নিজের জমানো ১৫ হাজার টাকাই ছিল পুঁজি

0
উদ্যোক্তা শিপ্রা বিশ্বাস

সবসময়ই আত্মনির্ভরশীল নারীদেরকে অনুপ্রেরণা মনে করতেন শিপ্রা বিশ্বাস। আত্মনির্ভরশীল নারীদের কাজ এবং তাদের জীবনের গল্প তাকে খুব আত্মশক্তি যোগাতো। প্রত্যোক নারীরই আত্মনির্ভরশীল হওয়া জরুরি– এমন ভাবনা থেকেই নিজেকে আত্মনির্ভরশীল করতে দেশী পণ্য নিয়ে উদ্যোগ শুরু করেন শিপ্রা।

‘পারিণীতা ফ্যাশন’-এর স্বত্ত্বাধিকারী শিপ্রা বিশ্বাস কাজ করছেন নিজস্ব ডিজাইনের মসলিন, ব্লক, ডিজিটাল প্রিন্টের শাড়ি, পাঞ্জাবি এবং থ্রিপিস নিয়ে। ভবিষ্যতে নিজস্ব ডিজাইনের জুয়েলারি নিয়েও তার কাজ করার ইচ্ছা।

শিপ্রার জন্ম দোহার নবাবগঞ্জে হলেও বাবার কর্মসূত্রে ছোটবেলা থেকে তিনি বেড়ে উঠেছেন ঢাকাতেই। গার্মেন্টস ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে ফ্যাশন ডিজাইনে ডিপ্লোমা করেন তিনি।

২০২০ সালের এপ্রিল মাসে নিজের জমানো ১৫ হাজার টাকা দিয়ে উদ্যোক্তা জীবন শুরু করেন শিপ্রা বিশ্বাস। প্রথমে অফলাইনে শুরু করলেও পরে অনলাইনেও ‘পারিণীতা ফ্যাশন’ এর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

উদ্যোক্তা বার্তাকে তিনি বলেন, “শুরুতে আমি আমার ঘর থেকেই ব্যবসাটা করতাম। কিন্তু ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকার গুলশানে আমি একটি শোরুম নেই এবং সেই সাথে ছোট একটি ফ্যাক্টরিতেও বিভিন্ন পণ্যের কাজ করাই। মসলিনের শাড়িতে বিভিন্ন রকমের নকশা, কামিজ-থ্রি পিসে ব্লক বাটিকের কাজ, এছাড়াও পুরুষদের পাঞ্জাবিতে নিজস্ব ডিজাইনের কাজ করি। উদ্যোক্তা জীবনের শুরু থেকেই কিছু জিনিসের উপর লক্ষ্য রেখে আমি পণ্য উৎপাদন করি যাতে গৃহিণী, ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিজীবী সব ধরনের ক্রেতারা আমার কাছে সাধ্যের মধ্যে ভালো আর উন্নতমানের পণ্য পান।”

পাশাপাশি কিছু এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের পণ্যও তিনি রাখেন যা কিছু এক্সক্লুসিভ কাস্টমারের জন্য। প্রতি মাসে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ দশ হাজার টাকার মতো আয় হয় তার।

শিপ্রা বিশ্বাস বলেন, “নারী হিসেবে কাজের ক্ষেত্রে আমাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। তবে আমি যদি আমার কথা বলি; আমি খারাপের থেকে মানুষের সাপোর্ট বেশি পেয়েছি। আমার সব কাজে আমাকে সবার আগে উৎসাহ দিয়েছেন আমার মা। এছাড়া আমার পরিবার থেকে শুরু করে আমার কাজের জায়গাগুলোতে বেশিরভাগ মানুষ আমাকে উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।”

তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন: যারা নিজে কিছু করবেন ভাবছেন তারা অবশ্যই যেকোন কাজ শুরু করার আগে প্রথমে জেনে নেবেন, আপনি যে কাজটি করতে যাচ্ছেন সেটিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন কিনা । কাজটি করতে আপনার ভালো লাগছে কিনা। কারণ যে কাজে আপনি পুরোপুরি মন দিতে পারবেন না, সে কাজ আসলে কখনোই আপনি সুন্দরভাবে শেষ করতে পারবেন না। দ্বিতীয় যেটা জরুরি বিষয় সেটা হচ্ছে- কাজ সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান থাকতে হবে এবং তার মার্কেট সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। অল্পতেই হতাশ হওয়া যাবে না এবং কাজের ক্ষেত্রে অবশ্যই ধৈর্য ধারণ করতে হবে।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে উদ্যোক্তা শিপ্রা বিশ্বাস জানান, “আমি একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে দেশের আনাচে-কানাচে যে অসহায় নারীরা আছেন এবং যারা ঘরে বসেই কিছু করতে চান; তাদেরকে কাজে লাগাতে চাই এবং তাদের কাজগুলো সবার সামনে তুলে ধরতে চাই। আর সেই সাথে আমি আমার পণ্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে চাই।”

আফসানা অভি
উদ‍্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here