উদ্যোক্তা কি জন্মগতভাবেই হওয়া যায়? প্রশ্নটা জটিল। কিন্তু উত্তর খুব সহজ। উদ্যোক্তা তিনিই হন যার একটা স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গি থাকে এবং থাকে কাজটি করে ফেলার এক ইস্পাত-দৃঢ় মানসিকতা। এবং কাজটি যতই কঠিন হোক না কেন তা তিনি করেই ছাড়েন, নিজেকে প্রমাণ করেন। নিজস্ব একটি রেস্টুরেন্ট এবং ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ইতালিয়ান ফ্লেভারের বিভিন্ন পিৎজা তৈরি করে ভোজনপ্রিয়দের সামনে উপস্থাপন করছেন উদ্যোক্তা জাকির আহমেদ। রেস্টুরেন্টের নাম দিয়েছেন Pizza Pro (পিৎজা প্রো)।
উদ্যোক্তার পিৎজা প্রো’র সোশ্যাল মিডিয়া পেজ এবং রেস্টুরেন্টের মাধ্যমে বারবিকিউ চিকেন, স্পাইসি চিকেন, চিকেন টুইস্ট, ক্রেজি সসেজ, হার্ব বিফ, বিফ টুইস্ট পেপারনি, অল মিট ভ্যাকেঞ্জা, ভেজিটেবল লাভার, মার্গারিটা পিজ্জা। এসব ইতালিয়ান ফ্লেভার নিয়ে সবার সামনে আকর্ষণীয়ভাবে প্রদর্শন করছেন শো রুমে। এখন আর ইতালিয়ান খাবারের স্বাদ নিতে বিদেশে যেতে হবে না।
উদ্যোক্তা জাকির আহমেদ জানান, চিরাচরিত পেশায় আর আগের মত সুবিধা নেই, তাই উদ্যোক্তা হবার দিকে ঝুঁকছে মানুষ । ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড অনেক বড় নয়, তবে উদ্যোক্তা হবার জন্য স্বপ্ন দেখেন অনেকে, কেউ হয়তো নিরাশ হয়ে পড়েন। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মেধা যতটুকুই থাকুক না কেন কঠিন পরিশ্রম মানুষকে উচ্চতার দিকে নিয়ে যায়।
উদ্যোক্তা জাকির বলেন, সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স পাস করেছি। এছাড়াও পিৎজার উপর বিশেষ কোর্স করেছি সিঙ্গাপুরে। সেখান থেকেই মূলত আমার উৎসাহটি আসে। দেশ এবং দেশের বাহিরে বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করেছি। স্বল্প মূল্য দিয়ে ভাল খাবার যেন মানুষ পায় এই উদ্দেশ্যে নিজের দক্ষতা এবং স্বপ্নের বাস্তবায়ন করার জন্য রেস্টুরেন্ট করেছি।
উদ্যোক্তা বলেন, শুরুটা ২০২০ সালে করলেও চিন্তা ছিলো আরো তিন বছর পূর্বে। তারপরও নিজেকে আত্মনির্ভরশীল করে চারজন পার্টনার হিসাবে পাশে নিয়ে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে আমরা ব্যবসা শুরু করি। একটি পেজ ওপেন করি এবং পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। প্রধানত তিন ধরনের ফুড নিয়ে কাজ করছি- পিৎজা, পাস্তা ও বার্গার। প্রথম থেকে চারজন কর্মী নিয়োগ করি। চারজনই খুব ভালো কাজ করে। রেস্টুরেন্ট মিরপুর ৬০ ফিট রোডে। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আরো বিভিন্ন জায়গায় এর শাখা খোলার। খাবারের যতরকম ফ্লেভার আছে তার সবগুলো ফ্লেভার এনে মানুষের মন জয় করতে চাই।
ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, সমস্যা তো সব ব্যবসাতেই আছে। তবে যেহেতু করোনা পরিস্থিতির মাঝে ব্যবসা শুরু করি, মার্চের ১৭ তারিখ থেকে অনেকটা সময় বন্ধ রাখতে হয়। এরপর ফেসবুক পেজ ওপেন করে আবার ব্যবসা শুরু করতে হয়। তারপর ধীরে ধীরে আল্লাহর রহমতে বেশ এগিয়ে এসেছি।
উদ্যোক্তা জাকির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, ঢাকা এবং প্রতিটি শহরে শাখা করার ইচ্ছা আছে। তিনি চান প্রত্যেকটি মানুষই পিৎজা প্রো সম্পর্কে জানুক।
মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা ঢাকা