চলতি মৌসুমে রাজশাহী থেকে ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রায় তিনশ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেলার বাঘা উপজেলার ২২০ জন আম চাষি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে আম রপ্তানির জন্য চুক্তি সই করেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন জানান, চাষিরা আম রপ্তানির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তারা রপ্তানিযোগ্য আম সংগ্রহ শুরু করবেন।
কৃষিবিদ হোসেন বলেন, এ বছর তারা প্রায় তিন’শ কোটি টাকা মূল্যের আম রপ্তানি করতে সক্ষম হবেন বলে আশা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা রপ্তানির জন্য চার ধরনের আম নির্বাচন করেছি। এ গুলো হচ্ছে- খিরশাপাত, ল্যাংড়া, আম্রপালি ও টোটামুরি। বাংলাদেশ ফ্রুট, ভেজিটেবল এবং সহযোগি পণ্য রপ্তানিকারক এসোসিয়েশনের মাধ্যমে আম বিদেশে রপ্তানি হবে।
বাঘা উপজেলার চাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, তারা বিগত কয়েক বছরে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে আম রপ্তানি করেছেন। এ বছর ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে রপ্তানি উপযোগি আম উৎপাদন করেছেন তারা।
তিনি জানান, রপ্তানি উপযোগি আম উৎপাদন, সংগ্রহ ও সংগ্রহের পর রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করার বিষয়ে চাষিদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা রপ্তানি উপযোগি আম উৎপাদন এবং মান বজায় রাখতে পারেন। তিনি জানান, ২০১৪ সালের পর থেকে তিনি আম রপ্তানি করে আসছেন। বিদেশে রাজশাহীর আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ জন্য অনেক আম চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
শফিকুল ইসলাম জানান, বাঘা উপজেলায় ২০ জন চাষির সাথে চুক্তির মাধ্যমে আমরা আম চাষ করছি। এ সকল আম ইউরোপের বাজারে রপ্তানি করা হবে। তিনি বলেন, স্থানীয় বাজারে রপ্তানিতে লাভ প্রায় দ্বিগুণ। তবে আম রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করতে বাড়তি কিছু খরচ হয়। এ জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু সুযোগ সুবিধা পেলে আমের রপ্তানি মূল্য আরও বাড়বে। আম রপ্তানির জন্য বাঘায় কোন প্যাকেজিং হাউস নেই। ফলে ঢাকায় নিয়ে এ সব আম প্যাকেজ করতে হয়। এতে কিছু আম নষ্ট হয়ে যায়। আর্ন্তজাতিক বাজারে বাংলাদেশের আমের চাহিদা রয়েছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে খুব কম আম যাচ্ছে। আম রপ্তানির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট। কিন্তু গাছ থেকে আম সংগ্রহ করার পর পোকা থেকে রক্ষা করার জন্য এ ধরনের ট্রিটমেন্টের কোন ব্যবস্থা বাংলাদেশে নেই। আমে পোকা থাকায় অনেক আম রপ্তানি করা সম্ভব হয় না। আমরা যদি আম সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণে আরও সতর্ক হতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ আরো বেশি পরিমাণে আম রপ্তানি করতে পারবে।
জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে আম চাষিদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা মনিটরিং কমিটি মানসম্পন্ন আম রপ্তানির ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক কাজ করছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আম রপ্তানির মাধ্যমে আমরা বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
ডেস্ক রিপোর্ট,
উদ্যোক্তা বার্তা