প্রথমে খিলগাঁও তারপর গ্রীনরোড, পান্থপথ, মহাখালী। এবার মিরপুরের পালা। অসংখ্য ক্রেতা যাদের ভক্ত বললেও ভুল যায় না, তাদের অনুরোধেই এবার মিরপুর-২, ৬০ ফিট মেইন রোডের পাশেই উদ্বোধন করলেন ৫ম শো-রুম।

হ্যাঁ, কথা হচ্ছে বানী’স ক্রিয়েশনের স্বত্বাধিকারী তাহমিনা আহমেদ বানী এবং তার সৃষ্টি নিয়ে। বাণী মূলত বিভিন্ন সাইজের, স্বাদের, বিভিন্ন কালারের কেক তৈরি করে থাকেন এবং তিনি কেক তৈরির জন্য বিখ্যাত এবং অনেকের কাছেই খুব পরিচিত।

মিরপুরের নতুন শো-রুম উদ্বোধন সম্পর্কে বাণী উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, “আসলে মিরপুর শোরুম দেবো প্রথমে এমন ভাবনা ছিলনা কিন্তু আমার কাস্টমারদের অনুরোধে আমি দিতে এক রকম বাধ্য হয়েছি। আমার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী ক্রেতা আছেন এই মিরপুর এলাকায় যারা আত্মীয়র মত হয়ে গেছেন। তাদের অনুরোধ ফেলতে পারিনি তাই এখানে একটি নতুন শো-রুম নিলাম। করোনার কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে বড় কোন অনুষ্ঠান আমি করতে পারিনি কিন্তু ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলাম যেটা দেখে আমার মিরপুর এলাকার অনেক ক্রেতাই এসেছেন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে।

প্রতি শো-রুম উদ্বোধনেই আমি অস্বাভাবিক বড় সাইজের একটি বার্গার কেটে উদযাপন করি, গতবারেরটা ছিলো ৪৭.৫ কেজি কিন্তু এবার তেমনটা পারিনি প্যানডেমিক সিচুয়েশনে সবকিছুই ক্ষুদ্র পরিসরে করতে হলো তবে আশা রাখছি অচিরেই আমি আমার ক্রেতাদের সেই ইচ্ছে পূরণ করে দিব”

বানী এপ্লাইড আর্ট হোম ইকোনোমিক কলেজে পড়াশোনা করেন। পড়াশোনার চাইতে সৃজনশীল কাজে তার মনোযোগ বেশি ছিল একদম ছোটকাল থেকেই। বিয়ের পর ১৯৯৬ সালে কোল জুড়ে আসে মেয়ে। তার প্রথম জন্মদিনে একটি কেক কিনে নিয়ে আসলেন এবং সেই কেক দেখেই বানী কেক তৈরীতে উদ্বুদ্ধ হন। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বানীর। কাস্টমাইজড কেকের ভুবনে সাবলীল পদচারনা শুরু হলো। প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি করে অর্ডার আসতে শুরু করলো বানী’স ক্রিয়েশনে।

উৎসবের কেকের অর্ডার আসতে থাকে সাত শত। কাস্টমার হুহু করে বাড়তে থাকে। কয়েক বছরের মধ্যে ৬০ হাজারেরও বেশি সদস্য ফেসবুক পেইজে। নিয়মিত ফেসবুক, ডিজিটাল মিডিয়ায় কাস্টমার কোয়ারিজ এবং অর্ডারের সবকিছু দেখতে শুরু করলেন বানী’র পরিবারের পক্ষ থেকে উদ্যোক্তা কন্যা সেমন্তী। মায়ের পাশে শক্ত হাতে দাঁড়িয়েছে প্রজন্ম। কেক তৈরির উপাদান গুলোর পরিমাণ দেখিয়ে দিচ্ছেন

২০১৭ সালে খিলগাঁও তালতলা তে প্রথম আউটলেট দিলেন বানী। ২০১৮ সালে গ্রীন রোডে দ্বিতীয় শাখা। ১৬ জন কর্মীর কর্মসংস্থান করেছেন বানী আজ। এ পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি ডিজাইনের কেক ডেলিভারি দিয়েছেন বানী। আজ ক্লাইন্ট লিস্টে হাজার হাজার ক্লাইন্ট। বানী’র কেক প্রথম আলো, ডেইলী স্টার, নিটল টাটা মোটরস, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশ হেড কোয়ার্টারের বড় বড় সকল উৎসবে আজ বানী’র ক্লাইন্ট লিস্টে শখানেক কর্পোরেট এবং সেলিব্রিটির অর্ডার।

ক্লাস নিচ্ছেন উদ্যোক্তা তাহমিনা আহমেদ বানী প্রতিদিন ১৪ ঘণ্টা থেকে ১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম করেন বানী নিজেই। তার স্বপ্নের ভুবন বানী’স ক্রিয়েশন নিয়ে। আজ যে কোন থিম কেকের অর্ডার কিংবা যে কোন কাস্টমাইজড কেক যত বড়ই হোক না কেনো, তা তৈরি করে দিচ্ছেন নিমেষেই বানী।

উদ্যোক্তা কেকের সাথে যে কোন আন্তর্জাতিক স্বাদের ডেজার্ট এর অর্ডার তা যত বড় ও সংখ্যায় হোক না কেন হাসি মুখে অর্ডারগুলো গ্রহণ এবং ডেলিভারীর কাজ করছেন স্বাস্থসম্মত ভাবে, নিপুণতার সাথে,পরিপূর্ণ পরিবেশনায়।

বিপ্লব আহসান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here