মেহনতি ও ছিন্নমূল মানুষদের জন্য কিছু করার তাড়না থেকেই কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের সময়ে এক মানবিক লড়াইয়ে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীর হাসান সৈকত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদ্য সাবেক সদস্য সৈকত টিএসসিতে গত ১০০ দিন ধরে রাজধানীর মেহনতি ছিন্নমূল মানুষদের দু’বেলা খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।

মার্চ মাসের ২৩ তারিখ থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার (৩০ জুন) শেষ হচ্ছে তার এই কর্মসূচি। এসময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার মানুষকে এই সেবা দিয়েছেন সৈকত।
এসময়ে তিনি পেয়েছেন মেহনতি মানুষদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা। পেয়েছেন পরিচিত অপরিচিত বহু মানুষের অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও শুভ কামনা।

এই কর্মযজ্ঞকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি তার জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধা হিসেবে উৎসর্গ করে সৈকত বলেন: মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা দেশের জন্য ঘাতকের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিতে কুণ্ঠাবোধ করেননি তারাই আমার এই কাজের অনুপ্রেরণা।
করোনা মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ও আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণার পর সবাই যখন ফিরেছে নিরাপদ নিবাসে, সৈকত তখন রাজধানীর মেহনতি ও ছিন্নমূল মানুষের কথা ভেবে থেকে যান এই শহরে।

এই ১০০ দিনে এমন কিছু অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সৈকত বলেন: যাদের খাবার দিয়েছি তাদের বেশিরভাগেরই জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল না। কতোটা বঞ্চিত জনগোষ্ঠী তারা। প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এই কয়দিন একটিমাত্র কাপড়েই এসেছে খাবার নিতে। যেটি আমাকে তীব্রভাবে ব্যথিত করেছে।
তিনি বলেন, গতকাল (২৯ জুন) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাকে ভিডিও কনফারেন্সে বলেন এই কর্মসূচি চালিয়ে যেতে। তিনি (ওবায়দুল কাদের) নিজেও সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।

মানুষের সহযোগিতা ছাড়া এই কাজ অসম্ভব ছিল জানিয়ে সৈকত বলেন: অনেক পরিচিত অপরিচিত শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যাংকার, সরকারি চাকুরিজীবী, রাজনীতিবিদ আমাকে সহযোগিতা করেছেন।
সৈকতের ১০০ দিনের কর্মসূচি শেষ হয়ে গেলেও তিনি ছোট পরিসরে এই সেবা চালিয়ে যাবেন। শহরের ভাসমান মানুষ, পথশিশু, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের তিনি দু’বেলা খাবার দিবেন বলে জানান।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা