পড়াশুনা মেরিল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, লালমাটিয়া গার্লস স্কুল, হোম ইকোনমিক্স কলেজ থেকে ফুড এন্ড নিউট্রিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন এর উপরে মাস্টার্স করেন।
এরপরে কর্মজীবনে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে চাকরি করেছেন বিভিন্ন সময়। বিটিভির সংবাদ পাঠিকা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে পরবর্তীতে আরটিভিতে কাজ করেছেন। পরে, রেডিসনে বিজনেস সেন্টার ইনচার্জ ছিলেন কিছুদিন।
নিজের কর্মজীবন নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত ফারহানা সুচি উদ্যোক্তা হবেনই তেমন প্লানিং ছিল না। কিন্তু, প্রথম সন্তান জন্মের পর তিনি অনুভব করলেন পরিবারকে আরেকটু সময় দেয়া দরকার। তাই, চাকরি থেকে সরে আসলেন। চাকরি ছেড়ে দেবার পর পুরোদস্তুর গৃহিণী হয়ে ওঠেন তিনি। অন্যদিকে, অনেক আগে থেকেই সুচি আত্মনির্ভরশীল। তাই, চাকরি ছাড়লেও কিছু করতেই হবে এমন চিন্তা ঘুরতে থাকে মাথায়।
সুচির সম্পূর্ণ নিজস্ব এই উদ্যোগ ‘কারুণিক’ এর যাত্রা শুরু ২০১২সালে। পূর্ণ উদ্যোম কাজ করেন ২০১৭সাল থেকে। লোকজ কারুশিল্পের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এবং নিজের ভেতরে সুপ্ত ইচ্ছা থেকেই উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা সুচির।
বাংলাদেশের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা এবং লোকজ কারুশিল্পের উন্নয়নে তার এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসিত সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মহলে। বর্তমানে কারুণিকে বিভিন্ন ডিজাইনের কাপড়ের পুতুল, বাউল, ঢুলি, ঢেকিতে ধান ভাঙ্গা নারী, জেলে, বর বউ ইত্যাদি ঐতিহ্যের সাক্ষর রাখা পুতুল বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি, তালপাতার বুনন দিয়ে নতুন প্রোডাক্ট তৈরি হচ্ছে উদ্যোক্তা সুচির কর্মভুবনে। টিস্যু বক্স, ফোল্ডার, লেদার তালপাতার মিক্স ব্যাগ সহ আরও এমন চমকপ্রদ পণ্য আছে তার উদ্যোগে।
উদ্যোক্তা সুচির আজকের এই জায়গায় আসার পেছনে বেশ কিছু বাধা অতিক্রম করার ঘটনাও আছে।গবেষণার কাজে যখন বাইরে যান তখন মাঝেমাঝেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে, ব্যবসায়ী ক্ষেত্রেও বেশ বাধা এসেছে যেমন: অর্ডার ম্যানেজ করা, কারিগর-কর্মীদের কাছে কাজ থেকে করিয়ে নেয়া। তবে, সবকিছু ছাপিয়ে নিজেকে আজ অনন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছেন তার দৃঢ় মনোবল দিয়ে।
বর্তমানে তার নিজস্ব ও আঞ্চলিক কারখানা অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। পুতুল কারখানায় আছে ৫জন কর্মী, তালপাতার কাজ করছে ১৫টি পরিবার। এমন সব কারখানা মিলিয়ে প্রায় ৫০জন কর্মী কাজ করছে তার কারুণিকের সাফল্য গাঁথা নির্মাণে। দেশের প্রায় সব জেলাতে বিভিন্ন ভাবে পৌঁছে যাচ্ছে উদ্যোক্তার পণ্য। দেশের বাইরেও গেছে ইতোমধ্যেই।বইতালি, আমেরিকা, ইউকে, কোরিয়া, দুবাই এ অফিসিয়ালি যাবার পাশাপাশি আরও কিছু দেশেও পণ্য যাচ্ছে উদ্যোক্তার।
স্বামী, পরিবারের অন্য সদস্য বাবা-মা, বড় জা এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের পাশাপাশি, কারুশিল্পের সাথে জড়িত অনেকেই সহযোগিতা করেছেন তাকে। বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞ জয়িতার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান এর কাছে, এমনটিই জানান উদ্যোক্তা।
মশিউর শাফী,
ডেস্ক রিপোর্ট,
উদ্যোক্তা বার্তা