বাংলাদেশে বহুমুখী পাটপণ্যের একটি বিশাল বাজার আছে জানিয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষের কাছে পাটপণ্য পৌঁছে দিতে হবে।

বুধবার রাজধানীর মতিঝিলের করিম চেম্বারে জুট ডাইভার্সিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) উদ্যোগে পাঁচ দিনব্যাপী বহুমুখী পাটপণ্য মেলার উদ্বোধনকালে বিশেষ অথিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এ কথা বলেন ।

পাটমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের পাটপণ্যের উদ্যোক্তাদের বিদেশে রপ্তানির আগে দেশীয় বাজারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। আর্থিক সক্ষমতা ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পেলে বিদেশে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে। ক্ষতিকর পলিথিনের পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে প্রতিদিন ১ লাখ পিস পাটের তৈরি ‘সোনালী ব্যাগ’ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। খুব শিগগিরই পাটের ব্যাগ বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে যাবে।

তিনি বলেন, শুধু পাটের আঁশ নয়, পাটকাঠিও একটি সম্ভাবনাময় পণ্য। পাটকাঠি থেকে কয়লা উৎপাদন করে তা বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।উন্নত বিশ্বে পাটপাতার বিপুল চাহিদার কথা উল্লেখ করে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, গত বছর আড়াই টন পাটপাতা জার্মানিতে রপ্তানি করা হয়েছে। এবছর পাঁচ টন পাটপাতা রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘বাংলাদেশকে আবারও সোনালী আশেঁর দেশ হিসেবে রূপান্তর করে পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে সরকার। আজ জেডিপিসি’র উদ্যোগে মতিঝিলে ২য় বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শনী ও বিক্রয়কেন্দ্রের উদ্বোধন করার মাধ্যমে এটা আবারও প্রমাণিত হল। এছাড়াও ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ সুষ্ঠুভাবে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’

জেডিপিসির নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) রীনা পারভীন বলেন, এদেশের কৃষি এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে পাট খাতের অবদান অত্যধিক গুরত্বপূর্ণ। বর্তমানে বিশ্বে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে কৃত্রিম তন্তুর ক্ষতিকর প্রভাব হতে পরিবেশকে রক্ষা করার জন্য প্রাকৃতিক তন্তু হিসাবে পাটের ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষে বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের মনোযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১৭টি পণ্যে মোড়কীকরণে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে বাংলাদেশ সরকার পরিপত্র জারি করেছে। ফলে দেশে এবং বিদেশে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পাট শিল্পের পুনরুজ্জীবন ও অাধুনিকায়নের ধারা বেগবান করার লক্ষ্যে ‘পাট অাইন, ২০১৭’, জাতীয় পাটনীতি-২০১৮, পণ্যে পাটজাত মোড়কের ব্যধ্যতামূলক ব্যবহার অাইন,২০১০’প্রণয়ন করা হয়েছে। পাটের দিকে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে চলছে পাটের আবাদি জমি এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনদিন।

সভাপতির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, দেশের কৃষকসহ প্রায় ৪ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাটের ওপর নির্ভরশীল। ভারতের পাটের চেয়ে বাংলাদেশের পাটের মান উন্নত।

কৃষকরা যাতে পাট উৎপাদনে উন্নত বীজ ও কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন সেদিকে আরো মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান ভারপ্রাপ্ত সচিব।

অনুষ্ঠানে গুলনার নাজমুন নাহার (অতিরিক্ত সচিব), পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শামসুল আলম, বাংলাদেশ জুট ডাইভারসিফাইড প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিজেএমইএ) আহ্বায়ক মো. রাশেদুল করিম মুন্না, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ও জেডিপিসির কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 

 

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here