উদ্যোক্তা - কানিজ ফাতেমা প্রিয়া

কানিজ ফাতেমা প্রিয়া মানামা পড়াশোনা করেছেন বিএসসি ইন ইলেকট্রনিকস এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। ছাত্রী থাকা অবস্থাতেই কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই ব্যবসা শুরু করেন কানিজ ফাতেমা। কেমন ছিল প্রিয়ার উদ্যোক্তা হয়ে উঠার গল্প। চলুন  জানি –

পড়াশোনা ও ব্যবসার পাশাপাশি তিনি চাকরিও করেছেন ৩ বছর, একটি বেসরকারি টেলিভিশনে। কানিজ ফাতেমা প্রিয়া ছাত্রী থাকা অবস্থায় নিজের ড্রেস নিজেই ডিজাইন করে পরতেন। তখন সবাই তাকে অনুুুুসরণ করতো বা দেখত।

কেউ কেউ জিজ্ঞেস করত কোথায় থেকে কিনেছেন? এই রকম নানা ঘটনার পর তিনি  ভাবলেন ব্যবসা শুরু করবেন। সবাই যেহেতু খুব আগ্রহ দেখায় তাই শুরুও করে দিলেন “ডিভাস স্টাইল” নামে অনলাইন পেজ খোলার মাধ্যমে।

টিউশনি করার ২০০০ টাকা দিয়ে ৪ টি ড্রেস নিয়ে শুরু করেন এবং অনলাইনে দেওয়ার সাথে সাথে বিক্রি হয়ে যায়। সেই সাথে পরের দিন আরো ৩০ টা অর্ডার আসে। এই যে শুরু আর পিছনে তাকাতে হয়নি এই উদ্যোক্তাকে। তখন থেকেই আয় করা শুরু এবং স্বাধীন ভাবে চলাও শুরু। স্বাধীনভাবে চলতেই পছন্দ করেন এই উদ্যোক্তা।

কানিজ ফাতেমা প্রিয়া বলেন, পরিবার থেকে চাইতো আমি যেহেতু পড়াশোনা শেষ করেছি তাই এখন যেন চাকরি করি। ফলে ঐ ভাবে পরিবার থেকে সহযোগিতা পাইনি। তারপরও আমি আমার সিদ্ধান্তে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম। যার ফলে সমস্যা একটু কম হত। মেয়েরা ব্যবসা করবে বা উদ্যোক্তা হবে এই বিষয়টা আমাদের পরিবার বা সমাজ মানতেই চায়না। পরে যখন সফল হয় তখন তারাই আবার বাহবা দেয়! আমার ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এর মাঝে বিয়ে হয়ে যায়, যার ফলে ব্যবসাটা খুবই ধীর গতিতে চলছিল। কারণ শ্বশুড় বাড়ির সবাই চাইতেন না যে ব্যবসা করি। তারা আমার ব্যবসা বলতে বুুঝতেন কাপড়ের ব্যবসা। তাদের পরিবারের বউ এই কাপরের ব্যবসা করবে! এই জন্যই একটু থেমে ছিল। পরে স্বামী সুমন মঞ্জুরুল  ইসলাম ( আভাস ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট ) বলে যে তুমি আবার শুরু কর; মানসিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আমি দেব।

২০১৩ সালে আবার কাজ শুরু করি এবং এখন পর্যন্ত চলছে। সুুুমন অনেক সাহায্য করে। আমার উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনে সুমনের অনেক অবদান আছে।

চাকরি না করে উদ্যোক্তা হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন চাকরিতে ধরাবাধা নিয়ম, মানসিক চাপ আছে, আরো বিভিন্ন রকম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আমি চাকরি করে মাসিক যে বেতন পেতাম, সেইটা আমার ব্যবসার ২/৩ দিনে আয় এবং কষ্ট ও কম হয়। ব্যবসা করলে আমি আরো কয়েক জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবো।

ক্রেতাদের কাছ থেকে অনেক ভালো সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান কানিজ ফাতেমা। “ডিভাস স্টাইল”-এ সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন মূল্য ৮০০-১৫০০ টাকা এবং এক্সক্লুসিভ ডিজাইন ড্রেসের মূল্য ৩৫ হাজার থেকে ১লাখ পর্যন্ত।সাধারণ ক্রেতা থেকে টিভি শো তেও ডিভাস স্টাইলের ডিজাইন করা ড্রেস যায়।

নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “নতুন উদ্যোক্তারা সফলতা  শর্টকার্টে পেতে চায়। এইটা করা যাবে না। নিজের প্রতি নিজের আস্থা ও বিশ্বাস  থাকতে হবে। ক্রেতাদের সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে এবং সৎ থাকতে হবে। ক্রেতারাই আমাদের প্রাণ।”

 

খাদিজা ইসলাম স্বপ্না 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here