ডিএনসিসি-ঐক্য হলিডে মার্কেটে সপ্তাহের সেরা উদ‍্যোক্তা পার্থ

0

ডিএনসিসি-ঐক্য হলিডে মার্কেটে অংশগ্রহণ করে প্রথম সপ্তাহে সেরা উদ্যোক্তার অ্যাওয়ার্ডটি জিতে নিলেন অর্থা’র স্বত্ত্বাধিকারী উদ্যোক্তা নিতাই সরকার পার্থ। তার ব্র্যান্ড অর্থাকে ক্রেস্টসহ ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।

বাংলাদেশের কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের পণ্য ও খাদ্যপণ্য নিয়ে শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকায় চালু হয়েছে “ডিএনসিসি–ঐক্য হলিডে মার্কেট”। 

পরদিন ১৪ জানুয়ারি ডিএনসিসি-ঐক্য হলিডে মার্কেটে অংশগ্রহণকারীদের মধ‍্যে প্রথম সপ্তাহের সেরা উদ্যোক্তা অ্যাওয়ার্ড সম্মাননা দেওয়া হয়।

চালুর প্রথম দু’দিনে ‘হলিডে মার্কেটে’ উদ্যোক্তাদের স্টলে প্রায় ৬ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। সর্বোচ্চ ৫৫ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন নিতাই সরকার। তিনি গৃহসজ্জার পণ্য প্রস্তুত করেন। তার প্রতিষ্ঠানের নাম অর্থা।

উদ্যোক্তা নিতাই সরকার পার্থ সম্মাননা পেয়ে অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘ডিএনসিসি-ঐক্য হলিডে মার্কেট আমাদের মতো উদ্যোক্তাদের জন্য বড় একটি প্লাটফর্ম। আমি অত্যন্ত আনন্দিত প্রথমবারেই অংশগ্রহণ করতে পেরেছি এবং সেরা উদ‍্যোক্তার সম্মাননা পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ওয়েদার ডিমান্ড থাকায় অর্থার কম্ফোর্টার ও বেডশিট ছিল হলিডে মার্কেটের মূল আকর্ষণ! তাইতো বেস্ট স্টল অ্যাওয়ার্ড আমাদের জন্য বিশেষ প্রাপ্তি।

তিনি এখানে বেডশিট, পিলো, পর্দা, মশারি, কম্ফোর্টার, ম্যাট্রেসসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন।

চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার ঘাগড়া গ্রামে উদ‍্যোক্তা পার্থ’র জন্ম। এসএসসি পাস করা পর্যন্ত গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের মধ্যেই তার বেড়ে উঠা। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ফরচুনা বাংলাদেশ নামে একটি ফুটওয়্যার কোম্পানিতে ই-কমার্স ডিপার্টমেন্ট কাজ করেছেন এবং পাশাপাশি
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে মার্কেটিং-এ এমবিএ করেছেন।

উদ‍্যোক্তা জীবনের শুরু প্রসঙ্গে নিতাই সরকার পার্থ বলেন, ‘চাকুরি অবস্থায় ই-ক্যাব গ্রুপে যুক্ত হই। ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের গল্প শুনি এনং নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার প্ল্যান করি। যখন ব্যবসা স্টার্ট করি তার আগে আমি প্রচুর রাত ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ভেবেছি কী নিয়ে কাজ করা যেতে পারে যা আমাকে অন্যদের থেকে আলাদা করবে। ফেসবুকের মাধ্যমে ২০১৫ সালের অক্টোবরের শেষের দিকে ড্রেসের পাশাপাশি হোম ডেকর আইটেম হিসেবে ৮ পিসের বেডশিট সেট নিয়ে কাজ শুরু করি। পরবর্তীতে আমার মেন্টর দেবাশীষ ফণি দাদার পরামর্শে ড্রেস রেখে শুধুমাত্র বেডশিটে ফোকাস করে গৃহসজ্জা ব্র‍্যান্ড অর্থা’কে নিয়ে চাকুরি ছেড়ে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু করি।’

ব্যবসার শুরুতে পার্থ’র পুঁজি বলতে একটি ব্লকের ড্রেস ছিল যার ক্রয়মূল্য ছিল ৯০০ টাকা। পার্থ বলেন, ‘প্রথম প্রথম ভাবতাম ব্যবসা করতে পুঁজি লাগে না। দরকার সততা ও কমিটমেন্ট। পরবর্তীতে ব্যবসা প্রসার করতে গিয়ে দেখেছি সততা, কমিটমেন্টের সাথে প্রয়োজন অর্থ। তখন চাকুরি জীবন থেকে নিজের জমানো ৪০ হাজার টাকা আর মায়ের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা সহ মোট ৬০ হাজার টাকা নিয়ে নিজেই ফেব্রিক্স কিনে এনে প্রোডাকশন শুরু করি। আমার উদ্যোক্তা জার্নিকে অনুপ্রাণিত করতে আমার ইউনিভার্সিটির একজন ম‍্যাডাম আমাকে একটি বেডরুম সেট ডোনেট করেন, যেখানে অর্থা বেডশিটের প্রতিটি ছবি আমরা ধারণ করি।’

পরবর্তীতে যুব উন্নয়নসহ ব্যাংকের সহায়তা পেয়েছেন বলে জানান তিনি।

বর্তমানে উদ‍‍্যোক্তা পার্থ’র প্রতিষ্ঠানে ১১জন কর্মী আছেন। তার নিজস্ব কারখানায় তৈরি পণ্যগুলোর গ্রহণযোগ্যতাও ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে। এর সবচেয়ে বড় কারণ তার পণ্যের কোয়ালিটি এবং নিত্য নতুন ডিজাইন।

উদ‍্যোক্তা পার্থ জানান, তারা অনলাইন ও অফলাইনে এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাপ্লায়ার হয়ে প্রতিমাসে গড়ে ২৫-৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করে থাকেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে উদ‍্যোক্তা নিতাই সরকার পার্থ বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি গৃহের পাশাপাশি বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশী ব্র‍্যান্ড অর্থাকে অত্যন্ত সুনামের সাথে পৌঁছে দিতে চাই।’

আফসানা অভি
উদ‍্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here