উদ্যোক্তা-আতিকা রোমা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্থ্রোপলজি বিষয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন একজন তরুণ উদ্যোক্তা, আতিকা রোমা। তার ছোট থেকে বেড়ে ওঠা রংপুরে। নারীদের স্বাবলম্বী করে তোলার উদ্দেশ্যে, তাদের পথচলার যাতায়াত ব্যবস্থাকে উন্নত ও নিরাপদ করার জন্যে, নারীদের স্কুটি চালাতে শেখান তিনি। যাতে করে কোনো নারীকে সিএনজি কিংবা বাসের প্রতি বেশি নির্ভরশীল হয়ে ঝক্কিঝামেলা পোহাতে না হয়, যেনো কোনো নারীকে নির্যাতিত হতে না হয়।

উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণার্থীদের স্কুটির যন্ত্রাংশের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে ক্লাস নিচ্ছেন

১৯৯০ সাল, পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় তিনি মোটরসাইকেল চালানো শেখেন। কিন্তু সামাজিক ব্যবস্থায় নারীদের বাধার কোনো সীমা নেই।
চলাফেরা করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে থাকেন তিনি। বিশেষ করে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলাচল করতে যেয়ে, একধরনের শারীরিক এবং মানুষিক নির্যাতন অনুভব করেন। সেখান থেকে তিনি স্বপ্ন দেখেন নারীদের স্কুটি চালানোর প্রশিক্ষণ দিবেন এবং নারীদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করবেন।

আতিকা রোমা উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ” আমি যখন মোটরসাইকেল চালানো শিখি তখন নারীদের তেমন কোনো আগ্রহ দেখিনি। কিন্তু বর্তমানে নারীরা তাদের নিজেদের স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে চায় বলে, যাতায়াত ব্যবস্থাকে সর্বপ্রথম নিরাপদ করতে চায়। আর নারীদের এই তাগিদ আমাকে আমার স্বপ্নপূরণের পথে হাঁটতে শিখিয়েছে।”

প্রশিক্ষণার্থীদের স্কুটি চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন উদ্যোক্তা নিজে

২০০৪ সালে আতিকা রোমা ঢাকায় বসবাস করা শুরু করলেন চাকরির কারণে। তিনি যখন বাসে করে যাতায়াত করতেন তখন বিভিন্ন নারীকে নির্যাতন সহ্য করতে দেখতেন, যা অপ্রকাশ্যই থেকে যেতো। তিনি এসব কিছু দেখবার পর লক্ষ্য পূরণের চেষ্টায় আরো মনোনিবেশ করেন।

তিনি আরো বলেন, “একজন নারী তার স্বাধীন মাতৃভূমিতে  এখনো পরাধীন। কিন্তু তারা নিজেরা নিজেদের স্বাধীনতা অর্জন করবেই একদিন। কারণ, স্কুটি যেমন কোনো মেয়েলী বাহন না, তেমনি কোনো নারীও দুর্বল না।”

উদ্যোক্তা আতিকা রোমা তার প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে

২০০৮ সালে উদ্যোক্তা সিএনজিতে করে ইন্ডিয়ান অ্যাম্বেসি থেকে ফিরছিলেন, তখন আমেরিকান অ্যাম্বেসির সামনে মলম পার্টি তাকে আক্রমণ করে এবং অজ্ঞান করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। তখন থেকে একটি তীব্র ক্রোধ তার মাঝে এখন অবদি কাজ করে। আর সেই তীব্র ক্রোধই তাকে সকল নারীদের যাতায়াত ব্যবস্থাটাকে নিরাপদ রাখার চেষ্টায় বাধ্য করে।

তিনি বলেন, “আমি আমার সেই তীব্র ক্রোধ নিয়ে মা’কে বলেছিলাম যে আমি একটা মোটর চালিত বাইক কিনতে চাই, আমি অন্য কোনো যানবাহনে চলতে চাই না, কারো ওপর নির্ভর করে বাঁচতে চাই না।”

চলবে…

জেবুননেসা প্রীতি
এসএমই করেস্পন্ডেন্ট ,উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here