বগুড়ার দত্তবাড়ি এলাকার মেয়ে মাহমুদা ইয়াসমিন। সমাজকর্ম বিষয়ে মাস্টার্স করছেন সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে। এর মধ্যেই হোমমেড খাবার তৈরির মাধ্যমে ছাত্রাবস্থায় উদ্যোক্তা হয়েছেন মাহমুদা।
অনার্স ২য় বর্ষে পড়ার সময় সংসার জীবনও শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি নিজে কিছু একটা করার তাগিদ থেকে ২০১৯ সালে ফুড এবং বেভারেজ এর উপর একটি কোর্স করেন। এরপর পেইজ চালু করেন সামাজিক পাতায়। পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রুপে খাবারের পোস্ট দিতে শুরু করেন।
হঠাৎ করেই একদিন ১০টি সবজি সিঙ্গাড়ার অর্ডার পান তিনি৷ হাতে ছিল ৪০০ টাকা। ওই টাকাকে পুঁজি করেই কাজ শুরু করেন। এখন সংসারের পাশাপাশি এক হাতেই বাজার, খাবার তৈরি এবং ডেলিভারি সবকিছুই করছেন মাহমুদা ইয়াসমিন।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2022/10/2.Midle-photodd-1.jpg)
আশপাশের লোকজনের কটু কথা উপেক্ষা করে মাহমুদা তার কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনার সময় স্বামীর টিউশন চলে গেলে বাসা ভাড়া এবং নিজেদের চলার খরচটাও মাহমুদার উপর এসে পড়ে। লকডাউনে স্বামীর সহযোগিতায় মাহমুদা তার খাবারের বিজনেসটি বড় পরিসরে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন মেলাসহ উদ্যোক্তা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেই সাথে রিন নামকরা নারী সম্মাননা পান। পাশাপাশি বিভিন্ন ট্রেনিং এর মাধ্যমে নিজেকে আরও আত্নবিশ্বাসী করে তোলেন।
তার হোম মেড খাবারের মধ্যে রয়েছে ফ্রোজেন নাস্তা আইটেম, পোলাও- বিরিয়ানি, দেশী খাবার, স্ন্যাক্স, চাইনিজ ইত্যাদি। কোনো প্রকার কেমিক্যাল ছাড়া ফ্রেশ খাবারটি তিনি কাস্টমারদের দিয়ে থাকেন। পোলাও প্যাকেজ এবং ফ্রোজেন খাবারের চাহিদা সবচেয়ে বেশি তার।
বর্তমানে চারজন কর্মী রয়েছে তার সাথে। যেহেতু হোম মেড খাবার নিয়ে কাজ করেন তাই বগুড়া শহরের বাইরে ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হয় না। মাসে বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2022/10/mid.jpg)
Sabika’s food shop নামে অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে উদ্যোক্তা মাহমুদা তার উদ্যোগ পরিচালনা করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “উদ্যোক্তা যারা হতে চান তাদের প্রথমত অনেক ধৈর্য্য এবং সহ্য শক্তি অর্জন করতে হবে। এছাড়া কোন একটি বিষয় যে বিষয় আপনার ভালো লাগে তা নিয়ে কাজ করুন। সবচেয়ে বড় কথা আপনার কাজকে ভালোবাসুন।”
তিনি বলেন: আমার উদ্যোগ ছোট। তবে আমি হালালভাবে যেটুকু উপার্জন করছি তা আমার কাছে লাখ টাকা। আমি একজন নারী হয়েও সংসারী সকল খরচ চালিয়ে যাচ্ছি। কর্ম যেমনই হোক, হালাল হলে সেখানে বরকত থাকে। সকলের উচিৎ অসৎ পথে লক্ষ টাকা উপার্জনের চেয়ে সৎ ভাবে অল্প হলেও উপার্জন করা।
সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তা বার্তা