রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের মৃত ইমরান আলী মন্ডল এবং মৃত নছেবা বেগম দম্পতির পুত্র মোঃ মুরাদুল ইসলাম মুরাদ। শৈশব থেকে কৈশোর পুরো সময়টায় কেটেছে জন্মস্থান মহব্বতপুরে। মাধ্যমিক পাশ করেছেন মোহনপুর সরকারি হাইস্কুল ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ থেকে।
এরপর ভাবলেন আর কারো উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকবেন না, আত্মনির্ভরশীল হবেন।কিন্তু কি করা যায়? নানা চিন্তাভাবনা শেষে পরিবারের কৃষি উদ্যোগে নিজেকে নিয়োজিত করলেন। হয়ে উঠলেন কৃষি উদ্যোক্তা। মিষ্টি ও সুস্বাদু পানের জন্য খ্যাত রাজশাহীর মোহনপুর অঞ্চল। মুরাদুল ইসলামের পরিবার ও অনেক আগে থেকে পান চাষের সাথে যুক্ত ছিল। পরবর্তীতে তিনিও হয়ে উঠলেন পান চাষী।
শুরুতে পরিবারের উদ্যোগে যোগ দিলেও খুব অল্প সময়ে নিজেই একটি পান বরজ গড়তে তুলেন। শ্রম ও ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আরো বেশ কয়েকটি পান বরজ গড়ে তুলেন তিনি। বর্তমানে তার ৩০ পুন পান বরজ রয়েছে। যেখানে বরজ বাঁধা, চাল বাঁধা, মাটি নিঢ়ানি, বরজ ছাওয়া, সেচদেয়াসহ বিভিন্ন কাজে প্রতিনয়ত কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক স্থানীয়দের। এছাড়াও বরজ থেকে পান ভাঙা, গোছানো এবং বিক্রির জন্য রয়েছে দুইজন স্থায়ী কর্মী।
পানচাষের পাশাপাশি মুরাদুল ইসলাম মাছ চাষ এবং অন্যান্য কৃষি পণ্য উৎপাদন করে থাকেন। মুরাদুল ইসলামের বড় ছেলে মোঃ মুন্জুরুল ইসলাম মুন চাকুরি সুবাদে পরিবারের বাহিরে থাকলেও মানষিকভাবে বাবাকে সব সময় সাহস যোগান। ছোট ছেলে মোঃ মাহমুদুল ইসলাম শুভ পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষিভিত্তিক সকল কাজে বাবার সঙ্গে সহায়তা করেন। আত্মনির্ভরশীল হয়ে শুধু নিজের পরিবারকে সচ্ছল করেননি মুরাদুল ইসলাম পাশাপাশি অসংখ্য অসহায় পরিবারের পাশে দাড়িয়েছেন। বছরে প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা আয় হয়মুরাদুল ইসলামের পান বরজ থেকে।
তিনি উদ্যোক্তা বার্তাকে জানান, রাজশাহীর মোহনপুর, পবা,বাগমারা এই এলাকা গুলো পান চাষের জন্যে বিখ্যাত। “একেকটি পান পাতা আমাদের কাছে সোনা”। আমাদের এলাকার পান দেশের বিভিন্ন যায়গায় যাচ্ছে। পানের বিভিন্ন ভাগ রয়েছে ছোট, বড়, মাঝারি এই পানগুলোর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দামে বিক্রি হয়ে থাকে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলাকার পান চাষিদের ক্ষতির সম্মুখীন করে।
তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সকলেরই আত্মনির্ভরশীল হওয়া উচিত। এতে মাথা উঁচু করে বাঁচা যায়। যে লোক যে কাজে পারদর্শী তার সে কাজে নেমে পড়া উচিত। তবে যেকোন কাজে নামার আগে পরিকল্পনা জরুরি। যেমন কেউ যদি পান চাষ করতে চায়, তাহলে স্থান নির্বাচন খুব জরুরি। আত্মনির্ভরশীল হলে যে শুধু নিজের আয় হয় তা নয়। দেশেরও উন্নয়ন হয়। তাই বেকার বসে না থেকে যে যেকাজে পারদর্শী সেকাজে নেমে পড়েন। সফলতা আপনার দুয়ারে কড়া নাড়বে।
তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা