প্রায় দেড়শো বছরের পুরানো একটি শহর -পটুয়াখালী। কবে, কখন, কিভাবে এর নামকরণ করা হয় তা বলা দুরূহ ব্যপার। শক্ত কোন দলিল না থাকলেও অধিকাংশের মতে স্বর্গীয় দেবেন্দ্রনাথ দত্তের পুরানো কবিতা ‘পতুয়ার খাল’ এর সূত্র ধরে পটুয়াখালী নামের উৎপত্তি। মতান্তরে বরিশালের ইতিহাস লেখক সিরাজ উদ্দিন আহমেদের মতে, পেট আকৃতির অনেক খাল বেষ্টিত এলাকা হওয়ায় প্রথমে পেটুয়াখালী যা পরবর্তীতে পটুয়াখালী নাম হয়। তিনি অন্য মতে বলেন বহু যুগ আগে এই এলাকায় ‘পটুয়ার’ দল বাস করতো তাদের নামানুসারেও এই এলাকার নামকরণ হয়ে থাকতে পারে। তবে এটা পরিষ্কার যে সেই ‘পটুয়ার’ দল মৃৎশিল্প, কুটির শিল্পের সাথে যুক্ত ছিলেন। কালের বিবর্তনে তারা হারিয়ে গেলেও তাদের সেই পেশা হারায়নি।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2020/02/potua3.jpg)
ডিজিটাল এ যুগে সেই পেশা গুলোর সাথে আরও অনেক পেশায় যুক্ত হয়েছেন উদ্যোক্তারা। সেই উদ্যোক্তাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের উদ্যোক্তাদের নিয়ে আয়োজিত হয়েছে ‘আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলা’-২০২০। ক্ষুদ্র ও মাঝারি এসব উদ্যোক্তাদের আরও বেগবান করার লক্ষ্যে তাদের পণ্যের প্রচার প্রসার এবং বিপণনের সুযোগ প্রদানের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এবং জেলা প্রশাসন, বিসিক, চেম্বার অব কমার্স, নাসিব,এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় ২৩ফেব্রুয়ারি-২০২০, ৭ দিনব্যাপী “আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলা, পটুয়াখালী-২০২০” এর আয়োজন করা হয়েছে।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2020/02/POTU1.jpg)
জেলা প্রশাসক মাঠে আয়োজন করা হয়েছে এই মেলার। মেলায় কমপক্ষে ৫৭টি সুসজ্জিত বিভিন্ন পণ্যের স্টল, ক্রেতা-বিক্রেতা মিটিং বুথ, তথ্য আপা কেন্দ্র, মিডিয়া সেন্টার এবং মেলায় আগত অতিথিগণ বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান উপভোগ করার জন্য একটি সুসজ্জিত মঞ্চ তৈরি করাসহ আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2020/02/potuakhali4.jpg)
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি কুইজ প্রতিযোগিতা; মেলার ৭দিন লোকজ খেলাধুলা, যেমন সাপের খেলাও দেখানো হয় এবং মেলা প্রাজ্ঞণে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় আকর্ষণীয় খেলা প্রদর্শনের জন্য বিশেষ পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৩জন শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা নির্বাচন করে ক্রেস্ট, সনদপত্র বিতরণ করা হবে এবং অন্যান্যদেরকে সনদপত্র প্রদান করা হবে।
এছাড়াও ২৭ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ঃ৩০ মিনিটে জেলা প্রশাসকের কনফারেন্সে রুমে “ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে স্থানীয় পণ্যের প্রভাব, সমস্যা ও সম্ভাবনা” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2020/02/potuakhali6.jpg)
উদ্বোধনের দিন সকাল ১০.০০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি করা হয়। অতঃপর “আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলা, ভোলা-২০২০” এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
এসময়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব এডভোকেট মোঃ শাহাজাহান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য। জনাব মোঃ মতিউল ইসলাম চৌধুরী, জেলা প্রশাসক, পটুয়াখালী। জনাব মোঃ হেমায়েত উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)। ইসমাত জেরিন খান, পরিচালক এসএমই ফাউন্ডেশন, সভাপতি উইমেন চেম্বার অব কমার্স, পটুয়াখালী। জনাব রাহুল বড়ুয়া, ব্যবস্থাপক, এসএমই ফাউন্ডেশন। জানাব ফরহাদ জামান খন্দকার, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, পটুয়াখালী। জনাব মোঃ কাজী তোফাজ্জল হক সহকারী ব্যবস্থাপক, বিসিক পটুয়াখালী।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2020/02/potuakhali7.jpg)
সকলের বক্তব্যে একটা কথা উঠে এসেছে যে এই মেলা মূলত বিক্রয়ের জন্য না বরং আঞ্চলিক এসব উদ্যোক্তাদের পরিচয় ঘটানো, তাদের সৃষ্টিকর্ম তুলে ধরা এবং অন্য জেলার উদ্যোক্তাদের সাথে একটা যোগসূত্র স্থাপন করা।
মেলার সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে পুলিষ সুপার, ভোলা এর সার্বিক নির্দেশনায় পুলিশ ফোর্স ও রোস্টার অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার/চৌকিদারগণ দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া মেলায় আগত অতিথিদের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও রোভার স্কাউট নিয়োজিত থাকছে। মেলা চলাকালীন যে কোন দুর্ঘটনা বা অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থার জন্য ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের একটি ইউনিট অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রসহ সার্বক্ষণিক উপস্থিৎ আছে।
আজ মেলার শেষদিন। মেলা উন্মুক্ত থাকছে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং প্রবেশে কোন টিকিটের ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
বিপ্লব আহসান