আজ থেকে কয়েক বছর আগেও আমরা ভাবতাম পাট দিয়ে বড়জোর একটা বস্তা বা বাজারের ব্যাগ ছাড়া আর কিইবা হতে পারে? কিন্তু বর্তমানে এদেশের মানুষের পাট বা পাটজাত পণ্যের প্রতি জন্মেছে এক প্রবল ভালোলাগা, ভালোবাসা। কথা হল বাংলাদেশের সোনালী আঁশ পাট ও পাটজাত পণ্য নিয়ে কাজ করেন এমন এক নারী উদ্যোক্তার সাথে।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) প্যাভিলিয়নের “ক্রিয়েটিভ কানেকশনস” এর কর্ণধার মাশরেকা বিনতে মোশাররফ।
১০ বছর আগেও পাট নিয়ে কাজ করার কথা তেমন কেউ ভাবতেন না। সেই সময় পাট নিয়ে কাজ করে দুঃসাহসিকতার পরিচয় দেন তিনি। ঢাকা সিটি কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে ট্রেনিং নেন জার্মানিতে।
২০০৪ সাল। ১ লক্ষ টাকা আর ২ জন কর্মী নিয়ে শুরু করে ঘরেই কাজ করলেন এক বছর। বাড়তে থাকে পণ্যের চাহিদা। প্রতিষ্ঠানটি বড় পরিসরে নিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে দেন একটি ফ্যাক্টরি। ২০ থেকে ২৫ জন কর্মী কাজ করছে এখানে। বাসায় বসেও কাজ করতে পারেন এমন প্রায় ১০০ জন মহিলার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন উদ্যোক্তা মাশরেকা।
উদ্যোক্তার ফ্যাক্টরিতে আজ উৎপাদন হচ্ছে শপিং ব্যাগ, স্কুল ব্যাগ, বাইকারস ব্যাগ, ল্যাপটপ ব্যাগ, মানিব্যাগ, পাটের তৈরি ল্যাম্প, টেবিল ম্যাট, রানার, জুট ফাইল, অলংকারসহ বিভিন্ন হোম ডেকোর পণ্য, পাটের তৈরি কুশন কাভার, জায়নামায, টুপি, শাড়ি,পাঞ্জাবী, ওড়না, দরজা ও জানালার বাহারি রঙের পর্দাসহ নানান পণ্য।
বাংলার সোনালী সম্পদ পাট এবং পাটজাত পণ্যকে নতুন করে নিয়ে যান দেশ থেকে বিদেশে। ঐতিহ্যবাহী ও পরিবেশ বান্ধব পাটপণ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে ইউরোপসহ কয়েকটি দেশে পাটজাত পণ্য রপ্তানি শুরু করেন মাশরেকা। অংশগ্রহণ করেন দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন মেলায়। ইন্ডিয়াতে এক্সিবিশনে অংশ নিয়ে ব্যাপক সাড়া পান এবং বেশ কিছু অর্ডার নিয়ে দেশে ফেরেন মাশরেকা।
ইউবি প্রেসের সাথে কথোপকথনে মাশরেকা জানান, জেডিপিসি’র আওতায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ করে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছেন। তার ভিন্ন আঙ্গিকের পণ্যগুলো আকর্ষিত করছে ক্রেতাদের। ভবিষ্যৎে দেশের ঐতিহ্য সোনালী আঁশ পাট ও পাটজাত পণ্যকে সারা বিশ্বে তুলে ধরতে চান উদ্যোক্তা মাশরেকা।
শারমীন আয়াত ও শুভ হাসান