পিঠে বাংলার নিজস্ব আদিম আভিজাত্যপূর্ণ খাদ্যদ্রব্য। এটি চালের গুঁড়ো, আটা, ময়দা, অথবা অন্য কোনও শস্যজাত গুঁড়ো দিয়ে তৈরি করা হয়। অঞ্চলভেদে পিঠের ভিন্ন ভিন্ন বৈচিত্র্য দেখা যায়। গ্রামাঞ্চলে সাধারণত নতুন ধান তোলার পর থেকেই পিঠা তৈরির আয়োজন শুরু হয়। শীতকাল ও পৌষ পার্বণের সময় বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে পিঠা তৈরি করা হয়। আর আমাদের দেশের আনাচে-কানাচে সব সময় হাজারো মেলা বসে। উৎসব প্রিয় বাঙালির অস্তিত্বে মিশে আছে হাজার বছরের এসব ঐতিহ্য, সংস্কৃতি। আর এসব সংস্কৃতির মাঝে উল্লেখযোগ্য একটি পিঠা উৎসব।

তার ধারাবাহিকতায় আজ ৩য় দিনে জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ‘জাতীয় পিঠা উৎসব ১৪২৬ ‘ উদযাপন করছে রাজশাহী নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠা প্রদর্শনী ও বিক্রয়ের মহোৎসব ‘জাতীয় পিঠা উৎসব-১৪২৬’ এর সম্পূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলো সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সার্বিক সহযোগিতায় ছিলো রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন।

২৬টি স্টলে রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলার স্থানীয় উদ্যোক্তারা প্রায় দেড়শো রকমের পিঠা পরিবেশন করেছেন পিঠার মহোৎসবে। দূরদূরান্ত থেকে পিঠা প্রেমীরা এসেছে মেলায়। হারানো পিঠা গুলো দেখে তারা খুব খুশি। ছোট বেলার স্মৃতি হাতরিয়ে সেই পিঠা গুলোর স্বাদ নিতে এসেছেন তারা। মায়ের হাতের সেই পিঠা দেখেছেন, খেয়েছেন এবং সেই সাথে মিলেছে আরও অনেক অনেক নতুন পিঠা। তাদের সবার আবেদন এই ধরনের পিঠা উৎসব যেন প্রতিনিয়ত আয়োজন করা হয়।

এক দর্শনার্থী বলেন, ফাস্টফুডের এই যুগে নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার ঐতিহ্য পিঠাকে ধরে রাখতে এই ধরনের আয়োজন অত্যাবশ্যক। তিনি আরও বলেন, তরুণ সমাজকে নেশার হাত থেকে দূরে রাখতে এই ধরনের ভালো আয়োজন গুলো অনেক ভূমিকা রাখে।

ঢেঁকি ছাঁটা চালের গুঁড়োয় তৈরী এসব পিঠের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো মুখপাকরা, লবঙ্গলতিকা, মালপো, পাটিসাপটা, বকুলপিঠা, মাছপিঠা, কুমিল্লা পিঠা, বিবিখানা,গাজরের পুডিং নকশীপিঠা, মালাই রোল পিঠা, সিদ্ধদুধ কুশলি, ঝালপুলি পিঠা, নানা ধরনের ভিজানো পিঠা, গোলাপ পিঠা, বেলি পিঠা, পলাশ পিঠা, হাসিখুশি পিঠা,ঝাল পাকন, বর্ণপিঠা, শাপলা পিঠা, কুসলি পিঠা, কাটলেট, ডাকনা পিঠা, ফুল পিঠা, চিতই পিঠা, বউ সোহাগী পিঠা, জামাই পিঠা, হৃদয়হরণ পিঠা, তেলের পিঠাসহ প্রায় শতাধিক পিঠা।

ক্রেতা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকছে এই মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। উৎসব মঞ্চে বিকেল ৪টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাটক, নৃত্য সংগীত, আবৃত্তিসহ লোকজ পরিবেশনা থাকবে প্রতিদিন যা বাড়তি নজর কারবে আগত দর্শনার্থীদের।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here