ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হল রাজশাহীতে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত জাতীয় পিঠা উৎসব ১৪২৬।

বাঙ্গালীদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ প্রথমবারের মতো চার দিনব্যাপী জাতীয় পিঠা উৎসব ১৪২৬ আয়োজন করেছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের গ্রিন প্লাজায়। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বিকেল পাঁচটায় জাতীয় পিঠা উৎসব উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ এমপি ও বিশিষ্ট নারী নেত্রী শাহীন আকতার রেনী। উদ্বোধন করেছেন -এবং সভাপতিত্ব করেছেন জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা নাট্যব্যক্তিত্ব জনাব ম. হামিদ।

উক্ত অনুষ্ঠানে আহ্বায়ক এর বক্তব্য প্রদান করেন -জনাব মলয় ভৌমিক আহ্বায়ক-জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ-রাজশাহী বিভাগ। স্বাগত বক্তব্য জনাব খন্দকার শাহ আলম, সধারন সম্পাদক, জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ-রাজশাহী বিভাগ।
সঞ্চালক, কামার উল্লাহ সরকার, সদস্য সচিব জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ-রাজশাহী বিভাগ।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি বিকাল পাঁচটায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আরম্ভ হয়েছিল পিঠা উৎসব।জমজমাট ভাবে চলে এই পিঠা উৎসব সাথে চারদিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবে মোট ২৬ টি স্টল রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলা থেকে তাদের ঐতিহ্যবাহী নানান রকম ঝাল-মিষ্টি বা মিশ্রিত সুঘ্রাণ সম্পন্ন লোভনীয় পিঠা নিয়ে এসেছিল।

উৎসবের প্রবেশ মুখেই নানা পিঠার গন্ধে জিভে জল আসার জোগাড়। স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে দেখা গেল বাঙালি ঐতিহ্যের নানা রকম পিঠা। পুলি, ভাপা চিতই, পাটিসাপটা, মাংস পিঠা, নকশা, পাকন, শামুক, ডিম, হৃদয় হরণ প্রভৃতি পিঠার সমাহার। উৎসবে ২৬ টি স্টলের বিভিন্ন পিঠার সমাহার যেমন ঠিক তেমনি স্টলের নামেও দেখা গেল বৈচিত্র্য। যেমন পিঁপড়া পিঠাঘর, নারী কর্মসংস্থান সংস্থা পিঠা ঘর, মহাস্থানগড় পিঠাঘর, রানী পিঠাঘর ইত্যাদি।

চার দিনব্যাপী উৎসবে নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পিঠা প্রেমীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। নগরীর ব্যস্ততায় একটুখানি বাঙালিত্বের স্বাদ পেতে ছুটে এসেছিলেন পিঠা পাগল বাঙালি। অনেক ক্রেতা সমাগম যেন বাঙালির এক মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল। দর্শনার্থী ক্রেতা বিক্রেতা সকলেই মহা আনন্দিত ছিল প্রথমবারের মত রাজশাহীতে আয়োজিত জাতীয় পিঠা উৎসব এ আসতে পেরে।

মেলার শেষ দিন রাত্রি ৯:৩০ মিনিটে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয় ও ৩ টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী উদ্যোক্তাদের সম্মান সুচক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ বিতরন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আহবায়ক জনাব মলয় ভৌমিক, জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ রাজশাহী বিভাগ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারন সম্পাদক দিলীপ ঘোষ, নিমূল কমিটির সহ-সাধারন সম্পাদক উপধাক্ষ্য কামারুজ্জামান, জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন কমিটির রাজশাহীর সদস্য সচিব কামারুল্লাহ সরকার কামাল সঞ্চালনায় ছিলেন মনিরুজ্জামান উজ্জল।

তিনটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। আটটি জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ ‘আড্ডায় কফি’, নওগাঁ তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন- তসলিমা ফেরদৌস। নান্দনিক উপস্থাপনায় ‘চিরায়ত’, রাজশাহী তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন গুলশান আরা ও সার্বিক ভাবে সেরা ‘রানী পিঠাঘর’, রাজশাহীর পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন রানী খাতুন। এছাড়াও মেলায় অংশগ্রহনকারী সকল স্টল কে সনদ বিতরন করা হয়। সাংস্কৃতিক সন্ধায় গান পরিবেশন করেন নাটোর জেলা থেকে আগত কার্তিক বাউল, চল বদলে যায় নিত্য গোষ্ঠী, রাজশাহী, সঙ্গীত বিভাগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

উদ্যোক্তাদের স্টলে গিয়ে শেষ সময় জানা গেল তাদের বিক্রি খুব ভালো হয়েছে। সকলে আনন্দিত এবং এধরনের পিঠা উৎসব যেন প্রতিবছরই আয়োজন করা হয়। এ ধরনের সুযোগ দেবার জন্য তারা কর্তৃপক্ষকে অনেক ধন্যবাদ জানিয়েছেন। রাজশাহী বাসীরাও চায় প্রতিবছরই পিঠা উৎসব হোক এবং এর মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হোক নতুন নতুন উদ্যোক্তা।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here