বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বলেছেন, বাংলাদেশের সম্ভাবনা সমুহকে কাজে লাগিয়ে সারা দুনিয়ায় দেশের অবস্থান সুসংহত করতে হবে। অর্থনীতির একটি শক্ত ভিত রচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর সকল দেশের বিনিয়োগ টার্গেট এখন বাংলাদেশ। কারণ, এদেশে কৃষি, শিল্প, পর্যটনসহ বিভিন্ন সেক্টরে অযুত সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে সারাদেশে বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক জোন ও হাইটেক পার্ক গড়ে তোলার প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সরকার উৎপাদনমুখী শিল্পব্যবস্থা গড়ে তুলে মানুষের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন করতে চায়।

বিডা চেয়ারম্যান বলেন, কোডিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় আমরা ডিজিটাল প্লাটফর্মকে ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছি। অনলাইন সিস্টেমকে পুঁজি করে সরকার ডি-সেন্ট্রালাইজেশনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। ফলে ঢাকামুখী চাপ কমবে,ব্যবসায়ী বিনিয়োগকারীরা ও প্রবাসীরা স্বল্প সময়ে এক জায়গা থেকে অনেক কাজ করতে পারবে। ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরীতে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক, উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিডা সবসময় জনগণের পাশে থাকবে।
লোকমান হোসেন বলেন, বিডা’র ওয়ান স্টপ সার্ভিস সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। অনলাইন ওয়ান স্টপ সার্ভিস পোর্টালের মাধ্যমে সকল কাজ খুব সহজেই বিনিয়োগকারীরা করতে পারবেন। তিনি বলেন, শুধু ইউরোপ আমেরিকা কেন আমাদেরকে এখন জাপান, কোরিয়া, আফ্রিকা ইত্যাদি দেশে যেতে হবে।
বুধবার (৭ জুন) নগরীর এক অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় কর্তৃক আয়োজিত দিনব্যাপী বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর অনলাইন ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সিস্টেমে প্রদত্ত সেবাসমূহ অবহিতকরণ সংক্রান্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিডা’র নির্বাহী সদস্য (অতিরিক্ত সচিব) ড.খন্দকার আজিজুল ইসলাম, সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) জাকারিয়া, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট আফজাল রশীদ চৌধুরী, সিলেট উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি স্বর্ণলতা রায় এবং আইএলও প্রতিনিধি বোরহান উদ্দিন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম বলেন, সিলেট বিনিয়োগের জন্য অপার এক সম্ভাবনার জায়গা। এখানকার এনআরবিরা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। ট্যুরিজমের পাশাপাশি মেম্যানুফেকচারিংয়ে প্রবাসীদের বিনিয়োগ করতে তিনি অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, ডিজিটাল প্লাটফর্মের সুফল আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের কাজ করছি। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্ননেন্স, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সোসাইটি গড়ে তোলতে কাংখিত বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
কর্মশালায় অনলাইন ওয়ান স্টপ সার্ভিস পোর্টালের সার্বিক কার্যক্রম উপস্থাপন করেন বিডা’র মহাপরিচালক জীবন কৃষ্ণ সাহা রায়।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিডা’র সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক জুলিয়া যেসমিন মিলি। কর্মশালার মুক্ত আলোচনা সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত সচিব ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম।
কর্মশালায় সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, প্রকৌশলী, আইনজীবি, প্রবাসীবাংলাদেশী, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন পেশার ব্যক্তি ও সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাসহ স্টেক হোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।
মুক্ত আলোচনাকালে বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক আলিমুল এহছান চৌধুরী, ব্যবসায়ী ইমরান আহমেদ চৌধুরী, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি মুহিত চৌধুরী প্রমুখ। সভায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস কার্যক্রমের হালনাগাদ অবস্থা তুলে ধরা হয়।

সভায় জানানো হয়, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সকল ধরণের সেবা অনলাইনে প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গত ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ তারিখ বিজনেস অটোমেশন লিঃ এর সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিডা বিগত ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ইং তারিখ অনলাইন ভিত্তিক ওয়ান স্টপ সার্ভিস পোর্টালের কার্যক্রম চালু করে।
আলোচ্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস পোর্টালের মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থার ১৫০টির ও বেশি সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনলাইন ওয়ান স্টপ সার্ভিস পোর্টালের মাধ্যমে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সর্বমোট ৪৩টি সংস্থার সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে বিডা।
ওয়ান স্টপ সার্ভিস পোর্টালের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে বিনিয়োগকারীদের বর্তমানে বিডাসহ ২৩টি সংস্থার ৬৭টি সেবা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা হচ্ছে।
ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা