উদ্যোক্তা হামিদা আক্তার

২০১৭ সালে নিজস্ব ফেসবুক পেজ ওপেন করেছিলেন। মাত্র পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে পেজটিতে অনেকটা শখের আনন্দ নিয়ে হ্যান্ড স্টিচ প্রোডাক্ট বিক্রি দিয়ে শুরু করেন। এখন তিনি দেশীয় পণ্যকে প্রাধান্য দিয়ে জুট মেড ব্যাগ, নারিকেল খোলের শো পিস, নোটবুক, জুট মেড ল্যাম্পশেডে নিয়ে কাজ করছেন শৈল্পিক কাব্য পেজ এর মাধ্যমে।

ঢাকা, ধামরাই উপজেলা তে তার জন্ম এবং বেড়ে উঠা। এমবিএ করেছেন ইডেন মহিলা কলেজ থেকে মেজর সাবজেক্ট ছিল ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং। গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর কোথাও জব করার সুযোগ পাননি। বিয়ের পর সন্তান ছোট থাকা আর স্বামীর চাকুরীর সূত্রে বাসা পরিবর্তন করার কারণে নিজের আর তখন কিছু করার সুযোগ উঠেনি।

উদ্যোক্তা হামিদা আক্তার জানান, “সময়টা ছিল ২০১৭ সাল। এমবিএ সহপাঠী দেখে তার মনে হতো, কিছু একটা করতে হবে, যদিও তখন সন্তান ও গৃহস্থালি কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এম বি এ কমপ্লিট করা টাই অনেক কষ্টসাধ্য ছিল। তবু ও নিজে কিছু করবেন। সেই থেকেই ২০১৭ তে শখের বসে ও মনের কোনের কষ্ট থেকেই এ ব্যবসা শুরু করা হয়। একটি পেজ ওপেন করেন। কারণবশত সোশ্যাল মিডিয়ার ফান্টাসিয়াম গ্রুপের “রিফাত আরার” অনেক মোটিভেশনাল স্পিচ শুনে আগ্রহ আরও অনেক বেশি জন্মায় আর আত্মবিশ্বাসী মনোভাব জেগে উঠে। এর পরেই তিনি ভাবতে থাকেন কি করবেন? কিছু এমন একটা যা সংসারের পাশাপাশি উদ্যোক্তার জীবনযাত্রায় নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যেতে পারেন। এরপর থেকে তিনি একটু একটু সঞ্চয় করার চেষ্টা করেন।

২০২০ সালে উই গ্রুপ এর মাধ্যমে দেশীয় পণ্যের প্রসার দেখে নতুন করে দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ আরম্ভ করলেন তিনি। ২০১৭ সালে শুরুতে পুঁজি বলতে তেমন বড় কোনো এমাউন্ট ছিল না। ধীরে ধীরে যখন সেল বাড়ছিল এর পরের মাসে ইনভেস্টমেন্ট ছিল মাত্র ৫০০০ টাকা। কিন্তু নানা বাধাবিপত্তির কারণে বিজনেস পেজটা আস্তে আস্তে রান করা বন্ধ করে দেন, কারণ ছিল ছোট শিশু সন্তান এবং গৃহস্থালি কাজের হাল ধরে রাখা এবং যেহেতু গাজীপুর থেকে হোম ডেলিভারি সম্ভব ছিলনা।

তারপর উদ্যোক্তা হামিদা বলেন, নতুন পথচলা শুরু হয় আবার ২০২০ সালে তখন ১০০০০ টাকা দিয়ে আবার নতুনভাবে সাজিয়ে পণ্য সবার সামনে উপস্থাপন করেন উই গ্রুপের সামনে সবার এতোটাই পজিটিভ মনোভাব দেখে তিনিও একটিভ থাকলেন। নতুনভাবে আবার দেশীয় পণ্যকে টার্গেট করে তার পেজ টা একটিভ করেন। যেহেতু তিনি দেশীয় পণ্যের কাজের প্রতি ভালোবাসার অনুভূতি অনেক বেশি ছিল। কিন্তু উই তে একটিভ থাকার পর কাজের অনুপ্রেরণা বেড়ে গেয়েছিল দ্বিগুন। উদ্যোক্তা হামিদা তার থেমে যাওয়া উদ্যোগকে আবার সচল করতে পারায় উই গ্রুপের কাছে কৃতজ্ঞ।

উদ্যোক্তা হামিদা আক্তার বলেন, মূলত এখন দেশীয় পণ্য তৈরি করেন-জুট ফেব্রিক্স কে প্রাধান্য দিচ্ছেন। জুট ব্যাগ, জুট লাঞ্চ বাক্স, নোটবুক, হ্যান্ডস্টিচ ড্রেস, হ্যান্ডস্টিচ ওয়ালম্যাট, জুট হেয়ার ব্যান্ট ক্লিপ, নারিকেল এর খোল এর শোপিস নানাবিধ দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করছেন। শীতলপাটি আর হোগলা পাতা নিয়ে কাজের প্ল্যানিং করছেন তিনি।

উদ্যোক্তা হামিদা আক্তারের নিজ প্রতিষ্ঠানে আপাতত ২জন কর্মী আছে। নিজস্ব ডিজাইন দিয়ে জুট ব্যাগ বানিয়ে আনছেন ক্রেতাদের সামনে। তাছাড়া বিভিন্ন জায়গায় যেমন-বগুড়া, দিনাজপুর, পাবনা, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় তার প্রোডাক্ট হোলসেল আর রিটেল আছেন বলে তিনি জানান।

নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য তিনি বলেন, সাহস করে নিজের জায়গা থেকে এগিয়ে আসেন, নিজের কাজকে ভালোবেসে সম্মান করে সামনে এগিয়ে যান, ইনশাল্লাহ সফলতা আসবেই।

মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা ঢাকা

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here