প্রতিমাসে গড়ে আয় করছেন আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা

0

মোঃ আব্দুর রহিম রাজশাহী জেলাধীন দুর্গাপুর উপজেলার ঝালুকা গ্রামের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। অনেক অভাবের মধ্য দিয়ে ২০০৬ সালে এসএসসি পাস করেন তিনি। জীবনে অভাব কি তা তিনি খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করেছিলেন। পরিবারে স্বচ্ছলতা ছিল না বললেই চলে। অভাব-অনটন এর মধ্যেই দিন কাটত পরিবারের। এসএসসি পাশের পরই দরিদ্রতার কারণে পরবর্তী পর্যায়ে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তাই নয় এক সময় সংসারের দায়িত্বও নিতে হয় তাকে।

এক কাছের বন্ধু মিলন’র পরামর্শ নিয়ে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর অফিসে যোগাযোগ করেন। তাদের পরামর্শে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প শুরু করেন তিনি। শুধু তাই নয় এলাকায় মাছ চাষের সম্ভাবনা বেশী থাকায় তিনি ২০১৪ সালের মে মাসে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর রাজশাহী জেলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে মাছ চাষ বিষয়ে এক মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি। প্রশিক্ষণ শেষে ২২০০০ টাকা নিজের জমানো এবং ৫০০০০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে পুকুর লিজ নিয়ে মাস চাষ শুরু করেন তিনি।

কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রথম বছরেই মাছ চাষে তিনি যথেষ্ট পরিমাণ লাভ করেন। এতে করে মাছ চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় অনেক। জীবনে নেমে আসে স্বচ্ছলতা। সুখের মুখ দেখেন তিনি ও তার পরিবার। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তার।

দিন গড়াতে থাকে পর্যায়ক্রমে তার পুকুরের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। বর্তমানে তিনি সাতটি পুকুর লিজ নিয়ে মোট ৭০ বিঘাই মাছের চাষ করছেন তিনি।স্থানীয় বাজার সহ ঢাকাই মাছ বিক্রি করেন তিনি। মাছ চাষের পাশাপাশি ২০১৬ সালে তিনি ১০০০ টি লেয়ার মুরগি নিয়ে ছোট পরিসরে মুরগি পালন শুরু করেন। এখানে সফলতার দেখা পান তিনি।

পর্যায়ক্রমে মুরগি পালনের প্রকল্পটিও তার সম্প্রসারণ করার সুযোগ হয়। নিজের অক্লান্ত পরিশ্রম আর প্রচেষ্টা দিয়ে বর্তমানে তার ৫ টি মুরগির সেডে ৭০০০ টি লেয়ার মুরগি পালন করছেন তিনি। তার প্রকল্পে বর্তমানে ৯০% মুরগি ডিম উৎপাদন পর্যায়ে রয়েছে। মাছ, মুরগি ও গরু পালনের পাশাপাশি কলা চাষ,বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ ও খেজুর গাছের প্রকল্প গ্রহণ করেছেন তিনি। সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করার জন্য বেশ কয়েকজন মজুরিভিত্তিক জনবল নিয়োগ করে রেখেছেন তিনি। বর্তমানে তাঁর মূলধন ৭৮ লক্ষ টাকা ও বার্ষিক মোট মুনাফা প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা। বর্তমানে তার প্রকল্প অনুসরণ করে এলাকার অনেকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রকল্প গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।তার অনুপ্রেরণা এবং পরামর্শে স্থানীয় অনেকে আজ আত্মকর্মী হতে পেরেছে।

শুধু তাই নয় কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থানে অবদান রাখার পাশাপাশি তিনি সামাজিক নানা ধরনের কাজের সাথে জড়িত। বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও জনসচেতনতা মূলক কাজ করছেন তিনি।
কর্মসংস্থান সৃজন ও আত্মকর্মসংস্থানে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২১ যুব পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। আত্মপ্রত্যয়ে বলীয়ান এবং অদম্য মনোবল নিয়ে এগিয়ে চলেছেন উদ্যোক্তা । কঠোর পরিশ্রম আর নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা। সফলতার সাথে পরিচালনা করছেন স্বীয় ব্যবসা।

মারজিয়া মৌ,
উদ্যোক্তা বার্তা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here