উদ্যোক্তা আলিয়াহ ফেরদৌসি

তিন বোন আর দুই ভাইয়ের মাঝে আলিয়াহ ফেরদৌসি সবার বড়। বাবা সরকারি কর্মকর্তা আর মা গৃহিণী। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন সৃষ্টিশীল কিছু করার। কোথাও কোনো ডিজাইন দেখলে সেটা নিজে তৈরী করার চেষ্টা করতেন। স্নাতক সম্পন্ন করার পর বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তিনি। তারপর হয়ে ওঠেন পুরোদস্তুর সংসারী।

পরিবার আর প্রতিবেশীদের উৎসাহ এবং নিজের অদম্য ইচ্ছায় ২০০৮ সালে বুটিক্স ব্যবসা শুরু করেন আলিয়াহ ফেরদৌসি। বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্লক, বাটিক, স্কিন প্রিন্ট, কারচুপি, এমব্রয়ডারি, এপলিক, গ্লাস ওয়ার্ক ও বিভিন্ন উপাদান এনে কাজ করতেন উদ্যোক্তা।

উদ্যোক্তার তৈরী বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক

আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসিতে বসবাস করেন উদ্যোক্তার এক নিকটাত্মীয়। উদ্যোক্তার কাজ সম্পর্কে জানতে পেরে কাজের একটা অর্ডার দেন উদ্যোক্তাকে। আমেরিকায় তার পণ্য যাবে, প্রবল উৎসাহ নিয়ে অত্যন্ত যত্নের সাথে তৈরী করে ৩৫ টা ড্রেস পাঠান উদ্যোক্তা। কাজের মান আর পণ্য দেখে উদ্যোক্তার প্রশংসা করেন সবাই। প্রবল উৎসাহের পাশাপাশি বাড়তে থাকলো উদ্যোক্তার কাজের পরিধি।

২০১০ সালে তিনি ‘অঙ্গশ্রী’ নামে একটি বুটিক ও ফ্যাশন হাউজের যাত্রা শুরু করেন। পাশাপাশি শুরু করেন ‘অঙ্গশ্রী’ টেইলরিং। শুধু হাতের কাজই নয়, ফেব্রিকের ফ্যাশনেবল ড্রেসও তৈরী করেন সেখানে। ১০ জন টেইলরিং ও এমব্রয়ডারি কারিগর কাজ করেন উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠানে। যারা তাদের কাজের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নিজে পাশাপাশি সমৃদ্ধ করছেন দেশকে।

টেইলরিং ও এমব্রয়ডারির কাজ করছেন উদ্যোক্তার কারিগর

বর্তমানে উদ্যোক্তার তৈরী পণ্য নিয়মিত আমেরিকার কয়েকটি শহর ছাড়াও মালয়েশিয়া এবং যুক্তরাজ্যেও রপ্তানি হচ্ছে।

তথ্যপ্রযুক্তির যুগে ক্রেতাদের নিকট সহজেই পৌঁছে যাওয়া এবং পছন্দের পণ্যটি ক্রেতাদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য ফেসবুকে অঙ্গশ্রী নামে একটি পেইজ খুলে নতুন উদ্যমে যাত্রা শুরু করেন তিনি। যেখানে ব্যাপক সাড়াও পান উদ্যোক্তা।

উদ্যোক্তা বার্তাকে আলিয়াহ ফেরদৌসি জানান, “ব্যবসার ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকা প্রয়োজন। কারণ সবকিছুর আগে নিজেকে দক্ষ হতে হবে, অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।”

পণ্য তৈরীর কাজে ব্যস্ত কর্মীগণ

তিনি আরও বলেন, ” আমি এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কোর্স, এফ.কম কোর্স সহ আরো কিছু কোর্স করেছি। যা আমাকে ভীষণভাবে সাহায্য করেছে আমার কাজকে এগিয়ে নিতে। এছাড়াও ব্যবসাকে প্রসারিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন স্থানে মেলাতেও অংশগ্রহণ করেছি।

একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি এসোসিয়েশন অব ওমেন এন্ট্রাপ্রিনিউরশিপের একজন সদস্য। তিনি চান তার কাজের মাধ্যমে দেশকে বিশ্ব দরবারে নতুন রূপে  তুলে ধরতে।

জেবুননেসা প্রীতি
এসএমই করেস্পন্ডেন্ট ,উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here