মাদার তেরেসা শাইনিং পার্সোনালিটি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত নওগাঁর নাইটিঙ্গেল তসলিমা ফেরদৌস

0

মানবতার ফেরিওয়ালা এবং সমাজ সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য ‘মাদার তেরেসা সাইনিং পার্সোনালিটি অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ পেলেন নওগাঁর ‘বেলাশেষে সমাজ কল্যাণ সংস্থা’র প্রতিষ্ঠাতা তসলিমা ফেরদৌস।

৭১ মিডিয়া ভিশন এর ১৬তম বর্ষপূর্তিতে ‘মাদকের ভয়াল থাবা থেকে যুবসমাজকে রক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা, গুণীজনদের সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তসলিমা ফেরদৌসকে এই সম্মাননা দেয়া হয়।

২১ জুলাই (শুক্রবার) বিজয়নগর হোটেল ৭১ এর অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: নিজামুল হক নাসিম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার প্রদান করেন। সাবেক তথ্য সচিব ও বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

সমাজসেবক তসলিমা ফেরদৌসকে অষ্টম শ্রেণীতে পড়াকালীন বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। স্বামী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। পড়াশোনার প্রতি অদম্য ইচ্ছা থেকেই ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। সেসময় তিনি বাচ্চাদের পড়ানো থেকে শুরু করে সূচিশিল্পের প্রশিক্ষক হিসেবেও বেশ কিছুদিন কাজ করেন। পরবর্তীতে তিনি একটি ব্যাংকে চাকরি করেন দীর্ঘদিন।

২০০৫ সালে ‘বেলাশেষে’ নামে একটি প্রবীণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন তসলিমা। আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়েও যারা সামাজিক ভাবে অসহায় তাদের জন্য তিনি এই ‘বেলাশেষে’ গড়ে তোলেন। এছাড়াও যাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিলো না তাদের জন্য ফ্রি সেবা দেয়া হয় সেখানে। এভাবেই শুরু হয় মানবকল্যাণে নিজের মতো করে কাজ করা।

মানবকল্যাণে কাজের জন্য সমমনা ব্যক্তিদের নিয়ে তিনি একটি সংগঠন তৈরি করেন। নওগাঁর ইলশাবাড়ির এক খণ্ড জমিতে সাজানো গোছানো প্রাকৃতিক পরিবেশে ফুল পাখির অবাধ বিচরণে অসহায় প্রবীণ নারী এবং শিশুদের নিয়ে তসলিমার বসবাস।

সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠা ‘বেলাশেষে’ ২০২০ সালে সরকারে রেজিস্ট্রেশন পায়। এছাড়াও কমিটি গঠনের মাধ্যমে বর্তমানে ‘বেলাশেষে সমাজ কল্যাণ সংস্থা’টি পরিচালিত হচ্ছে। সেখানে বর্তমানে ১৫ জন বৃদ্ধ মা এবং শিশু রয়েছে।

উদ্যোক্তা তসলিমা ফেরদৌস নিজ উদ্যোগে নওগাঁ শহরে প্রথম মিউজিক্যাল ক্যাফে চালু করেন, যেখানে বর্তমানে শতাধিক খাবারের আইটেম থাকছে এবং সেখানে ৯ জন কর্মীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন তিনি যাদের অনেকেই শিক্ষার্থী। মূলত ক্যাফের আয় থেকেই ‘বেলাশেষে’ পরিচালনা করা হয়।

শেষ বয়সে যে বৃদ্ধ মায়েদের নিজ সন্তানের ঘরে আশ্রয় হয় না তাদের একটি নিরাপদ আশ্রয় স্থান এই ‘বেলাশেষে’। এছাড়া রাস্তায় পড়ে থাকা অসহায় নারী, বিধবা কিংবা ডিভোর্সি নারী যাদের সমাজে মূল্যায়ন করা হয় না তাদের জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তসলিমা ফেরদৌস। তিনি শীতবস্ত্র বিতরণ, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজেও যুক্ত রয়েছেন।

উল্লেখ্য, তসলিমা ফেরদৌস রাঁধুনী কীর্তিমতী হিতৈষী সম্মাননা, বেগম রোকেয়া সম্মাননা, কাবিল খান মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড, বাংলাদেশ মানবাধিকার নাট্য পরিষদ থেকে গুণীজন অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন।

তসলিমা ফেরদৌস বলেন, এক একটি সম্মাননা আমার এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। আমি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি, সেই স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। আমি চাই “বেলাশেষে সমাজ কল্যাণ সংস্থ্যার মাধ্যমে অসহায় মা বোনদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে। এতে সমাজের একটি অংশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা সম্ভব হবে।”

‘মাদার তেরেসা শাইনিং পার্সোনালিটি অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ তিনি তার বেলাশেষের অসহায় ‘মা’ দেরকে উৎসর্গ করেন।

সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here