উপার্জন করতে পারছে। এটাই আমার কাছে অনেক কিছু’।

সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here