মা’র কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার করে রূপা’র উদ্যোগ

0
উদ্যোক্তা রূপা সরকার

পড়াশোনা শেষ করে রূপা সরকার একটি এনজিওতে চাকরি শুরু করেন। কিন্তু সকাল থেকে সন্ধ্যা একঘেঁয়ে কাজ উপভোগ করতেন না। স্বাধীনচেতা মানুষ অন্যের অযথা কর্তৃত্ব মেনে নিতে পারছিলেন না। আসলে তার মনের ভেতর ছিল, তিনি নিজে কিছু করবেন। ভাবনাটা জোরালো হলে চাকরিটা ছেড়ে দিলেন। কী করা যায় পরিকল্পনায় সময় গেলো কিছুদিন। একসময় মনে হলো, ‘আমিতো এপ্লিকের কাজ জানি। সেটা দিয়েই শুরু করি!’

শুরুতে পরিবারের মত ছিলো না। বলতো, ‘মেয়ে মানুষ বিজনেস করতে পারবি না। মানুষ তোকে ঠকাবে’। তারপর তিথি নামের এক বড় আপার সাপোর্টে মা’র কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার করে শুরু করে দিলেন নিজের উদ্যোগ।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে একটা অনলাইন পেইজ খুললেন, নাম ‘দোলন চাঁপা বুটিকস’। তার প্রিয় ফুল দোলন চাঁপা, এই কাজটাও তার খুব প্রিয়। ভালবেসে কাজ করেন, তাই প্রিয় ফুলের নামে পেইজের নাম। এপ্লিক দিয়ে শুরু করলেও পরে সুতার কাজ শুরু করেন। শুরুতে কর্মী তৈরি করতে খুব কষ্ট হয়েছে। অনেকে কাজ শিখে চলে গেছে। এখন ১৫ জন কর্মী আছে তার।

এপ্লিকের শাড়ি, থ্রি-পিস, ওয়ান-পিস, কুশন কভার, টেবিল কভার মোটামুটি সব ধরণের পণ্য তৈরি করছেন। এছাড়া সুতার কাজের শাড়ি, পাঞ্জাবি, বেডশিট ও নিজস্ব কারিগর দিয়ে কুর্তি, বেবিড্রেস তৈরি করছেন তিনি। গ্রামীণ চেক ও খাদি ড্রেস নিয়েও কাজ করছেন। তার তৈরি পণ্য বিক্রি হচ্ছে পাইকারিভাবেও।

‘দোলন চাঁপা’র পণ্য সরাসরি বিদেশে রপ্তানি হয় না। তবে দেশের বাইরে থেকে অনেকেই অর্ডার দেন। দেশ থেকে কেউ গেলে তারা নিয়ে পৌঁছে দেন। এখন পর্যন্ত নিউ ইয়র্ক, ইতালি ও সৌদি আরবে তার পণ্য গেছে। দেশের ভেতরে যাচ্ছে প্রায় ২০টি জেলায়। করোনার সময়টা খুব খারাপ গেছে। তবে এখন আবার চেষ্টা করছেন ঘুরে দাঁড়ানোর।

উদ্যোক্তা রূপা সরকারের বাবা মৃণাল কান্তি সরকার অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক, মা মমতা রানী পাল অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী। দুই ভাই বোনের মধ্যে তিনি বড়। তার জন্ম ও শৈশব কেটেছে নেত্রকোণা জেলার বারহাট্টায়। কিন্তু বেড়ে ওঠা ও পড়াশোনা ময়মনসিংহে। পড়েছেন ময়মনসিংহের মুকুল নিকেতন উচ্চবিদ্যালয়। তারপর সরকারি মুমিনুন্নিসা মহিলা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স। মাস্টার্স করেছেন আনন্দমোহন কলেজ থেকে।

সাইদ হাফিজ
উদ্যোক্তা বার্তা,খুলনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here