নিজ এলাকা বালানগরে এক বিঘা জমিতে গাঁদা ফুল চাষের পর সফলতা পাওয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে গোলাপ, রজনীগন্ধা ও কামিনী চাষ শুরু করেন রাবেয়া খাতুন। এতে সৃষ্টি হচ্ছে অনেক নারীর কর্মসংস্থান। এই উদ্যোগে গর্বিত গ্রামবাসী।
কোন স্পৃহা আপনাকে স্কুল শিক্ষিকার পাশাপাশি একজন ফুলচাষী তৈরি করলো এমন প্রশ্নের জবাবে রাবেয়া খাতুন উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন: ‘ছোটবেলাই স্বপ্ন দেখতাম অসহায় নারীদের পাশে দাঁড়াবো আমি। কিন্তু যখন এই স্বপ্ন দেখতাম তখন আমার অর্থ ছিল না। তারপর পড়াশোনা শেষ করে যখন শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত হলাম তার কিছু দিন পর বিবাহিত জীবনে পদার্পণ ও বেশ কিছু কারণে আর এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারিনি। বর্তমানে খড়খড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছি আমি। কিছুদিন আগে এক ভাতিজা ফুল চাষের আগ্রহ প্রকাশ করলেও বিভিন্ন সমস্যার কারনে শুরু করতে পারছিলোনা। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম নিজেই শুরু করবো।

চারা সংগ্রহের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘‘চারাগুলো যশোর থেকে সংগ্রহ করে থাকি। শুরুতে গাঁদা ফুলের চারা সংগ্রহ করেছিলাম। এর ফলাফল ভালো হওয়ায় গোলাপ, কামিনী, রজনীগন্ধা ও রোপণ করেছি। সেখানেও ভালো ফল পাচ্ছি।’’
২০২১ সালের জানুয়ারিতে ২০ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে যাত্রা শুরু হয় রাবেয়া খাতুনের। রাজশাহীর ফুল বিক্রেতারা যদি রাবেয়া খাতুনের মতো নতুন ফুল চাষীদের পাশে দাঁড়াই তাহলে বাজার তৈরিতে কোন দুশ্চিন্তা পোহাতে হবেনা বলে জানান এই উদ্যোক্তা।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘আমার পাশাপাশি আমাদের এলাকার আরো নারী যাতে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করে স্বাবলম্বী হয় এবং আরো দশজনকে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করে এটাই আমার চাওয়া। আমার শুরু থেকেই স্বপ্ন অসহায় নারীদের স্বাবলম্বী করবো। তাই আমার এ উদ্যোগকে আরো বড় পরিসরে রূপ দিতে চাই, যাতে আরো অনেক নারী এখানে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।’

ইতোমধ্যে তিনি তার রোপণকৃত ফুলগুলো জমি থেকে সংগ্রহ করে বিক্রি করেছেন এবং বেশ ভালো সাড়াও পাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘রাজশাহীর ফুল বাগান’ নামে একটা পেজ চালু করেছেন। যেখান থেকেও অল্প সময়ে বেশ সাড়া মিলছে রাবেয়া খাতুনের। ২০ হাজার টাকা পুঁজি আজ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।

তরুণদের উদ্দেশ্যে উদ্যোক্তা বলেন, ‘মনের ইচ্ছাই সবচেয়ে বড় মূলধন। ইচ্ছা স্থির রেখে পরিশ্রম করে গেলে সফলতা আসবেই। নিজে স্বাবলম্বী হয়ে আরো অনেককে স্বাবলম্বী করতে পারলে আমাদের দেশ অতি শীঘ্রই উন্নত দেশে পরিণত হবে।’
তামান্না ইমাম
উদ্যোক্তা বার্তা, রাজশাহী