শামীম আরা দীপা। ছোটবেলা থেকেই ফ্যাশন সম্পর্কে ধারণা ছিল প্রখর। হাতের কাজের ড্রেস পড়তে পছন্দ করতেন। ক্লাস নাইনে পড়ুয়া কিশোরী নিজেই নিজের পোশাক বিভিন্ন ডিজাইন করে বানাতেন।
২০০৯ সালে দুজন কর্মীকে সাথে করে ব্লক, বাটিক এর ব্যবসায়িক জগতে পা রাখেন। ফ্যাশন ডিজাইনে ডিপ্লোমা করে ট্রেনিং সম্পন্ন করেন এসএমই ফাউন্ডেশন, বিসিক, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে।
বেশ ভালোই চলছিলো ব্যবসা। একসময় দেখলেন বুটিকস নিয়ে টিকে থাকাটা কষ্টকর। চিন্তা করলেন নতুন কিছু করার। শুরু করলেন পাট নিয়ে গবেষণা। পাটের বেশ কিছু উদ্যোক্তাদের সাথে আলোচনা করে পর্যবেক্ষণ করলেন পাটের বিভিন্ন শোরুম।
২০১১ সাল। একটি পুরাতন মেশিন ও ১৫ হাজার টাকা নিয়ে নিজেই তৈরি করলেন কিছু পাটজাত পণ্য। নিজের শ্বাশুড়ীকে ব্যবসার জন্য অনেক ভাগ্যবান মনে করতেন তিনি। শ্বাশুড়ীর নামেই নামকরণ করেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির। যাত্রা শুরু করলো “রাহেলা জুট ক্রাফট”। জেডিপিসি’র আওতায় জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে মেলায় অংশগ্রহণ করে প্রদর্শন করেন পাটজাত কিছু ব্যাগ। ভালো সাড়া পাওয়ার সাথে সাথে বেশ কিছু অর্ডারও পেয়ে গেলেন শামীম আরা দীপা।
২০১২ সাল। জেডিপিসি থেকে ট্রেনিং নিয়ে তৈরি করেন নতুন কিছু পাটজাত পণ্য। কোলকাতায় “ইন্টারন্যাশনাল মেগা ট্রেড ফেয়ার-২০১২” তে অংশগ্রহণ করলেন তিনি। প্রথমবার অংশগ্রহণ করে ভাল সাড়া পেলেন এবং বেশ কিছু অর্ডারও মিললো। পাটজাত পণ্য নিয়ে কাজ করবার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে দেশে ফিরলেন উদ্যোক্তা শামিম আরা দীপা।
কাজের চাপ বেড়ে যায় দ্বিগুণ। ঝিনাইদহে দিলেন একটি ফ্যাক্টরি। ১ টি মেশিন থেকে আজ ১০ টি মেশিন। ১২ জন বেতনভুক্ত কর্মী। ফিল্ডে কর্মরত প্রায় ১০০ জন কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে উদ্যোক্তার ফ্যাক্টরিতে। ধীরে ধীরে কাজের পরিধি বাড়তে থাকে।
২০১৮ সাল। ঢাকায় একটি মেশিন ও দুইজন কর্মী নিয়ে দিলেন ছোট্ট একটি ফ্যাক্টরি। সাথে নিলেন একটি শোরুম এবং ডিসপ্লে সেন্টার। কোলকাতায় “ইন্টারন্যাশনাল মেগা ট্রেড ফেয়ার-২০১৮” তেও অংশগ্রহণ করেন। কোলকাতা ও নেপাল মেলায় অংশগ্রহণ করে পাটজাত পণ্যের ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করেন উদ্যোক্তা।
৪র্থ বারের মত ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার জেডিপিসি প্যাভিলিয়নে একটি স্টলে উদ্যোক্তা শামীম আরা দীপা তার রাহেলা জুট ক্রাফট নিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। ইউবি প্রেসকে দীপা জানান, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ করে বেশ সাড়া পাচ্ছেন, ক্রেতারা তার পণ্যগুলো পছন্দ করে কিনছেন। পণ্যের মধ্যে রয়েছে, সাইড ব্যাগ, ফ্যান্সি ব্যাগ, হ্যান্ড পার্স, টেবিল রানার, জুতা, পাঞ্জাবী, ফাইল ফোল্ডার, পেন হোল্ডারসহ নানান ধরণের নানান ডিজাইনের পণ্য।
ডিজাইন নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, “পাট একটি সম্ভাবনাময় খাত। সবাই পাটজাত পণ্যের দিকে ঝুঁকছে। পণ্যের ডিজাইন সবসময় আপডেট হতে থাকে, পুরনো ডিজাইন ধরে থাকলে হবে না, দৃঢ় অবস্থান ধরে থাকতে হলে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ডিজাইন সেট করতে হবে”।
শুভ হাসান ও শারমীন আয়াত
খুব ভালো লাগলো আপনার পাটজাত পন্য দেখে আমিও চাই উদ্যোকতা হতে আমাকে কি সাহায্য করবেন ধন্যবাদ