মধ্যপ্রাচ্যের স্কোয়াশ এখন নওগাঁয়

0
উদ্যোক্তা আব্দুল লতিফ

উত্তরের জেলা নওগাঁয় প্রথমবারের মতো বানিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সবজি স্কোয়াশ। কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুল লতিফ তার এক বিঘা জমিতে বিষমুক্ত স্কোয়াশ চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। স্কোয়াশ সবজিটি অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু, স্বল্প মেয়াদি, উচ্চফলনশীল ও লাভজনক। স্বল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক এই সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

নওগাঁর কৃষি অফিসের পরামর্শ এবং সহযোগিতায় এক বিঘা জমিতে স্কোয়াশ বীজ রোপন করেন আব্দুল লতিফ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভাল হয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি স্কোয়াশ দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের হয়েছে। আর প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ১০-১২ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৫০ হাজার টাকা আরো ৫০ হাজার টাকার ফল বিক্রির অপেক্ষায় আছি। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি স্কোয়াশ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে। যদি শেষ পর্যন্ত ফলন ভালো হয়, রোগবালাই না থাকে তবে আমার ক্ষেত থেকে প্রায় ১০০ মন স্কোয়াশ পাবো। সব খরচ বাদ দিয়ে এক লাখ টাকার মত লাভ হবে বলে আশা করছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘এটি অত্যন্ত লাভজনক। বেকার ভাইয়েরা যদি স্কোয়াশ চাষ শুরু করে তাহলে উনারাও অনেক লাভবান হবেন।’

অল্প পরিশ্রম ও কম কীটনাশকের ব্যবহার করে বিষমুক্তভাবে এই সবজি চাষ করা সম্ভব। বাজারে এর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় এই সবজি চাষে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব। শীতকালীন সবজি হওয়ায় বছরের অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে এই সবজি চাষে ফলন অনেক বেশি হয়। লতিফের স্কোয়াশ চাষ দেখে স্থানীয়রা জানান, ‘দেশের ভিতরে যদি সব জায়গায় স্কোয়াশ সবজিটি পৌঁছে দেওয়া যেত তাহলে আমরা আরো বেশি লাভবান হতাম৷’

রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মালচিং পদ্ধতিতে নওগাঁ জেলায় প্রথম স্কোয়াশ চাষ হয়েছে এবার। কৃষি কর্মকর্তা আরেফিন তুহিন বলেন, ‘মালচিং পদ্ধতি যেমন নতুন, তেমনি স্কোয়াশ সবজি চাষও নতুন। আমরা অফিস থেকে বীজ, সার সরবরাহ করেছি। কৃষি অফিস থেকে আগ্রহী কৃষকদের সব ধরনের সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক সামছুল ওয়াদুদ বলেন, ‘নওগাঁ জেলায় এই প্রথম পরীক্ষামূলক বিদেশি সবজি স্কোয়াশের চাষ হচ্ছে। আমি প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেছি। খুবই ভালো হয়েছে। সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আগামীতে এ সবজির চাষ ও চাহিদা বাড়বে বলে আমি আশাবাদী।’ স্কোয়াশ চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে নওগাঁর কৃষি অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তাবার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here